পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাঙা সিদরের মতো মাটি, কাঁকারের ডাঙা, ছবির মতো একটি ঝরনা ত্রিকািট থেকে বেরিয়ে গ্রামের পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে চলেচে সেই নাবাল জমিটার পশ্চিমপ্রান্ত ঘোষে । ছবিকে সবাঙ্গসদর করবার জন্যেই যেন গ্রামের মধ্যে কয়েককাড় কাঁটা-বাঁশ রাঙামাটির ডাঙার ওপর সাজানো। অম্বিকাকে বললাম-চেয়ে দেখা গ্রামখানার রােপ। এখানটা বাস করার উপযন্ত স্থান। আমার যদি কখনো সবিধে হয়, ঠিক এই মহিষারডি গ্রামে এসে বাস করবো। অম্বিকাও বললে--সত্যি, এটা একটা বিউটি-পট। যদি এত দীর আর এমন বেখাপা জায়গায় না হত-আমিও এখানে বাস করতুম। আমি ভেবে দেখলাম, রেল থেকে এই দীরত্বই (অন্তত বত্ৰিশ মাইল) ওকে আরও সৌন্দয্য দান করেচে। রেলস্টেশনের কাছে হলে এ গ্রাম যেন সাধারণের উচ্ছিন্ট হয়ে পড়তো-এ এখন রপসী, সরলা বন্যবালা-শােভ্র ও অপাপবিদ্ধ। এই দিশাহীন রাঙামাটির মক্ত প্রান্তর, আদরে ওই শৈলচড়া, হাতীর মতো বড় বড় পাথরের আসনগলো। --নাবাল জমিটার ঝরনাটার সৌন্দয্য এ গ্রামকে অদ্ভুত শ্ৰী দান করেচে-অথচ এখানে কলকাতার কোনো লোক এখনও বাড়ি করেনি—কোনোদিন করবেও না-এ গ্রাম এমনি জনবিরল, নিস্তবধ ও শান্ত বন্যপ্রান্তরের মধ্যে চিরদিন নিজের সৌন্দয্য আটটি রেখে চলবে-একথা ভেবেও মনে আনন্দ পেলাম। এই চিন্তার সঙ্গে সঙ্গে মনে একটা গপ্ত-বাসনা অবিশ্যিই থাকে—যদি কখনো সবিধে হয় তবে এখানে বাড়ি করবো। -अभिज्ञ qथाcन कि प्राभ श्द्दश्श ? --জমির দাম ? কি করবেন বাবাসাহেব ? --ধরো, যদি বাস করি ? হরবংশ আনন্দে উৎফল্লা হবে বললে—বাস করন না, জমি কিনতে হবে না। বাবজি। ওই মোড়ের ধারে ভালো জমি আমার নিজের আছে—আপনাকে দিচ্চি। আসন না! যেখানে আপনাদের পছন্দ হবে গাঁয়ের মধ্যে জমি নিন। পনেরো-কুড়ি টাকা বিঘে দরে জমি বিক্ৰী হয়। ওই রাঙা মাটির বড় ডাঙােটা নিন না! বাসের পক্ষে চমৎকার জায়গা। ওটা বাইশ বিঘের ডাঙা—আমি গ্রামের প্রধানকে বলে সস্তায় করে দেবো। দশ টাকা বিঘে দরে ডাঙােটা আমি আপনাকে করে দিতে পারি। পড়েই তো রয়েচে আমার জন্ম থেকে। দশ টাকা বিঘে পেলে বত্তে যাবে। মহিষারডি থেকে পরদিন সকালে বেরিয়ে পড়লাম। যাবার সময় বার বার মনে করলাম, যদি কখনো সবিধে হয়, আর একবার এই সন্দির গ্রামখানিতে ফিরে আসবো। অবিশ্যি এখনও পয্যন্ত সে কল্পনা কায্যে পরিণত হয়নি।--কিন্তু মাঝে মাঝে প্রায়ই মনে হয়। গ্রামখানির কথা। গত বৎসর বড়দিনের পরে কায্যোপলক্ষে একবার দেওঘর যেতে হয়েছিল, কতবার ভেবেছিলাম লছমীপরের পথে গিয়ে একবার মহিষারডি গ্রামে হরবংশ গোপের সঙ্গে দেখা করে আসি, আবার ওদের রাঙামাটির সেই হাতীর মতো বড় পাথরখানার ওপর বসে আসি । কিন্তু মানষের সব ইচ্ছা সব সময় পণ্য হয়। কাই! মোহনপার ডাকবাংলোয় আমরা পৌছে গেলাম বেলা দশটার মধ্যে। এই স্থানটিও খব সন্দর-ত্রিকট-শৈলের পাদদেশে ডাকবাংলোটি অবস্থিত, দেওঘর থেকে বাউসি দিয়ে যে রাস্তা গেছে, তারই ধারে। আমরা সেখানে বেশিক্ষণ ছিলাম না। ঘণ্টা দই বিশ্রাম করে বেলা দলটাের সময় NSO V