পাতা:দরিয়া - পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দরিয়া বুদ্ধ বৈরাগী বিস্ময়ে অবাক, তাহার দুই হাতের দুইখানি খঞ্জনী অসাড় ভাবে যেন ঝুলিতেছে, হাত দুইখানি অৰ্দ্ধপ্রসারিতভাবে রহিয়াছে,-দক্ষিণ চরণ একটু আগাইয়া, বাম চরণখনি অদ্ধেক তুলিয়া সে কেবল দেখিতেছে। বুদ্ধ সত্যই ছা করিয়া দেখিতেছে, জ্যোতিঃহীন কোটরগত দুইটি চক্ষু যেন ঠিকারিয়া বাহির হইতে চাহে-সে কেবলই দেখিতেছে! এমন ত দেখে নাই । এমন অনিন্দসৌন্দৰ্য্য, এমন নিরাবিল নিৰ্ম্মল বিলাসবজিত সহজ সৌন্দৰ্য তি আর দেপে নাই। সে দেখিতে লাগিল, ক্ষণেক পরে যেন ঢ়োক বলিল,—হঁ্যা মা ! তুমি কি আমাদের রাধারাণী ? বালিকা মুচকি হাসির বিদুৎদাম ঝলসিয়া, কুন্দন্তের শুভ্ৰবিভায় অধরেীষ্ঠের সে রক্তিমাভ আভাকে যেন প্রোজ্জল করিয়া একটি ছোট হু বলিল এবং সঙ্গে সঙ্গে আবার বলিল, “ঐ গানটা গাওনা বাবা।” ভিখারী আবার গাহিল। সে বৃদ্ধ বটে। কিন্তু এবার তাহার কণ্ঠ হইতে যেন চাছা ছোল৷ কনকনে টনটনে যৌবনের কণ্ঠস্বর বাহির হইতে লাগিল। সমগ্ৰ গৃহটি স্বরলহরীতে যেন ফুলিয়া-ধ্বনি ও প্রতিধ্বনিতে যেন ফাপিয়া উঠিল। নীচে চৌবাচ্ছার কোণে রূপময়ী আর তাহার সম্মুখে জরাজীর্ণ শব্দময় পুরূষ একজন গান করিতেছে ; রূপ প্ৰতিমা তাহ শুনিতেছে, প্ৰাঙ্গণ সে গানের তরঙ্গে যেন উছলিয়া উথলিয়া উঠিতেছে আর উপরে-ঠিক মাথার উপরে দ্বিতলের বারাণ্ডায় দাড়াইয়া পূর্ণ যৌবনের অভিব্যঞ্জনা স্বরূপ রূপের পুরুষকার স্বরূপ একটি পুরুষ। গান ছাড়া অন্য শব্দ নাই, তান মান, লয়, গিটকিরীতে অন্য সকল শব্দ স্তব্ধ । আর সেই স্তব্ধ স্বর সরোবরে এই তিন রূপের বিকাশ ।