পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করি, তখন আসিয়া দেখিলাম যে আপনি অনেকগুলি ঘরের মেজে খুঁড়িয়া নূতন করিয়াছেন। আপনাকে আমি এ কাজ করিতে বলি নাই। তাহার পর কখনও এ স্থান, কখনও সে স্থান, মাঝে মাঝে আপনি খনন করেন। কখনও বা ঘরের দেয়ালে ঘা মারিয়া পরীক্ষা করেন। ইহার কারণ কি, তাহা আমি বুঝিতে পারি না। কোনও স্থানে ধন প্রোথিত আছে?” বড়ালমহাশয় উত্তর করিলেন,- “বালি-কাম ফাঁপিয়াছে কি না, পুনরায় মেরামত করিতে হইবে কি না তাহাঁই আমি পরীক্ষা করিয়া দেখি ।” রায়মহাশয় বলিলেন,- “বাগানের ভূমিতে বালি-কাম আবশ্যক হয় না। বাগানেও এ স্থান সে স্থান খনন করেন কেন? কিছুদিন হইতে আপনি আবার গাছ কাটিতে আরম্ভ করিয়াছেন। আমার অনুমতি না লইয়া সেদিন বড় একটি শিরীষ গাছ আপনি কাটিয়াছেন। ইহার কারণ R్మూ বড়ালমহাশয়ের মুখ শুষ্ক হইয়া গেল। মনের অসাবধানতাবশতঃ সহসা তিনি বলিয়া ফেলিলেন,- “ঝম-বমির গাছ?” রায়মহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন,- “সে আবার কি? বমি-বমির গাছ আবার কি?” বড়ালমহাশয় উত্তর করিলেন,- “শিরীষ গাছের স্ট্রটি শুষ্ক হইলে বাতাসে ঝম ঝাম করিয়া শব্দ হয়।” রায়মহাশয় আর কোন কথা বলিলেন না। বড়ালমহাশয় যে কোন বিষয় গোপন করিতেছেন, তাহা তিনি বুঝিতে পারিলেন। কিন্তু জিজ্ঞাসা করা বৃথা বলিয়া চুপ করিয়া রহিলেন । န္တိမ် তারপর তিন চারি রাত্রি রায়মহাশয়ের গ খুঁটিখাট শব্দ হইল। মানুষের পদশব্দও কেহ শুনিতে পাইল । রায়মহাশয় দুই চারি জন চাকরকে দালানে শয়ন করিতে বলিলেন । সেইদিন হইতে দোতলায় শব্দ হইল না। কিন্তু নিম্নের তলায়, বিশেষতঃ পূৰ্ব্ব দিকের ঘরগুলিতে নানারূপ লাগিল। এই সময় কোন গ্রামবাসীর সহিত খাদা ভূতের সাক্ষাৎ হইল। গ্রামের লোক উভয়ে জড়সড় হইয়া পড়িল। সন্ধ্যার পর ঘর হইতে বাহির হওয়া একেবারে বন্ধ হইয়া গেল । অমাবস্যার রাত্রি আসিল। ভদ্রমাস। বর্ষাকাল। ঘোর অন্ধকার। রাত্রি দুই প্ৰহরের পর সেই তেঁতুল গাছ হইতে পুনরায় সেই ভীষণ শব্দ উখিত হইল,— छ् छ्, छ् इ६, छ् छ् छ्! পুনরায় পূৰ্ব্বের ন্যায় শৃগাল ডাকিয়া উঠিল,— ईJाका छशों, ईशांकों छशों छ। পুনরায় পূর্বের ন্যায় জীব-জন্তু, কাক-পক্ষীর কোলাহল পড়িয়া গেল। গ্রামের লোক সেইরূপে ভীত হইল। ঘোরতর অমঙ্গলের আশঙ্কা করিয়া দেবতাদিগকে তাহারা স্মরণ করিতে ब्लश्रिोब्ल। রায়মহাশয় ভাবিলেন যে,- “গত বৎসর তেঁতুল গাছ হইতে এইরূপ ভয়ানক হাঁক আসিয়াছিল। সেই হকের পর আমার জামাতার পরলোক হইল। এবার আবার কি হয় দেখা ।” সত্য সত্যই ঘোর অমঙ্গল ঘটিল। রায়মহাশয়ের বিধবা কন্যাটি পীড়িত হইল। সেই রোগেই তাহার মৃত্যু হইল। স্ত্রী-পুরুষ শোকে অভিভূত হইয়া পড়িলেন। পাগ করিয়া তাঁহাদের মনে ঘোর অনুতাপ উপস্থিত হইল। ধন্যবান হইয়াও মানুষ যদি নিদারুণ শোক দ্বারা সন্তপ্ত হয় &ኃ8br দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comাির্ডলাকনাথ রচনা সংগ্ৰহ