পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এইরূপে এক বৎসর কাটিয়া গেল। পুনরায় ভাদ্র মাস আসিলে। পুনরায় ঘোর নিশীথে রাজাবাবু আসিয়া আমার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন ও সোনার ইট লইবার জন্য আমাকে উত্তেজিত করিতে লাগিলেন। পুনরায় আমি ক্ষিপ্ত হইলাম। পুনরায় আমি লাফালাফি, ছুটাছুটি করিয়া ও বঙ্গদেশ-অভিমুখে অগ্রসর হইয়া রাত্রিযাপন করিতে লাগিলাম। দিনের বেলা সুস্থ হইয়া কোন স্থানে পড়িয়া থাকিতাম। সাত-আট দিন পরে পূৰ্ব্বরূপ সেই ভয়াবহ অনিবাৰ্য্য হুহুঙ্কার শব্দ আমার মুখ দিয়া নিৰ্গত হইল। তাহার পর পুনরায় আমি সহজ অবস্থা প্ৰাপ্ত হইলাম।” অষ্টম অধ্যায় খাদা ভূতের প্রার্থনা খাদা ভূত বলিতেছে,- “প্রতি বৎসর ভদ্র মাসে আমি এইরূপ ক্ষিপ্ত হইতে লাগিলাম। সেই সময় রাজাবাবুর উত্তেজনায় বঙ্গদেশের দিকে আসিতে লাগিলাম। ঠিক বলিতে পারি না, বোধহয়, সাত-আট বৎসর পরে ক্ষিপ্ত অবস্থায় এই গ্রামের য়া পৌছিলাম। এ স্থান হইতে দুই ক্রোশ দূরে এক পরিত্যক্ত পুরাতন নীলকুঠি আছে। এখন মানুষের যাতায়াত নাই। দিনের বেলা আমি সেই নীলকুঠিতে লুকাইয়াকূৰ্হিলাম। রাত্রিকালে সম্পূর্ণ উন্মত্ত অবস্থায় আমি এই গ্রামে প্রবেশ করিলাম। গাছে এবং ভোির্কর চালে বসিয়া এই গ্রাম সম্বন্ধে নানা সংবাদ সংগ্ৰহ করিলাম। লােকের কথােপকথন্তের্ভুঝিতে পারিলাম যে, রায়মহাশয় নামে কােন ব্যক্তি ঈহাঁর গৃহে বাস করিতেছেন। তাঁহার বাড়ীতে গিয়া সোনার ইট লাইতে রাজাবাবু ক্ৰমাগত আমাকে উত্তেজিত করিতেছিলেন। আমি তাঁহার বাটীর ভিতর প্রবেশ করিলাম। কিন্তু সে সোনার ইট কোথায় তিনি লুক্কায়িত রাখিয়াছেন, রাজাবাবু সেকথা আমাকে প্রকাশ করিয়া বলিলেন না। তিনি কেবল বলিতে ছিলেন,- “যাও, যাও, সোনার ইট লও।” বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিয়া এ-দিক ও-দিক ঘুরিয়াফিরিয়া কৰ্ত্তার শয়নাগারের সম্মুখে বারেণ্ডায় গিয়া দাড়াইলাম। কাচের জানালায় উকি মারিয়া তাঁহাকে দেখিলাম। মনে করিলাম,- ইনিই রায়মহাশয়। জাগরিত হইয়া তিনি আমাকে তাড়া করিলেন। আমি সত্ত্বর পলায়ন করিলাম। প্রথম বৎসর কয়দিন আমি এরূপে কাটাইলাম। দিনের বেলা নীলকুঠিতে থাকিতাম। ক্রমে গ্রামের কয়জনের সহিত আমার সাক্ষাৎ হইল। ‘ভূত! ভূত!’ বলিয়া তাহারা পলায়ন করিল। গ্রামের লোক আমার নাম খাদা ভূত রাখিল। কিন্তু এই খাদা ভূত যে সেই কালা-বাবা, তাহা কেহ জানিতে পারিল না।” বড়ালমহাশয় বলিলেন, — “সে বৎসর না হউক পরে আমি বুঝিয়াছিলাম যে, তুমিই খাদা छूऊ।” খাদা ভূত উত্তর করিল,— “নাসিক ছেদনের গোসাঞি তুমি, তুমি বুঝিতে পরিবে না কেন?” Ay8 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.confািলকানাথ রচনাসংগ্ৰহ