পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুবালা সুস্থ ও সবল হইলে একদিন বিজয়বাবু সকলের সাক্ষাতে তাঁহাকে বলিলেন,- “সুবালা! এই সম্পত্তি অতিশয় অমঙ্গলজনক অর্থাৎ অপয়া। পূৰ্ব্বে যাঁহাদের ইহা ছিল, তাহারা নিৰ্ব্বংশ হইয়া গিয়াছেন, তাহদের চিহ্নমাত্র এখন এ গ্রামে নাই। তাহার পর আমার দাদামহাশয় ইহার অধিকারী হইয়াছিলেন। ইহা লাভ করিয়া তাহারও সুখ হয় নাই। অতএব এ সম্পত্তি আমিও লইব না এবং তোমাকেও লাইতে দিব না।” সুবালা সে প্রস্তাবে সন্মত হইলেন। তাহার পর সুবালার কাকমহাশয়ের দিকে চাহিয়া বিজয়বাবু বলিলেন,- “আপনি যদি এ সম্পত্তি লইতে ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে আপনাকে ইহা আমি লিখিয়া দিতে পারি।” কাকামহাশয় উত্তর করিলেন,- “না, ভাই! আমার ইহাতে প্রয়োজন নাই। আমি গরীব মানুষ বটে, কিন্তু এ সম্পত্তিতে আমার কোন অধিকার নাই। ইহা লইতে আমারও মঙ্গল হইবে না। আমিও পুত্ৰ-কন্যা লইয়া ঘর করি। তাহাদের প্রাণ বড়, না। টাকা বড়!” বেণীবাবুর কোন আত্মীয় আছেন কি না, বিজয়বাবু এখন সেই অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। বেণীবাবুর পিতা পূৰ্ব্বদেশ হইতে এ অঞ্চলে আসিয়া জেলায় মোক্তারি করিতেন। জেলার কাছারীর কাগজপত্রে অন্বেষণ করিয়া তিনি পূৰ্ব্বদেশে তাঁহার জন্মস্থানের নাম বাহির করিলেন। তাহার পর জানিতে পারিলেন যে, সে গ্রামে তাঁহাদের জ্ঞাতি-গোত্র অনেকেই জীবিত আছেন। সৰ্ব্বাপেক্ষা যিনি নিকট জ্ঞাতি, তাঁহাকে আনাইয়া বিজয়বাবু এই সম্পত্তি তাহার হস্তে সমর্পণ কুঠুইহঁইল। তৃতীয়—নদীর তীরে যে বাঁধ ভাঙ্গিয়া গ্রামের অনিষ্ট হইতেছিল, বিজয়বাবু সে বঁাধ পুনরায় বঁধিয়া দিলেন। চতুৰ্থ-গ্রামে তিনি একটি বিদ্যালয় সংস্থাপিত করিলেন। পঞ্চম-গ্রামের পথ-ঘাট ও জলনিৰ্গমের পথ ভালরূপে প্রস্তুত করিয়া দিলেন। ষষ্ঠ—নিকটস্থ একখানি গ্রামের লোকের জলকষ্ট ছিল, সে স্থানে বিজয়বাবু একটি পুষ্করিণী খননের নিমিত্ত অর্থ প্ৰদান করিলেন। সপ্তম—বড়ালমহাশয় ও বড়াল-গৃহিণী যাহাতে অবশিষ্ট জীবন পরম সুখে যাপন করিতে পারেন, সেজন্য প্রচুর অর্থ তাহাদিগের হস্তে তিনি সমর্পণ করিলেন। অষ্টম-চপলার মাতা ও তাহার ভগিনীর ভরণপোষণের নিমিত্ত বিজয়বাবু ভালরূপ ব্যবস্থা করিলেন। পশুপক্ষীদিগকে আহার দিবার নিমিত্ত পাগলীকে তিনি নিযুক্ত রাখিলেন। বাঘা কুকুরকে সুবালা আপনার সঙ্গে লইয়া গেলেন। সুবালা এ স্থান পরিত্যাগ করিয়া যাইবেন, তাহা শুনিয়া গ্রামে হাহাকার পড়িয়া গেল। সীতাসহিত রাম-লক্ষ্মণ ও দ্ৰৌপদী সহিত পঞ্চ-পাণ্ডব যখন বনে গিয়াছিলেন, তখন প্ৰজাগণ যেরূপ বলিয়াছিল, গ্রামবাসিগণ এখন সেইরূপ বলিতে লাগিল। সকলে বলিল যে,- “সুবালা দিদিকে ছাড়িয়া আমরা এ গ্রামে থাকিতে পারিব না; তিনি যে স্থানে যাইবেন, আমরাও সেই স্থানে যাইব ।” কেহ কেহ বিজয়বাবু ও কাক মহাশয়ের পায়ে পড়িয়া কাঁদিতে লাগিল। অনেক বিলাপ করিয়া তাহারা বলিতে লাগিল,— “আমাদের লক্ষ্মীকে আপনারা লইয়া যাইবেন না। সুবালা দিদি গ্রামের অধিশ্বরী হইয়াছেন, তাহা ভাবিয়া আমাদের মনে বড় ভরসা হইয়াছিল। ভগবানও °"*°”* *f°°"° rifGrRIl5 °ii%35 q<5 zx8! ~ www.amarboi.com ~ “ስማዕ