পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিত্রাণ পাইলাম।” নানা বিপদে বিপন্ন হইয়া রায়মহাশয় ইদানীং গ্রামের লোককে উৎপীড়ন করিতেন না। সেজন্য শেষ অবস্থায় গ্রামবাসীদের সহিত তাঁহার কতকটা সদ্ভাব হইয়াছিল। তথাপি কেহ। কেহ বলিল,- “রায়মহাশয়ের পাপে খাদা ভূত এ গ্রামে আসিত। এখন তিনি নাই। সেজন্য খাদা ভূত এ গ্রামে আসে নাই।” পর বৎসরও খাদা ভূতের উপদ্রব হইল না। বৎসর কাটিয়া গেল। খাদা ভূতের দেখা নাই; গ্রামের লোকে ক্রমে তাঁহাকে বিস্মৃত হইল। কিন্তু পাঠক! খাদা ভূতের জন্য দুঃখ করবেন না। খাদা ভূতের সহিত পুনরায় সাক্ষাৎ হইবে। আর শাকচুন্নির হাড় দেখিয়া যদি;—থাক, সে কথায় এখন কাজ নাই । খাদা ভূত আর আসিল না। সেজন্য বড়ালমহাশয় ও রায়-গৃহিণীর আহাদ হইল। রায়ণীকে জীবিত রাখিবার নিমিত্ত বড়ালমহাশয় যথাসাধ্য যত্ন করিতে লাগিলেন। “ইনি যতদিন জীবিত থাকিবেন, ততদিন আমি মাসিক পঞ্চাশ টাকা পাইব । রাজাবাবু আমাকে যাহা দিবেন বলিয়া প্রতিশ্রুত হইয়াছিলেন তাহা আমি পাই নাই। রায়গৃহিণীকে সেই কথা আমি বলিয়া দেখিব।” এইরূপ চিন্তা করিয়া বড়ালমহাশয় রায়ণীকে বঁাচাইয়া রাখিবার নিমিত্ত বিধিমতে চেষ্টা করিতে লাগিলেন। এইরূপে পাঁচ বৎসর কাটিয়া গেল। রায়ণী মনে মনে ভাবিতেছিলেন – “যখন খাদা ভূতের দৌরাত্ম্য দূর হইল, তখন আর ভাবনা নাই। পাঁচ বৎসর কাটিয়া গিয়াছে। কেবল আর দুই বৎসর বাকী আছে। এ দুই বৎসর নিশ্চয়ই আমি বাঁচিয়া থাকিব। দুই বৎসর পরে শুরুপ্ত মােস আসিলে সমুদয় বিষয় সুবালাকে আমি লিখিয়া দিব। তাহার পর সুবালার বিবৰ্হি দিব। এই দুইটি কাজ হইয়া গেলে মরি-মারব। সে মরণে আমার খেদ নাই। কুিষ্ঠু কিছুদিন হইতে রাত্রিতে আমার গলা খুস খুস্ করে। সে জল কাসি, সে কিছু নহে।” কিছু নহে?—তাহা বড় নয়। সেই কাসির শব্দ ক্রমে বড়ালমহাশয়ের কর্ণগোচর হইল। তাঁহার ভয় হইল। তিনি র আনাইলেন। ডাক্তার বলিলেন,- “আপাততঃ কোন আশঙ্কা নাই। কিন্তু আমার সন্দেহ হইতেছে।” ডাক্তার ঔষধ দিয়া গেলেন। আপাততঃ কোন ভয় নাই বটে, কিন্তু রায়-গৃহিণী দিন দিন কৃশ হইতে লাগিলেন। বর্ষাকালে সুবালা খুড়ামহাশয়ের গৃহে গমন করিয়াছেন। রায়ণীকে সৰ্ব্বদা তিনি পত্ৰ লিখিতেন। একবার তিনি লিখিলেন, — “দিদিমণি! এ স্থানে বিনয় বলিয়া একটি লোক আছেন। ছেলেবেলা হইতে তাঁহাকে আমি জানি। তাঁহার বাড়ী কলিকাতা, এই গ্রামে তাঁহার মামার বাড়ী। তিনি বড়মানুষের ছেলে। তিনি চাকুরি করিবেন না। সেজন্য তিনি বি-এ, এম-এ, পাশ করেন নাই। ছবি আঁকার দিকে তাহার ঝোঁক । ফটোগ্ৰাফ লাইতে ও ছবি আঁকিতে তিনি উত্তমরূপে শিখিয়াছেন। আমার তিনি ফটোগ্ৰাফ লইয়াছেন। একখানি তোমার নিকট পাঠাইলাম। ঠিক যেন আমি। এখন রং দিয়া আমার বড় একখানি ছবি তিনি আঁকিতেছেন। আমার নিতান্ত ইচ্ছা যে, এইরূপ তোমার একখানি ছবি আঁকা হয়। নামাবলী গায়ে দিয়া জপের মালা হাতে করিয়া তুমি বসিয়া আছ, সেইরূপ ছবি আমার সাধ। আমি বিনয়কে বলিয়ছিলাম। আমাদের বাড়ী গিয়া তোমার ছবি আঁকিতে তিনি সম্মত আছেন। তাহার পিতা সঙ্গতিপন্ন লোক। কাহারও নিকট হইতে তিনি কিছু গ্ৰহণ করেন না।” ፵Igጭg ጭi8ጭሸ(፲ sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro సి