পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বসিত পৰ্যন্ত নেই। এমন জানলে বিলাসপার থেকে কিছ খাবার কিনে আনতাম । সেন্টশন-মাস্টারকে জিজ্ঞেস করবো ? কোনো দোকান না থাকলে ওরাই বা খাবার কোথা থেকে আনায়! কিন্তু জিজ্ঞেস করতে কেমন বাধো-বাধো ঠেকতে লাগলো। ভাবলাম লোকটা মনে করতে পারে হয়তো তার বাড়িতেই আমি খেতে চাইচি। না, এ প্রশান ওকে করা হবে না। বেলা চারটে। তখন আমি সত্যিই দাশিচন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েচি। যদি লোক না-ই আসে। তবেই বা কি করবো ? সেন্টশনের দেওয়াল-সংলগ্ন টাইমটেবিল দেখে বাঝলাম রাত সাড়ে সাতটায় বিলাসপারে ফিরে যাবার আর একখানা ডাউনট্রেন আছে —তাতেই ফিরে যাবো বিলাসপারে এবং সেখানে থেকে কলকাতায়। পয়সা খরচ করে এত দরে অনর্থকই এলাম। এখানে বসে থেকেও তো আর পারিনে। সেই বেলা নটা থেকে আর বেলা চারটে পয্যন্ত না খেয়েদেয়ে ঠােয় একখানা বেশিgর ওপর বসে আছি, সেন্টশনটা মখস্থ হয়ে গেল ; এর কোথায় কি আছে আমি যতকাল বোচে থাকবো, ততকাল নিখত ভাবে মনে থাকবে এমন গভীর ভাবে এর ছবি আৗকা হয়ে গিয়েচে আমার মনে। অথচ বান্টি মাঝে মাঝে থামলেও একেবারে নিন্দোষ হয়ে থেমে যায়নি। এই সময় সেন্টশন-মাস্টারটি স্টেশন ঘর থেকে বেরিয়ে আবার নিজের বাসায় ফিরে, চললো। যাবার সময় পােনরায় আমার দিকে কোঁতাহলের দন্টিতে চেয়ে চেয়ে গেল ; একবার জিজ্ঞাসাও করে না যে আমি কে, কেন এখানে সেই সকাল থেকে বসে আছি দারব্রহ্মের মতো অচল অবস্থায়—বেশ লোক যাহোক! সেন্টশন আবার জনহীন। একে মেঘালধকার দিন, তায় হেমন্তের ছোট বেলা, এরই মধ্যে যেন বেশ বেলা পড়ে আসে-আসে হল, মনে হতে লাগলো সন্ধ্যা হবার আর বেশি দেরি নেই। কি করা যায়। এ অবস্থায় ? রাত্রি কাটাতে হলে যতদর বাঝাঁচি, স্টেশন-মাস্টারের সেন্টশনের ঘরখানার মধ্যে আমায় জায়গা দেবে না, এই বাইরের বেঞ্চিখানাতেই আমায় শয়ে থাকতে হবে। এমন সময়ে দরে বাজনা-বান্দ্যির শব্দ শোনা গেল। চেয়ে দেখি একদল লোক বাজনা বাজিয়ে স্টেশনের দিকে আসচে। কাছে এলে দেখলাম তারা বরযাত্রী, দশবারো বছরের একটি বালক বরসাজে ডলি চেপে এসেচে। ওদের সঙ্গে। আশিবন। মাসে বিবাহ কি রকম ? এদেশে বোধহয় হয়ে থাকে। ওদের মধ্যে তিন-চারজন লোক এসে আমার বেড়িতে বসলো। নিজেদের মধ্যে ওরা খাব গলপ-গজব হল্লা করচে, একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম-কেউ কোনো-রকম ধর্মপান করচে না। পরের পয়সায় ধর্মপান করবার এমন সংযোগ যখন বরযাত্রী হয়ে এরা ছেড়ে দিচ্চে তখন মনে হল ধর্মপানের প্রথা এদেশে কম। পরে জেনেছিলাম, আমার অনমানের মধ্যে অনেকখানি সত্যতা আছে। কাঁচা শালপাতা জড়ানো পিক ছাড়া এদেশে বিদেশী চুরািট বা সিগারেটের চলন খািব কম। একজন আমার দিকে চেয়ে হিন্দিতে বললে, বাবা, কোথায় যাবেন ? বাবা! এতক্ষণ পরে মানষের সঙ্গে কথা বলে বাঁচলাম। প্রাণ হাঁপিয়ে উঠেছিল। কথা না বলে। বললাম, দারকেশা যাবো সে বিস্ময়ের সঙ্গে আমার দিকে চেয়ে বললে, দারকেশা! আপনি কোন, গাড়িতে নেবেচোন ? কোথা থেকে আসচেন ? —সকালের গাড়িতে। কলকাতা থেকে আসচিSASqLBD BDD DB DBLDD L SSR