পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এমন সময় কেষ্টা ছোড়া সেই স্থানে আসিয়া সকলকে জিজ্ঞাসা করিল,- “আমার ঠাকুরমা কোথায়? অনেকক্ষণ হইল তেল লইতে আমার ঠাকুরমা দোকানে আসিয়াছিলেন। আমার ঠাকুরমা কোথায়?” কিছুদিন পূৰ্ব্বে কেষ্টা আমার বাগানে বাতাবি লেবু চুরি করিয়াছিল। সেজন্য তাহাকে পুলিশে দিতে আমি উদ্যত হইয়াছিলাম। অনেক মিনতি করিলে তাহাকে ছাড়িয়া দিয়াছিলাম। কিন্তু বলিয়া দিয়াছিলাম যে, পুনরায় যদি সে আমার কোন বস্তু চুরি করে, অথবা আমাকে ক্ষেপায়, তাহা হইলে তাহার নামে আমি নালিশ করিব। আজ আমার কাপড় লইয়া সে কোথায় ফেলিয়া দিয়াছিল। পাছে আমি নালিশ করি, সেই ভয়ে সে কাহারও নিকট আমার নাম করে নাই। “ঐ পুকুরে কে মাছ ধরিতেছে।” দুর্লভীকে কেবল এই কথা বলিয়া সে সরিয়া পড়িয়াছিল। এখন কেষ্টার ঠাকুরমা কোথায় গেল? কেষ্টার বাপ ও প্রতিবেশিগণ লণ্ঠন লইয়া চারিদিকে অনুসন্ধান করিতে লাগিল, ক্ৰমে হৈ হৈ পড়িয়া গেল। সকলে বলিল যে, নেঙটা ভূত কেষ্টা ঠাকুরমাকে লইয়া গিয়াছে। গোল শুনিয়া মেনী গোয়ালা-চুড়ী ঘর হইতে বাহির হইল। মেনীর বয়স দশ বৎসর। ছয় বৎসর বয়স্ক একটি ভাই ব্যতীত সংসারে তাঁহার আর কেহ নাই। কয় বৎসর হইল, তাহাদের বাপ ও মা মরিয়া গিয়াছে। তাহাদের মাসী কলিকাতায় এক বাবুর বাড়ীতে চাকরাণী ছিল। মাসী ইহাদিগকে টাকা দিত। মাসীও এখন মরিয়া গিয়াছে। (২ মেনীর ছয় বৎসর বয়স্ক ভাইয়ের নাম ভিলে । ভিলের হাত ধরিয়া মেনী ঘর হইতে বাহির হইল। পথের ধারে গিয়া দাঁড়াইল। আমি যে বনের ভিতর বসিয়াছিলাম, কেষ্টার ঠাকুরমাকে অনুসন্ধান করিতে পাছে লোকে সেই স্থানে আসে, সেই ভয়ে মেনীর ঘর খালি পাইয়া আমি তাহার ভিতর প্ৰবেশ করিলাম। মনে করিলাম যে, গোলটা একটু মিটিলে মেনী ও তাহার ভাই নিদ্রিত হইলে আস্তে আস্তে আমি ঘরে ফিরিয়া যাইব; গুণ পরিয়া বাহির হইলে লোকে আমাকে সন্দেহ করিবে। ভিলের হাত ধরিয়া মেনী পথের ধারে গিয়া দাঁড়াইল। সুগন্ধী গোয়ালিনী ও অন্যান্য লোক পথ দিয়া যাইতেছিল। মেনী জিজ্ঞাসা করিল,— “গান্ধী মাসিা কি হইয়াছে? চারিদিকে এত গোল কেন?” সুগন্ধী উত্তর করিল,— “আর বাছা, বলিব কি, সৰ্ব্বনাশ হইয়াছে! কোথা হইতে একটা নেঙটা গোরা ভূত আসিয়াছে। বলাই চিন্তিকে খাইতে গিয়াছিল। তাঁহাকে খাইতে না পাইয়া কেষ্টার ঠাকুরমাকে লইয়া গিয়াছে। কিন্তু আমি বলি যে, সে কেষ্টার ঠাকুরমাকে খাইবে না। সেটা গোরা ভূত, কেষ্টার ঠাকুরমাকে মেম করিবে, সেই জন্য তাঁহাকে লইয়া গিয়াছে।” ভূতের নাম শুনিয়া মেনী তাড়াতাড়ি ভাইকে লইয়া ঘরে আসিল ও ঘরের দ্বার বন্ধ করিয়া দুইজনে শয়ন করিল। আমি ঘরের এক কোণে বসিয়া রহিলাম। ভিলে বলিল,- “দিদি রায়েদের বাড়ী হইতে আর ভাত আন না কেন? কাল কেবল ክrN9O দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comশ্মির্ত্যািক্যনাথ রচনাসংখ্যাই