পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেদিনকার প্রভাতের নবীন আলোয় মািখ চিনোEBlaise” কারা তা ভাববার অবকাশ মাত্ৰ পাইনি-সোজা চলেছিলাম দাই বন্ধতে পথ বেয়ে ঘর থেকে বার হবার আনন্দে বিভোর হয়ে। হঠাৎ একটা গ্রামের পথে উপস্থিত হয়ে গিয়েচি, কোন সময়, খেয়াল করিনিসে পথের একদিকে খাব উচু। লম্বা একটা পাঁচল। একজন লোক পথ দিয়ে যাচ্ছিল, তাকে জিগ্যেস করতে সে বললে, ওটা চাঁদমারির পচিল । -কোথায় চাঁদমারি ? -পাশেই মশাই। সোলজারেরা বন্দক প্র্যাকটিস -ববেচি-ত্যা এখন কারচো না তো ? -করলেই বা কি। পাঁচিল তো দিয়ে রেখেচে । -नाभन ९aा कि १ाँ ? -निभCऊ। কিন্তু নিমতে গ্রামে ঢাকবার পর্বে একটা বাঁশবাগান দেখে বড় ভালো লাগলো। খব বড় বাঁশবন, অজস্ৰ শকিনো বাঁশপাতা ছড়িয়ে আছে-পা দিয়ে মচকে যাবার সময় কেমন সদর শব্দ হয়, শকিনো পায়ে-দলা বাঁশ পাতার গন্ধ বার হয়, মাথার উপর পাখী। ডাকে, সায্য আলোছায়ার জাল বোনে বাঁশগাছের ডালে, পাতায়, তালাকার মাটির ওপর। সেই বাঁশবনে একরকমের গাছ দেখলাম। শািন্ধই একটা লম্পাবা ডাঁটা। তার আগার একটা আফোটা বড় কুড়ির মতো ব্যাপারের মধ্যে অনেকগলি ছোট মটরের মতো দানা। গাছের গায়ে হাত দিলে হাত চলকোয়। কি ভালোই লেগেছিল। সেই গাছগলো সেদিন ! বাশবনের ছায়ায় বনকচু-জাতীয় উদ্ভিদ যেন অমতফল প্রসব করেচে। ছায়া ঘন হয়ে আসচে-বিকেল নেমেচে । বাঁশবন পার হয়ে একটা মাঠে আমরা বসলাম। বন্যফল ও অন্যান্য লতাপাতার ঝোপ মাঠের ধারে সব্বত্র। ঝোপের মাথায় মাথায় লতাপাতায় আলোকলতার জাল। দরে দ্য একটা পরনো কোঠাবাড়ি দেখা গেল। একটা বাড়ির ছাদে একটি পল্লীবধ চুল শিকোতে বসেচে। গ্রামের ছেলেমেয়েরা সামনের মাঠে হা-ডু-ডু খেলচে। মাঠ থেকে উঠে নিমতে গ্রামের শেষপ্রান্তে গিয়ে পৌছলাম। আমরা। সেখানে মচি বাউরিরা বাস করে, তাদের একটা ছোট পাড়া। কিন্তু এরা সকলেই নিকটবত্তীর্ণ কলে কাজ করে, শহর এসেচে। গ্রামের পাশে, শহরের সভ্যতা ও জীবনযাত্রাপ্ৰণালী গ্রামের শান্ত গাহকোণে এনে দিয়েচে ব্যস্ততা কোলাহল ও শৌখিনতার মোহ। একজন বললে-কাছেই পাষাণকালী মন্দির, দেখবেন না ? নিমতের পাষাণ কালী জাগ্ৰত দেবতা।--ছোট মন্দিরের মধ্যে বিগ্রহটি ভাল চোখে পড়ে না, বড় অন্ধকার রটাতে। মন্দিরের সামনে একটা পানােভরা পাকুর। পকুরের ওপারে বাউরিদের ঘাটে বাউরিদের ঝি-বৌয়েরা জল নিতে নেমেচে । কিছদ্মক্ষণ বাঁধা ঘাটে বসে থাকবার পরে একটি ছোট ছেলে এসে বলল-বাবা আপনাদের ডাকচোন--আসন আপনারা আমরা একটা আশচযা হয়ে এগিয়ে গেলাম। ইটের দেওয়াল দেওয়া একখানি খড়ের ঘর। দারিদ্র্যের ছায়া সে বাড়ির সারা অঙ্গে। বাড়ির মালিক হলেন ওই পাষাণকালীর পাজারী-তিনিই আমাদের ডেকেচোন তাঁর ছেলেকে পাঠিয়ে। অনেক দিনের কথা। পাজারী ঠাকুরের বয়েস বা চেহারা আমার মনে নেই। তিনি জিজ্ঞেস করলেন-আপনারা কোথা থেকে আসচোন ?