পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার সঙ্গে চার-পাঁচজন অমর-কণাটকের যাত্রী ছিল, তারাও আমাকে পথ ছেড়ে অরণ্যের অভ্যন্তর প্রদেশে ঢািকতে দেয়নি। মাঝে মাঝে ছোট ছোট গ্রাম পড়ে। গ্রামে ছোট মদীর দোকান, সেখানে সিজার সিগারেট পয্যন্ত পাওয়া যায়। আর পাওয়া যায় আটা, ডাল, ভেলিগড়, নন, মোটা চাল। বিভিন্ন মিশন সোসাইটি এইসব বন্য-পল্লীতে স্কুল বসিয়ে গোঁড়দের শিক্ষাদানে যথেস্ট সাহায্য করচে। খ্রীস্টধৰ্ম্মমাবলম্পবী লোকের সংখ্যা কোনো কোনো গ্রামে নিতান্ত कभ व् । রান্না চড়াতুম। আমাদের দলের পাচক ছিল মান্দার বলে একটি ছোকরা। সে মাধোলালের বাড়িতে প্রতিপালিত হয়েছিল ছেলেবেলায়, এখন কাঠের মিস্ত্রির কাজ করে। যদিও সে একজন দস্তুরমত ভবঘরে, কোথাও বেশিদিন থাকা তার ধাতে নাকি একেবারেই সয় না। আমি বলতুম—আজ কি রান্না হবে মান্দার ? -आी आबू लाव्ल। -আর কি রাঁধতে জানো ? —আর আলর চোখা। দবেলা এই একই রান্না, নতুনত্ব নেই। আটার হাতে-গড়া র.টি. অড়রের ডাল আর আলর চোখা। এমন বিচিত্র রান্না জীবনে কখনো খাইনি। এমন ঘোর আনাড়ি ও প্রতিভাবিহীন রাঁধনীও সহজে খাঁজে মিলবে না। এতদিন হাতে-কলমে রান্নার কাজ করা সত্ত্বেও মান্দার এতটকু উন্নতি করতে পারেনি ও কাজে, কোনদিন পারবেও না । বনের মধ্যে যে-কটি অদ্ভুত দিন কেটেছিল, তার কথা জীবনে কখনো ভুলব না। প্রদেশের এইসব বনে যথেষ্ট হিংস্র জন্তুর বাস বটে-কিন্তু আমরা কোনদিন কিছর দেখিনি। আমার একজন সঙ্গী এক রাত্রে বললে, সে নাকি বাইসন দেখেচে-কিন্তু তার কথা আমার বিশবাস হয়নি। প্রথমে তো, বাইসন মাদ্রাজ অঞ্চলে ছাড়া ভারতের অন্য কোনো বনে দেখা যায় না। মধ্যপ্রদেশে 'গৌর' বা ‘গায়ের’ বলে যে মহিষজাতীয় জন্তু আছে তাকে অনেকে ইন্ডিয়ান বাইসন’ বলেন বটে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের বনে 'গৌর' প্রায় নিব্বাংশ হয়ে এসেচে। শিকারীরা বনবাদােড় ঠেঙিয়েও তার সন্ধান পান খবই কম। দ্বিতীয় কথা, এই বন্য জন্তু অত্যন্ত হাশিয়ার, মানষের সাড়াশব্দ তারা অনেক দীর থেকে পায় এবং সে জায়গার ত্ৰিসীমানায় ঘেষে না। তবে শেয়াল প্রায়ই দেখা যেতো—আর দেখতুম ময়র ; প্রায়ই ময়র ডাল থেকে উড়ে বসত। পথের ওপর। ময়র ছাড়া আরও অনেক পাখী ছিল সে বনে ; দােপরে যখন গাছতলায় একটা বিশ্রাম করতুম, তখন বিহঙ্গ-কাকলী আমাদের পথশ্রান্তি দর <Sट्रt@ा । এই রকম বেড়াবার একটা নেশা আছে-বড় ভয়ানক নেশা সেটি। তা মানষেকে ঘরছাড়া করে ভবঘরে বানিয়ে দেয়। আমরা যে কজন বনের পথে চলেচি, সকলেই প্রাণে প্ৰাণে অনভব করছিলাম। সেই অদ্ভুত ও তীব্র আনন্দ, শািন্ধ মন্ত জীবনেই যার দেখা মেলে। আমরা সাধারণতঃ রাত্রে কোনো একটা গ্রামে আশ্রয় নিতুম, সকাল হলে হাঁটা শর করে দাপরের মধ্যে দশ-বারো মাইল কি পনেরো মাইল পার হয়ে যেতুম। এই SSRq