পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় অধ্যায়। ঘোর অনুতাপ বিজয়বাবু চুপি-চুপি বড়ালমহাশয়কে জিজ্ঞাসা করিলেন,— “কালা-বাবা? খাদা ভূত? যাহার নাক আমার নিকট আছে?” বড়ালমহাশয় উত্তর করিলেন, — “হী। আমরা ভ্ৰমে পতিত হইয়াছিলাম। সে মনে নাই। এই বাড়ীতে এখন সে লুক্কায়িত আছে। বিধাতার লীলা বুঝিতে পারা যায় না। এতকাল পরে পুনরায় দুইজনকে তিনি একত্র করিয়াছেন।” বিজয়বাবু বলিলেন,- “এই বাড়ীতে সে লুক্কায়িত আছে? আশ্চৰ্য্য! বিধাতা আমাকেও ঠিক এই সময়ে এস্থানে আনিয়াছেন।” সোনা-বীে পুনরায় বলিতে লাগিলেন,— “রাজাবাবু! গুরুদেবকে তুমি বাড়ী হইতে দূর করিয়া দিলে। সে যে কালসৰ্প, তখন আমি বুঝিতে পারি নাই। সেইজন্য গুরুদেব বলিতেছি। নদীকূলে শিবমন্দিরে গিয়া তিনি বাস করিতে লাগিলেন। তখন হইতে, রাজাবাবু, তোমার প্রতি আমার ঘোরতর অভক্তি হইল। তোমার নিকট থাকিতে, তোমার নিকট বসিতে আমি একেবারেই ইচ্ছা করিতাম না। প্রথম তুমি আমাকে অনেক বুঝাইলে, অনেক উপদেশ দিলে। তোমার উপদেশ আমি গ্ৰহণ করিলাম না। তোমার কথা আমার কানে যেন বিষ ঢালিয়া দিল । “নীচের ঘরে যে জানালা আছে, তাহার দুইটি র গর্যাদ গুরুদেব শিথিল করিয়া দিলেন। সেই পথ দিয়া গভীর রাত্ৰিতে গোপনে এই বাটীর ভিতর প্রবেশ করিতেন। কখন বা আমিও তাঁহার নিকট গমন করি তিনি আমাকে শিক্ষা দিলেন যে,-- “দেবীর পূজায় সুরা আবশ্যক। ইহাকে কুৰ্ব্ব আমিও পান করিতে শিক্ষা করিলাম। ফ্ৰান্স এতদূর অভ্যাস হইল যে, সুরাপান না করিয়া আমি থাকিতে পারিতাম না। সে সময় যদি কেহ আমাকে জিজ্ঞাসা করিত যে, তুমি সুরা চাও, কি প্ৰাণ চাও? অকাতরে আমি বলিতে পারিতাম যে, আমি সুরা চাই, প্ৰাণ চাই না। “রাজাবাবু! ধন্য সহ্য তোমার। তুমি সব জানিতে। আমি স্ত্রীলোক, সেজন্য তুমি আমার গায়ে হাত তুলিতে না। কিন্তু আমার প্রতি তােমার ঘোরতর ঘূণা হইয়াছিল। আমাকে উপদেশ প্রদানে তুমি ক্ষান্ত হইলে। বৃক্ষাবলম্বনী বিষময়ী লতাকে ছিড়িয়া বন্যহন্তীক যেরূপ পদদলিত করে, তোমার হৃদয় হইতে আমাকেও সেইরূপ ছিড়িয়া, মনে মনে তুমি পদদলিত করিতে লাগিলে। আমি তখন গর্ভবতী। সেইজন্য তুমি বােধ হয় আমাকে বাড়ী হইতে দূর করিলে না। পাছে তুমি সুরার গন্ধ পাও, সেইজন্য পূৰ্ব্ব হইতেই আমি ঐ পার্থের ঘরে শয়ন করিতেছিলাম। তুমি কিছুমাত্র আপত্তি করিলে না। “আমাদের খুকী হইল। ঐ পার্শ্বের ঘরে খুকীকে লইয়া আমি শয়ন করিতাম। খুকীর। দাই-মন্দাকিনী, নিম্নে মেজেতে শয়ন করিত। খুকী শিশু। পাপ-পুণ্যের বিষয় সে কি জানে! রাজাবাবু, তুমি দয়াময়। সকল জীবের প্রতি তোমার দয়া ও ভালবাসা। নিরীহ খুকীর প্রতি তুমি মন ও প্ৰাণ সমৰ্পণ করিলে। “কিন্তু আমি? আমি পাপিষ্ঠা-খুকীকে গলগ্ৰহ বলিয়া বিবেচনা করিলাম। মাঝে মাঝে মন্দাকিনীকে আমি ছুটি দিতাম। সে আপনার ঘরে চলিয়া যাইত। খুকীকে একেলা ফেলিয়া গভীর রাত্ৰিতে আমি শিবমন্দিরে চলিয়া যাইতাম । B দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comঙিািলকানাথ স্নচ"সংগ্ৰহ