করিবার মানসে নরহত্যা পর্য্যন্ত করিতেও কিছুমাত্র সঙ্কুচিত হইলাম না। এখন আমার অদৃষ্টে যাহা আছে, তাহা হইবেই হইবে। তাহার নিমিত্ত আমি কিছুমাত্র দুঃখিত নহি, বা আমার প্রধান সঙ্গী, যিনি এখন আপনাদিগের নিকট মাণিকাচাঁদ নামে পরিচিত, তাঁহার নিমিত্তও আমি দুঃখিত নহি। কারণ, আমরা উভয়ে পরামর্শ করিয়া যেরূপ কার্য্যে হস্তার্পণ করিয়াছি, তাহার ফল ভোগ করাই আমাদিগের কর্ত্তব্য। কিন্তু এই দ্বারবানের নিমিত্ত আমি আন্তরিক দুঃখিত। কারণ, এ ব্যক্তি আমাদিগের সহিত কখনও কোন অসৎ কার্য্যে প্রবৃত্ত হয় নাই, বা এ আমাদিগের নিকট পরিচিতও নহে। সামান্য অর্থের লোভে যে এইবার এই ব্যক্তি মাণিকচাঁদকে কিছু সাহায্য করিয়াছে, তাহার আর কিছুমাত্র সন্দেহ নাই; কিন্তু সে যে ইহার ভিতরের বিষয় অবগত আছে, তাহা আমার বোধ হয় না।”
দ্বারবানকে জিজ্ঞাসা করায় সে কহিল, “মহাশয়! আমি পূর্ব্ব হইতে মাণিকচাঁদকে বা এখন যিনি বোম্বাই সহর হইত ধৃত হইয়া আসিয়াছেন, উঁহাদিগের কাহাকেও চিনিতাম না। মধ্যভারতে বা বোম্বাই সহরে আমি কখনও গমন করি নাই। আমার বাসস্থান আরা জেলার অন্তর্গত কোন একখানি ক্ষুদ্র পল্লীতে। আমি কয়েকবার আরায় গিয়াছিলাম, এবং পরিশেষে পেটের দায়ে কলিকাতায় আসিয়াছি। এই দুইটী স্থান ব্যতীত অপর কোন সহরে আমি আর গমন করি নাই। মাণিকচাঁদের সহিত এই কলিকাতা সহরেই আমার প্রথম পরিচয় হয়। তিনি আট টাকা বেতনে আমাকে চাকুরী প্রদান করেন, এবং আমাকে এক মাসের বেতনও অগ্রিম দেন। তিনি যে জুয়াচোর, তাহা আমি