পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সকালে উঠে আমাকে তিনি গালার কারখানায় নিয়ে গিলেন। বড় বড় মাটির গামলায় বোধহয় গালা ভিজানো আছে, চামড়ার কারখানার মতো ভীষণ দগন্ধ, আর ভারি অপিস্কার সমস্ত জায়গাটা। খাব বড় খোলার ঘর, লম্বা ধরনের। যে গদামটাতে রাত্রে ছিলাম, ঠিক তেমনি ধরনের কুলি-ধাওড়ার মতো সেই ঘরটা। বললাম-গালা কোথা থেকে কেনেন ? —জংলা গালা গোঁড় মেয়েরা বিক্ৰী করতে আসে, তাই কিনি। এখানে আরও দটাে কারখানা আছে মারোয়াড়ীদের। —কি রকম আয় হয়। কারখানা থেকে, যদি কিছ মনে না করেন ? —মনে করবো কেন বলন। তা মাসে গড়ে শ-দেড়েক টাকা দাঁড়ায়, খরচ-খরচা সব পষিয়ে। তবে আরও বাড়াতুম, কিন্তু কাজে মন লাগচে না মশাই। নিতান্ত খারাপ আয় নয়, একজন বাঙালী ভদ্রলোক এতদরে এসে সবাধীন ব্যবসা চালাচ্চেন মারোয়াড়ী বণিকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে, কেরানীগিরি না করে। এতে আনন্দ হবার কথা বটে। আমি তাঁকে বোঝালম অনেক, নিরৎসাহ হওয়ার কারণ নেই, সব ঠিক হয়ে যাবে, তিনি ব্যবসা যেন না ছাড়েন। সকালে চা খেয়ে ওঁদের কাছে বিদায় নিলাম। ভদ্রলোক আমার সঙ্গে কিছদর পয্যন্ত এলেন। দ-তিনবার আমায় জিজ্ঞাসা করলেন-আমি কলকাতায় ফিরে সব ভুলে যাবো না তো ? বিশেষ করে তাঁর বিষয়টা। আরও বললেন-যাবার সময় এই পথেই তো ফিরবেন, আমার সঙ্গে না দেখা করে ४यन्म दाGद०N क्रा ! বললাম-নিশ্চয়ই, এ পথে ফিরবার সময় মায়ের হাতের রান্না না খেয়ে কি যাবো V9030 P -ও কথাটা তাহলে-- -হ্যাঁ হ্যাঁ, সে আমার মনে রইল। বিশেষ চেন্টা করবো জানবেন। বন্ধর পথের বাঁকে আমার ঘোড়া ও লোকজন অদশ্য হয়ে যাওয়া পয্যন্ত ভদ্রলোক চোরামািখ বস্তির শেষপ্রান্তে একটা গাছের তলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, পিছন ফিরে দ-একবার রােমালও উড়িয়েচি। ফিরবার সময়ে এপথে ফিরিনি, ভদ্রলোকের সঙ্গে আর দেখাও হয়নি। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করি, দেশে ফিরে ভদ্রলোকের বিবাহের জন্য আমি দ-তিন জায়গায় মেয়ে সন্ধান করেছিলাম-আমার সবগ্রামস্থ এক প্রতিবেশীর বিবাহযোগ্যা কন্যা ছিল, তাদের কাছেও কথা পেড়েছিলাম। ভদ্রলোকের ঠিকানা দিয়ে পত্র ব্যবহার করবার অন্যুরোধও করি। কিন্তু যে কটি পাত্রীর সন্ধান করেছিলাম, তাদের অভিভাবকদের মধ্যে কেউই অত দীর বলে জঙ্গলের দেশে মেয়ের বিবাহ দিতে রাজী হননি। আমার সবগ্রামের পাত্ৰীটির বাপ একরকম রাজী হয়েছিলেন। কারণ তাঁর অবস্থা তত ভালো ছিল না, কিন্তু মেয়ের মা ভয়ানক আপত্তি তোলেন। আমায় ডাকিয়ে বললেন, অমন সীতা-নিব্বাসনে কে মেয়ে দেবে বাপ ? আমার মেয়ে তো ফেলনা নয়, সেখানে গিয়ে কথা বলবার লোক পাবে না, হাঁপিয়ে উঠবে। যাক সে কথা। চোরামাখ ছাড়িয়ে বেলা দশটার সময় আমরা পৌছে গেলাম সালকোপডা বলে একটা ছোট গাঁয়ে। রাস্তার ধারেই একটা চুনের ভাঁটি আছে, আশেপাশে অনেকগলো বড় ছোট চুনের ভটি। এখানে অনেকগলি গোঁড় কুলি কাজ করে, তাদের জন্য বড় বড় কুলি ধাওড়া খান পাঁচ-ছয় ভাঁটির আশেপাশে ছড়ানো। জায়গাটার ܬܠܬܠܬ