পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“বাঘা আমার নিকটে আছে,” এইরূপ ভাবিয়া সুবালার মনে অনেকটা সাহসের সঞ্চার হইল। তথাপি ভয়ে তাহার মুখশ্ৰী বিবৰ্ণ হইল, ভয়ে তাহার কণ্ঠ শুষ্ক হইল, ভয়ে তাহার হস্তপদ কঁাপিতে লাগিল। মানুষ যতই সাহসী হউক না কেন, বড় বড় বীরপুরুষের মনেও ভূতের নামে কিরূপ একটা আতঙ্ক উপস্থিত হয়। ব্যাঘ-ভালুকের সহিত সম্মুখ যুদ্ধ করিতে যাহারা কিছুমাত্র সঙ্কুচিত হয় না, রণক্ষেত্রে অকাতরে যাহারা প্ৰাণ বিসৰ্জ্জন করিতে পারে, এরূপ লোকের হৃদয়ও ভূতের ত্ৰাসে কম্পিত হয়। চতুৰ্থ অধ্যায়। বড়াল-গৃহিণী ভাগ্যক্রমে এই সময় বিনয় পেরেক প্রভৃতি লইয়া উপস্থিত হইলেন। সুবালার মুখ দেখিয়া তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন,- “কি হইয়াছে?” হাত দিয়া সুবালা অন্ধকার ঘর দেখাইলেন। ঘোরতর বিস্ময়াপন্ন হইয়া বিনয় জিজ্ঞাসা করিলেন, “২১”ও ঘরে কি?” সুবালা উত্তর দিতে না দিতে চোরকুঠরি হইতে স্বরে শব্দ আসিল,— “ঐ ঘরে আমি! আমি কালা বাঘা । আমি খাদা ভূত।” (Nరీ সাতিশয় আশ্চৰ্য্যান্বিত হইয়া বিনয় কুছুক্কুল সেই অন্ধকার ঘরের দিকে চাহিয়া রহিলেন। ভীরু বলিয়া বাঙ্গালী জুতির অপবাদুষ্কছ, বিনয় তাহা পুস্তকে পাঠ করিয়াছিলেন। সে জন্য w তিনি দৃঢসংকল্প করিয়াছিলেন যে, মা হইতে যতটুকু হয়, আমি এ অপবাদ দূর করিতে চেষ্টা করিব। প্ৰাণ থাকে। আর যায়, কোন কাজে আমি ভয় করিব না।” খাদা ভূতের ভয়ে তিনি ভীত হইলেন না। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন,- “দিনের বেলা ভূত! তুমি মানুষ না ভূত?” সে উত্তর করিল,— “আমি জীবিত মানুষ।” সন্ন্যাসী কালা-বাবা অনেক দিন হইতে খাদা ভূত নামে পাঠকদিগের নিকট পরিচিত হইয়াছে। সেজন্য তাহাকে আমরা খাদা ভূত বলিয়া ডাকিব। নাসিকবিহীন হইয়া তাহার খোনা হইয়া গিয়াছে। খোনা কথা লিখিতে ও পড়িতে কষ্ট হইবে। সেজন্য সহজ ভাষায় তাহার কথা আমরা এ স্থানে লিখিব। বিনয় বলিলেন, — “যদি তুমি জীবিত মানুষ, তাহা হইলে ও ঘর হইতে এ ঘরে এস।” খাদা ভূত উত্তর করিল,- “তোমাদের কুকুর আমাকে কামড়াইবে। ঘর হইতে কুকুর বাহির করিয়া দাও।” সুবালার দিকে চাহিয়া বিনয় আস্তে আস্তে বলিলেন,- “এ আবার নূতন ব্যাপার!! বৃত্তান্ত কি, জানিলে ভাল হয় না?” সুবালা বাঘকে বাহিরে যাইতে বলিলেন। কিন্তু তাঁহাকে এ ভয়ের মাঝে ছাড়িয়া যাইতে বাঘা স্বীকৃত হইল না। সুবালা তাহাকে সঙ্গে লইয়া নীচের তলায় গমন করিলেন। চাকরের

              • দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com ~ &&&