পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশ্য বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে। চারিধারে বড় বড় শাল ও ভেলা গাছ, মাঝে মাঝে ধাতুপ ফলের ঝোপমতো গাছ-একদিকে তো ধাতুপ ফলেরই বেড়া। শাল গাছের ফাঁক দিয়ে একটা পকুর দেখা যাচ্চে কিছ দরে। দীর ও নিকটে শৈলশ্রেণী, প্রকৃতপক্ষে স্থানটির চারিধার ঘিরেই শৈলমালা, মধ্যে যেন একটি বড় উপত্যকা । এই অঞ্চলের সব বন পাহাড় ও গ্রাম ছত্তিশগড়ি পরগনার মধ্যে পড়ে। পকেব। এই দিকের সব স্থান মারহাট্টা সাম্রাজ্যের অন্তভুক্ত ছিল, এখনও অনেক ছত্তিশগড়ি মারহাট্টা পরিবার এই সব গ্রামের অধিবাসী। তবে সস্থানীয় আদিম অধিবাসী গোঁড়দের সংমিশ্রণে এদের অনেক পরিবত্তন হয়েছে, অনেক জায়গায় উভয় জাতির আচার ব্যবহার উভয়ের মধ্যে বিস্তৃতি-লাভ করেচে, বিশেষ করে এই সব দগম বন্য-অর্ণ8লে । চুনের ভাঁটির গদিতে বসে কাজ করচেন। জনৈক মারাঠী ভদ্রলোক। তাঁর চেহারা ও পোশাক-পরিচ্ছদ, মাথার মরাঠা সবই আমার চোখে অদ্ভূত লাগলো! আমি তাঁর দিকে চেয়ে আছি দেখে তিনি উঠে এলেন আমার কাছে। হিন্দীতে বললেন-আপনি কোথা থেকে আসচোন ? আমি পরিচয় দিতে তিনি যথেস্ট বিনয়ের সঙ্গে বললেনআসন, আমার গদিতে একটি বসন। গিয়ে বসলাম তাঁর সঙ্গে। ভদ্রলোকের চেহারা এমনি যে বার বার চেয়ে দেখতে ইচ্ছে হয় ; সন্দির বলে ততটা নয়, যতটা কিনা আমার চোখে অপরিচিত সাজপোশাক ও মাখের গড়নের জন্যে। আমায় বললেন--আজি আমার ওখানে দয়া করে থাকতে হবে। আমার বন্ধ অনেক বাঙালী আছেন, আমি বাঙালীদের বড় ভালবাসি। আমি বিশদ্বাস করি ভারতবষের জাতীয় জাগরণের মলে রয়েচে বাঙালী। এই সম্পকে তিনি সরেন্দ্রনাথ ও চিত্তরঞ্জনের নাম উল্লেখ করলেন বার বার অত্যন্ত সশ্রদ্ধ ভাবে। বাংলাদেশ থেকে বহন্দরে ছত্তিশগড়ির শৈলারণ্যবেন্টিত ক্ষদ্র এক গ্রামে এক চুনের ভাঁটিতে বসে আমার মুহূমুত্র দুজন সসন্তানের নাম উচ্চারিত হতে শনে গব্দে আনন্দে আমার ব্যাক उ26द्र ভদ্রলোক নিজের পরিচয় দিলেন। নাম বালকৃষ্ণ ব্ৰক্ষািবক, রংড়ে ব্রাহ্মণ, বাড়ি খাণ্ডেডায়া নাগপরের ওদিকে। এখানে এই চুনাপাথরের খনি ইজারা নিয়ে ভাঁটিতে চুন পড়িয়ে মোটর লরি করে এগারো ক্লোশ দরবত্তীর্ণ রেলওয়ে সেন্টশনে চালান দেন। আমি যে পথে এসেচি, ও পথে বা সেন্টশনে নয়, কারণ ওটা মোটর গাড়ি চলাচলের উপযক্ত রাস্তা নয়। বালকৃষ্ণ ব্র্যািম্পবাক আমাকে তাঁর বাসায় নিয়ে গেলেন। তাঁর সত্ৰী, দাই মেয়ে ও একটি দশ বৎসরের ছেলে থাকে বাসায়। সকলেই আমার সামনে বার হলেন বটে, মেয়েরা কিন্তু কথা কেউই বললেন না। গহস্বামী জিজ্ঞেস করলেন-আপনি স্নান করন। জল তুলে দেবে, না পাকুরে शैदन ? —পকুরের জল ভালো ? --খব ভালো, এমন জল কোথাও দেখবেন না। সত্যিই শালবনের মধ্যে পাকুরটিতে স্নান করে খাব আরাম হল। আজ মেঘ মোটেই নেই আকাশে, বেশ রৌদ্র চড়েচে, এতখানি ঘোড়ায় চড়ে এসে গরম বোধ হচ্ছিল দস্তুরমত। তা ছাড়া চালবিহীন ঘোড়ায় চড়ার দরবন পেটে খিল ধরে গিয়েচে । বালকৃষ্ণজী বললেন—আমরা কিন্তু মাছমাংস খাইনে বাবাজী-আপনার বড় Na RO