পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠি যাচ্ছিল-কেমন আছ -কেমন আছ-সাবধানে থেকে, সাবধানে থেকে । আমি কি কচি খুকি, না, পঞ্চাশটি টাকা দাদা আমাকে দিতে পারতেন না ? ও টাকা পাঠিয়ে সকলের কাছে আমার মাথা হেঁট করে দেবার কি দরকার ছিল ? সেদিন বাড়িতে যেন একটা হাসি পড়ে গেল । নরেন্দ্ৰ মান মুখ আরও স্নান করিয়া অক্ষুটে কহিল, আর যোগাড় করতে পারলুম না । না পাঠিয়ে তাই কেন লিখে দিলে না ? উঃ-আবার সেই নিত্য নেই নেই।--দাও দাও-বেশ ছিলুম এতদিন । বাস্তবিক বড়লোকের মেয়ে গরীবের ঘরে পড়ার মত মহাপাপ আর সংসারে নেই, বলিয়া এই পরম সত্যে স্বামীর হৃদয় পূর্ণ করিয়া ইন্দু অন্যত্ৰ চলিয়া গেল। মাসাধিক পরে স্বামী-স্ত্রীর এই প্ৰথম সাক্ষাৎ { বাহিরে আসিয়া ইন্দু ইতস্ততঃ দৃষ্টি-নিক্ষেপ করিয়া, নিজের শোবার ঘরে ঢুকিয়া ভারি আশ্চর্য হইয়া দেখিল, বাড়ির অন্যান্য স্থানের মত এখানেও সমস্ত বস্তু রীতিমত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হইতেছে। জিজ্ঞাসা করিল, এত ঝাড়া-মোছা হচ্ছে কেন রে ? নূতন ঝি বলিল, আপনি আসবেন বলে। আমি আসব বলে ? হ্যা মা, বাবু তাই ত বলে দিলেন। আপনি ময়লা কিছু দেখতে পারেন না-আজ তিন দিন থেকে তাই ইন্দু অন্তরের মধ্যে একটা বড় রকমের গর্ব অনুভব করিল। কিন্তু সহজভাবে বলিল, ময়লা কে দেখতে পারে ? তবু ভাল যে— হঁ্যা মা, লোক লাগিয়ে ওপর-নীচে সমস্ত সাফ করা হয়েচে । বিঃ, রামটহলটাকে একবার ডেকে দাণ্ড ত, বাজার থেকে কিছু ফলমূল কিনে আনুক । ফলটল তা সব আছে মা । বাবু আজ সকালে নিজে বাজারে গিয়ে সমস্ত খুটিয়ে কিনে এনেচেন । ভাব আছে ? আঙর ?