পাতা:দায়ে খুন - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দায়ে খুন।
১৭

আমিও তাহাই স্থির করিয়া পরদিবস মাণিকবাবুর নিকট গমন করিয়া তাঁহাদিগের ফারমেই কার্য্য করিতে প্রবৃত্ত হইব, মনে মনে এইরূপ স্থির করিলাম।

 পরদিবস বেলা আন্দাজ এগারটার সময় আমি রাজার কাটরায় গিয়া উপস্থিত হইলাম। রাজার কাটারার প্রত্যেক ঘরই আমি পূর্ব্ব হইতে জানিতাম। দোতালার উপর গমন করিয়া পঁচিশ ছাব্বিশ নম্বরের গৃহের সম্মুখে গিয়া উপস্থিত হইলাম। সেই দুইটী ঘর অনেকদিবস হইতে খালি ছিল। সেখানকার প্রত্যেক ঘরেরই বারান্দার দিকে দুইটী করিয়া দরজা আছে মাত্র। কোন কোন ঘরের মধ্যে এক ঘর হইতে অপর ঘরে যাতায়াত করিবার নিমিত্ত একটী একটী দরজা আছে। কোন ব্যক্তি দুইটী ঘর একত্র গ্রহণ করিলে উভয় ঘরের মধ্য দিয়া যাতায়াতের নিমিত্ত প্রায়ই সেই দরজা খুলিয়া রাখেন। আর যদি কেবলমাত্র একটী ঘর গ্রহণ করেন, তাহা হইলে সেই দরজা বন্ধ থাকে।

 আমি পঁচিশ নম্বরের ঘরের সম্মুখে গিয়া দেখিলাম, উহার বাহিরের দুইটী দরজাই ভিতর হইতে বন্ধ। ছাব্বিশ নম্বরের ঘরেরও একটী দরজা ভিতর হইতে বন্ধ; কিন্তু একটা দরজা খোলা। সেই দরজার উপর একখানি পরদা ঝোলান আছে। সেই পরদার বাহিরে দ্বারবান্ সদৃশ একটী লোক বসিয়া আছে। আমি সেই স্থানে গমন করিয়া প্রথমেই সেই দ্বারবান‍্কে জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘মাণিকচাঁদ বাবু নামে কোন ব্যক্তি এই স্থানে আছেন কি?’ তখন সেই দ্বারবান্ সেই ঘর দেখাইয়া দিয়া উত্তরে আমাকে কহিল, ‘হাঁ মহাশয়! বাবুসাহেব এই ঘরেই থাকেন, তিনি এখন ইহার ভিতরেই আছেন।’