পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই কথা বলিয়া কেশব চলিয়া গেলেন। কেশব তখনও বাড়ীর বাহির হন নাই। এমন সময় দাঁড়াইল। জিন ঠিক দৈত্য নহে। আমাদের দেশে যেরূপ যক্ষ রক্ষা অন্সর কিন্নর গন্ধৰ্ব্ব আছে, বোগদাদ অঞ্চলে সেইরূপ জিন নামক এক প্রকার ভৌতিক বায়বীয় জীব আছে। জিনকে দেখিয়া সকলে ভয়ে রুদ্ধশ্বাসে পলায়ন করিল। কেবল আমি ডমরুধর ভয় পাইলাম না । অনেক ভূত-প্রেতের সহিত আমি কারবার করিয়াছি। ঢাকমহাশয়ের নিকট গঢ় হইয়া বসিয়া রহিলাম। জিনটির কথা আমি এইরূপ শুনিলাম। একদিন কেশব ছিপ ফেলিয়া তাইগ্রিস নদীতে মাছ ধরিতেছিলেন। হঠাৎ তাঁহার বড়শীতে কি লাগিয়া গেল। সাবধানে উপরে তুলিয়া দেখিলেন যে, তাহা এক তাম-নিৰ্ম্মিত হাঁড়ী।। তামার ঢাকন দ্বারা হাঁড়ীর মুখ বন্ধ। সেই ঢাকনের উপর হিজিবিজি লেখা আছে ও তাহার উপর সিলমোহর আছে। হাড়ীর ভাব দেখিয়া তাঁহার আরব্য উপন্যাস বর্ণিত ধীবরের কথা স্মরণ হইল। তিনি ভাবিলেন যে, ঢাকন খুলিলে হয় তো হাঁড়ীর ভিতর হইতে প্রথম ধূম বাহির হইবে, তাহার পর সেই ধূম জিনের আকার ধারণ করিবে, তাহার পর জিন আমাকে বধ করিতে চাহিবে। এই ভয়ে তিনি তিনদিন হাঁড়ীর ঢাকন খুলিলেন না। তিনদিন পরে হাঁড়ীর ঢাকন খুলিবার ইচ্ছা তাঁহার মনে অতিশয় প্রবল হইল। ছুরি দিয়া অতিকষ্টে তিনি ঢাকন খুলিলেন। তাহার পর যে ভয় করিয়াছিলেন, তাহাই হইল। হাঁড়ী হইতে প্রথম ধূম বাহির হইল; ধূম গাঢ় হইয়া প্ৰকাণ্ড জিনে পরিণত হইল। কেশব ঘোরতর ভীত হইল। কিন্তু জিন তাহাকে আশ্বাস প্ৰদান করিয়া করিল,- “আলাদিন কোথায়? প্ৰদীপের সে জিন কোথায়? আলাদিনের নিমিত্ত অট্টালিকা প্রস্তুত করিতে প্রদীপের জিন আমাকে নিযুক্ত করিয়াছিল। তাহার নিকট আমার এক সহস্ৰ দিনার বা টাকা পাওনা আছে। সেই কথা লুইয়া তাহার সহিত আমার বিবাদ হইয়াছিল। সেজন্য প্ৰদীপের জিন আমাকে তামার ই বন্ধ করিয়া সিলমোহর করিয়া তাইগ্ৰীস নদীতে নিক্ষেপ করিয়াছিল। এখন তাহার আমি আমার টাকা আদায় করিব।” কেশব বলিলেন,- “আমি লোক। আরব্য উপন্যাসের সে আলাদিন কোথায়, তাহার সে প্ৰদীপের জিন কোথায়, তাহা আমি জানি না।” জিন বলিল,— “আমি আলাদিনকে ও প্রদীপের জিনকে খুঁজিয়া বাহির করিব। কিন্তু প্ৰথম আমি তোমার উপকার করিব। কারণ, তুমি আমাকে জল হইতে তুলিয়াছ, হাঁড়ী হইতে বাহির করিয়াছ। তোমার সহিত তোমার দেশে আমি যাইব । নানা বিপদ হইতে তোমাকে আমি রক্ষা করিব। তাহার পর তোমাকে লইয়া এ দেশে পুনরায় ফিরিয়া আসিব। সেই হাজার দিনার আদায় করিয়া তোমাকে আমি দিব।” কেশবের সহিত জিন সেই জন্য বঙ্গদেশে আসিয়াছে। জিন ঢাকমহাশয়ের দিকে ভয়ঙ্কর কোপদৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে লাগিল। তাহার চক্ষু দুইটি হইতে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বৃষ্টি হইতে লাগিল। অবশেষে সে বলিল,—“নরাধম কাফের! তুই আমার বন্ধুকে অপমান করিয়াছিস। একচক্ষু কাণ দামড়া গরুর আকৃতি ধারণ করু।” তৎক্ষণাৎ ঢাকমহাশয় একচক্ষুহীন দামড়া গরু হইয়া গেলেন। সেই মুহূৰ্ত্তেজিন অদৃশ্য হইয়া গেল! ঘোর বিপদ দেখিয়া আমি দৌড়িয়া গিয়া পথে কেশবকে ধরিলাম। দুর্ঘটনার বিবরণ শুনিয়া তিনি বলিলেন,- “শ্বশুর মহাশয়কে পুনরায় মানুষ করি, সে ক্ষমতা আমার নাই। জিন কেবল মাঝে মাঝে আমার নিকট আগমন করে। পুনরায় কবে আসিবে, তাহা জানি না। এইবার যেদিন আসিবে, তাহার হাতে-পায়ে ধরিয়া শ্বশুর—মহাশয়কে ভাল করিতে চেষ্টা করিব। byr RM fi:Ilă zi, o ga se - www.amarboi conf**