পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-বাব, সবাই শিকারী নয় তো, বাঘ শিকার করা সহজ নয়। যখন বন্ড উৎপাত হয়, তখন অন্য জায়গা থেকে শিকারী ডেকে আনতে হয়। --তীরন্ধনক দিয়ে বাঘ শিকার করে ? -চিরকাল তাই হয়ে এসেচে, যখন কিছতেই না পারা যায়, তখন বন্দকওয়ালা সাহেব শিকারীকে আনাতে হয়। তাও একবার এমনি হল, সাহেব শিকার করতে গিয়ে বাঘের হাতে জখম হল, শহরের দাওয়াইখানায় নিয়ে যেতে যেতে পথেই মারা পড়লো। -বড় সাপ দেখেচ কখনো ? আছে। এ বনে ? -বড় ময়াল সাপ আছে, তবে তাদের বড় একটা দেখা যায় না, পাহাড়ের গহায় কিংবা গাছের খোড়লে লকিয়ে থাকে। একবার আমি একটা দেখেছিলাম। অনেকদিন আগের কথা, তখন আমার জোয়ান বয়স, পাহাড়ের ধারে ছাগল চরাতে গিয়েচি এমন সময় একটা ছাগল হঠাৎ ব্যা ব্যা করে ডাকতে লাগলো কোন দিক থেকে ! অনেক ছাগল এদিকে-ওদিকে মাঠের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েচে, প্রথমটা তো বঝতে পারিনি (कथा (यक ७ाक यात्र 一可颈P函? —তারপর দেখি এক জায়গায় একটা বাবলা গাছ আছে, তার তলায় সামান্য একটি জায়গায় লম্বা ঘাসের বন, সে বনটার মধ্যে থেকে ছাগলের ডাক আসচে। ব্যাপার কি দেখতে গেলাম। গিয়ে দেখি এক ভীষণ অজগর সাপ ছাগলটার পেছন দিকের দাখানা ঠ্যাং একেবারে গিলে ফেলেচে। বাবলা গাছের গাড়িতে সাপটা জড়িয়ে ছিল, একবার একটা একটা করে পাক খালচে। তখন আমি ছাগলের সামনের পা ধরে টানাটানি আরম্ভ করতেই সাপটা আর পাক না খালে গাছের গাড়ি এমন জড়িয়ে এটে ধরলে যে আমি জোর করেও ছাগলকে ছাড়িয়ে নিতে পারিনে। ময়াল সাপের গায়ে ভীষণ জোর। তখন গ্রাম থেকে লোক ডেকে নিয়ে গিয়ে সাপটা মেরে ফেলি। দামন্ডি ছাড়িয়ে মাইল দশেক হোটে আমি অমর-কণাটক রোড স্টেশনে এসে ট্রেন ধরে কলকাতায় ফিরলাম। ১৯৩৩ সালে খবরের কাগজে বার হল যে উড়িষ্যার অন্তগত সম্পবেলপার জেলার বিক্ৰমখোল নামক সস্থানে ঘন অরণ্যের মধ্যে একটা পাহাড়ের গায়ে প্রাগৈতিহাসিক যাগের শিলালিপি আবিস্কৃত হয়েচে। অনেক লোক দেখতে যাচ্চে এবং সস্থানীয় পলিসে লোকজন যাবার অনেক সবিধে করে দিয়েচে । এ-কথাও কাগজে বেরিয়েছিল, স্থানীয় প্রাকৃতিক দশ্যে বড় সন্দর এবং হরিণ, বনমোরগ, সম্পবির প্রভৃতি বন্যজন্তু যথেষ্ট পাওয়া যায়। বন্ধবের শ্ৰীযক্ত সজনীকান্ত দাস তখন “বঙ্গশ্ৰী’র সম্পাদক। সজনীবাব আমাকে “বঙ্গশ্ৰী'র তরফ থেকে বিক্রমখোল পাঠাতে সম্মত হলেন-সঙ্গে যাবেন "বঙ্গশ্ৰী’র তৎকালীন সহকারী সম্পাদক শ্ৰীযক্ত কিরণকুমার রায় ও ফটোগ্রাফার হিসাবে বন্ধবের শ্ৰীযক্ত পরিমল গোস্বামী। খ্যাতনামা ব্যারিস্টার শ্ৰীযক্ত নীরদরঞ্জন দাসগঞ্জের মধ্যম ভ্ৰাতা প্রমোদরঞ্জনও আমাদের সহযাত্রী হবেন ঠিক হল। ৩রা মাচ্চ শক্রবার আমরা সেন্টশন থেকে নাগপাের প্যাসেঞ্জারে রওনা হবো ধায্য ছিল। এদিন বেলা তিনটের সময় আমি “বঙ্গশ্ৰী” আপিসে গিয়ে কিরণ ও পরিমলবাবকে তাগাদা দিলাম। পরিমলবাবা ক্যামেরা ও জিনিসপত্র নিয়ে সেখানে আমার অপেক্ষাতেই বসে ছিলেন। আমি বললাম-আপনারা রওনা হয়ে যাবেন সাতটার সময়ে, হাওড়া সেন্টশনে বি, এন, আর-এর ইণ্টার ক্লাস টিকিটঘরের সামনে দাঁড়িয়ে SVO