পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बe । আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। এ প্রস্তাবে। বোধহয় একটা বেশি সহজেই রাজী হয়েছিলাম। রামবাবার বাড়ি গিয়ে, তাঁরা যে প্রবাসী বাঙালী, সেটা ভালো করেই বকলাম ; ছেলেমেয়েরা ভালো বাংলা বলতে পারে না, কিন্তু দেহাতী হিন্দী বলে বিহারীদের, মতই। তাঁদের বাড়িতে যত্ন আদর আমরা পেলম কতকালের আত্মীয়ের মতো, রাত্রে থাকবার জন্যে কত অনরোধ করলেন। আমাদের থাকলে চলে না, যেতে হবে অনেক দার-পায়ে হেটে যাবো বলে বেরিয়ে এত আরাম করবার ইচ্ছে ছিল না মোটেই। একটা জিনিস তাঁদের বাড়ি খেয়েছিলাম, কখনো ভুলতে পারা যাবে না-করমচারী অম্বল। রান্নার। গণে নয়, করমচার অম্পবল জীবনে তার আগেও কখনো খাইনি, তারপরেও না, সেই জন্যে। আমরা আবার যখন পথে উঠলাম, তখন বেলা আড়াইটের কম নয়। শীতের বেলা, ঘণ্টা দই হটবার পরে রোদ একেবারে পড়ে গেল। ডিসিস্ট্রক্ট বোডের রাস্তা সোজা তীরের মতো নাকের সামনে বহন্দরে পয্যন্ত চলে গিয়েচে। দ-ধারে ধন-ধ করাচে জনহীন প্রান্তর, ডাইনে অনেক দরে মারফ পাহাড় নীল মেঘের মতো দেখা যায়। সায্য ক্ৰমে পাহাড়ের পেছনে অস্ত গেল, সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসচে, তখনও রাস্তার দাধারে মাঠ আর মাঠ। অম্বিক দুপুর লোক। তাকে বললাম-কোথায় থাকবো রাত্রে হে? গ্রামের চিহ্ন তো f অম্বিকা কিছ জানে না। সে এদিকে কখনো আসেনি আরও কিছদরে গিয়ে আমবাগানের আড়ালে একটা বস্তি দেখা গেল-কতকগলো খোলার ঘর এক জায়গায় তাল পাকানো, এদেশের ধরনে। ঘোর অপরিস্কার। জিজ্ঞেস করে জানা গেল, বস্তির নাম রজাউন। একজন লোককে বলা গেল এখানে রাত্রে থাকবার কোথাও একটা স্থান হবে কি না ; তারা বললে কাছারি-বাড়িতে দাখানা চারপাই আছে, বিদেশী লোক এলে কাছারি-বাড়িতে থাকে। কাছারি-বাড়ির অবস্থা দেখে আমরা পরস্পরের মাখের দিকে চাইলাম। ঘোড়ার আস্তাবলও এর তুলনায় সবগ। একটা ভাঙ্গা খোলার ঘর, তার চাল পড়েচে ঝলে, বাইরের দাওয়ায় দখানা চারপায়া আছে বটে, কিন্তু তাতে শোওয়া চলে না। ঘরের মধ্যে এত জঞ্জাল যে সেখানে রাত্রিযাপনের চেন্টা করলে সপ্যাঘাত অবশ্যম্ভাবী । আমরা বললাম-আর কোথাও জায়গা নেই ? —না বাবা, নিজেদের তাই থাকবার জায়গা হয় না-গরিব লোকের বাসিত, আপনাদের জায়গা দেবে কোথায় ? পড়ে গেলাম বেজায় মশকিলে। সন্ধ্যা হয়েচে, সপ্তমীর জ্যোৎস্না মাঠ-ঘাট আলোঁ, করেচে, নিকটে আর কোনো বসিতেও দেখা যায় না-এখন কি করি ? একজন আমাদের অবস্থা দেখে বললে-বাব, আপনারা থানায় যান। বস্তির পশ্চিম দিকে আধ মাইলের মধ্যে একটা বাগান দেখবেন, তার ওপারে থানা। সেখানে। থাকবার জায়গা মিলতে পারে। থানা খাঁজে বার করলাম। থানার দারোগা আরা জেলার লোক, মসলমান। তাঁর আতিথ্য আমরা কখনো ভুলবো না। আমরা তাঁকে বললাম, আমরা কিছ খাবো না, শধ একটা আশ্ৰয় চাই। ଈଆ