পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩১

অসবিধে হবে খেতে। আমি শশব্যস্ত হয়ে বললাম-কি যে বলেন!! তাতে হয়েচে কি ? আমি মাছমাংসের ভক্ত নই তত।। খাবার জিনিস অতি পরিপাটী। ‘তুপ” অর্থাৎ ঘিয়ে ডোবানো মোটা আটার রটি, কুমড়োর ছোঁকা, পাঁপর, ছোলার ডাল, চাটনি ও মহিষের দধের দই। বালকৃষ্ণ ত্ৰ্যিম্পবাক একা আহার করলেন আমার মতো সাতজনের সমান। সেই মোটা রাটি আমি চারখানার বেশি। ওঁদের অত্যন্ত অনরোধ সত্ত্বেও খেতে পারলাম না, উনি খেলেন কমসে কম ষোলখানি। সেই অনপাতে ডাল-তরকারি ও দইও টানলেন। আহারাদির পর তাঁকে বললাম—এদেশে অন্য কি ব্যবসা সবিধে ? —আপনি যেখানে যাচ্চেন, ওদিকে জঙ্গল বেশি, অনেকে জঙ্গল ইজারা নিয়ে কাঠ বিকি করে। —কোনো বাঙালীকে ব্যবসা করতে দেখেচেন এদিকে ? —একজন আছেন, তাঁর নাম আমি জানিনে, আমর-কণাটকের কাছে অনেক বন DD BDBB DB BB BDD BDBBD DDD বন কোথাও কেটে ফেলেচে, একথা আমার ভালো লাগে না। অথের জন্যে প্রকৃতির হাতে সাজানো আমন সৌন্দয্যভূমি বিনন্ট করা বব্বরতা ছাড়া আর কিছ না। এমন একদিন আসবে যেদিন লোকে এ ভুল বঝতে পারবে, কিন্তু অরণ্য-সৌন্দয্য তখন পথিবীতে কোথাও অবশিস্ট থাকবে কিনা কে জানে ? এখান থেকে দারকেশা মাত্র দশ মাইল। সন্ধ্যার মধ্যে সেখানে পৌছনো যাবে। আমি আমার সঙ্গীদের বললাম, কাগি রোড থেকে মোটে বত্ৰিশ মাইল শকুনেছিলাম দারকেশা, এ তো তার অনেক বেশি হয়ে গেল ওরা বললে—বাব, চল্লিশ মাইলের ওপর ছাড়া কম হবে না, তবও আপনাকে আমরা খানিকটা সোজা পথ দিয়ে এনেচি। আসল পথটা ঘরানো, কিন্তু এর চেয়ে 9(6ता । সালকোন্ডা। চুনের ভাঁটি ছাড়িয়ে জমি ক্রমশ নীচু হয়ে গেল। যখনই এমন হয় তখনই আমি জানি এবার নিশ্চয়ই কোনো নদী আছে সামনে । হলও তাই, একটা খরস্রোতা পাহাড়ী নদী পড়লো সামনে, তার নামও সালকোণ ডা। নদীর ওপরে কাঠের গাড়ি ফেলে দিয়ে পল তৈরি করা, তার ওপর দিয়ে ঘোড়া যাবে না, অথচ নদীর বেগ দেখে মনে হল, না জানি গভীরতাই বা কতটা! ঘোড়া নামিয়ে দিলাম। দেখি ক্রমশ জল বাড়চে, ক্ৰমে আমার এমন অবস্থা হল রেকব থেকে পা তুলে পা দখানা মড়ে জিনের দােপাশে নিয়ে এলাম, তখনও জল বাড়চে। পাকবত্য নদীতে বন্টি নামলেই আর দেখতে হবে না কোথা থেকে যে জল বাড়বে! জিনে পৰ্য্যন্ত জল ঠেকিয়ে তখন ঘোড়া দেখি আর একটি উচু জায়গায় পা পেলে। ডাঙায় উঠে এমন গা-ঝাড়া দিয়ে উঠলো বনো ঘোড়াটা যে আমায় সম্পািধ, জিনসদ্ধ ফেলে দিয়েছিল। আর কি। যে ঘোড়ার চাল থাকে না, সে ঘোড়ার আদবকায়দা কখনই সমাডিজত ও ভদ্রতাসঙ্গত হয় না। এ আমি বহদিন থেকে দেখে আসাঁচ । এই দশ মাইলের শোভা কিছই নেই, তবে এক চক্রবাল থেকে অন্য চক্রবাল পয্যন্ত বিস্তীর্ণ উচুনীচু মরম-কাঁকরের ডাঙার যদি কারোর কাছে মাল্য থাকে, সে হিসেবে এ অঞ্চলের তুলনা নেই। S RS