পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-বহ, দরকালের ছায়া তাঁর জীবনে এমন একটি স্নিগ্ৰধ পরিবেশ রচনা করেচে-তা থেকে হাশিয়ার ও হিসাব-দারসত বত্তমানে তিনি কোনোদিনই যেন পৌছতে পারবেন না, কোনোদিনই বাববেন না। এর কুটিলতা আর আত্মসবার্থবোধ। আমি বললাম-মোহান্তজী, আপনি চলে আসন ভাগলপারে। —আপনি যেতে বললেই যাবো, টাকা একসঙ্গে জড় হলো নিয়ে আসব গিয়ে। তারপর আমায় একান্ত চপিচাপি বললেন—এই পাঁড়োজী আমায় বড় সাহায্য 卒á一 —কি রকম ? —ভদ্রলোক এলে ওর এখানে রাখি, ও আমাকেও মাঝে মাঝে রাত্রে এখানে খাওয়ায়, বেশ খাওয়ায়-দেখলেন তো ? ওরা নিজের কারখানার ঘি মাখন-বাইরে কোথায় এমন পাবেন বলন। রামচন্দ্রজী ওকে আরও দেবেন, বড় সাত্ত্বিক লোক। যে নিজে সাত্ত্বিক সে সবাইকে এমনি সাত্ত্বিক ভাবে। আমরা নিজেরাও তত সাত্ত্বিক নই বলেই বোধ হয় মানষের খারাপ দিকটা আগে দেখে বসে থাকি! শ্ৰীরাম পাঁড়ে সাত্ত্বিক কিনা জানি না—কিন্তু সে বেশ ব্যবসা-বন্ধিওয়ালা লোক বটে। দধি এখানে সস্তা, অথচ দধি চালান দেবার সবিধে নেই। একটা মাখন তোলা কল নিয়ে এই গ্রামকে কেন্দ্র করে বেশ একটা ঘি-মাখনের ব্যবসা গড়ে তুলেছে। এর কারণ আমাদের মতো। ওদের চাকরি-প্রবত্তি নেই-(চোখ ওদের অন্যদিকে বেশ খোলে —-আমরা এসব দেখতে পাইনে। আমরা হলে খািজতাম দ্রবারভাঙ্গার মহারাজের সেন্টটে কোনো চাকুরি যোগাড় করা যায় কাকে ধরাধরি করলে। পরদিন সকালে আমি এদের দািজনের কাছে বিদায় নিয়ে চলে এলাম। এর পরে আর একবার আমাকে বিশেষ কাজে ওদিকে শ্ৰীীরাম পাঁড়ের আতিথ্য গ্রহণ করতে হয়েছিল, তখন সে আরও উন্নতি করেচে—লেখাপড়ার হিসেব ও চিঠিপত্র লেখবার জন্যে একজন গোমস্তা রেখেচে । মোহান্তজীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়েছিল-মাত্র একটি দিনের জন্যে। তখন সামনে কুম্ভমেলার সময়, তিনি প্ৰয়াগে কুম্ভমেলায় যাবার তোেড়জোড় করছিলেন, পাঁড়োজীকে নিয়ে যাবেন সঙ্গে বললেন। আমাকেও তিনি অনরোধ করেছিলেন মেলায় যাবার জন্যে-অবিশ্যি আমার যাওয়া ঘটে নি। তাঁরা গিয়েছিলেন কিনা জানি না।--আর তাঁদের সঙ্গে আমার দেখা হয় নি। এ হল ১৩৩৬ সালের মাঘ মাসের কুম্ভমেলা ; তারপর আর কুম্ভমেলা হয় নি এখনো পয্যন্ত। ১৩৩৭ সালের কথা। পাজার ছটি সেইদিন হল। ভাগলপরে বার লাইব্রেরীতে বসে কথাবাত্তা চলচে বন্ধদের সঙ্গে, ছটিতে কোথায় যাওয়া যায়। আমি বললাম-পায়ে হেটে কোনোদিকে যদি যাওয়া যায়, আমি রাজী আছি। প্রবীণ উকিল অবিনাশবাব বললেন-হোটে যাওয়ার বেশ চমৎকার রাস্তা আছে, চলে যান না দেওঘর। সিনারী খাব ভালো। আমি তখনি যেতে রাজী। একজন মাত্র উকিল-বন্ধ অম্বিকা আমার সঙ্গে যেতে চাইলে। পরদিন সকালে আমরা আমার থাকবার জায়গা থেকে রওনা হলাম খাব ভোরে। তিন-চারজন উৎসাহী বন্ধ ভাগলপার শহর ছাড়িয়ে দেওঘরের পথে প্রথম মাইল পোসন্ট পয্যন্ত আমাদের এগিয়ে দিয়ে গেলেন। অবিকা খাব সম্পৰ্থ-সবল, দীঘাকৃতি যািবক। সে ও আমি দজনেই খব জোরে: হাটছি। সাত আটটা মাইল-পোস্ট পয্যন্ত বেশ জোরে চলে এলাম দজনে। বেলা ܠܬܬ