পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাবো। আমাদের এত আনন্দ হয়েচে যে, কত রাত পয্যন্ত জ্যোৎস্নালোকে বসে আমরা গলপ করলাম। রাত দশটার সময় আহারাদি শেষ হয়ে গেল-কিন্তু ঘাম আর थ6न का दादा (1962 । পরদিন সকালে আমরা বিক্রমখোলা রওনা হই। আমাদের সঙ্গে রইল গ্রাম্য পাটোয়ারী ও দজন ফরেস্ট গার্ড—একখানা গোেরর গাড়িতে আমাদের জিনিসপত্র চললো, কিন্তু আমরা পায়ে হেটে যাওয়াই পছন্দ করলাম। জিজ্ঞেস করে জেনেছিলম বিক্রমখোল এখান থেকে প্রায় তেরো মাইল। বেলপাহাড় থেকে বিক্রমখোল পয্যন্ত এই পথের প্রাকৃতিক সৌন্দয্য আমার মনে চিরকালের ছবি একে রেখে দিয়েচে। কতবার অবকাশমাহতে সাবপেইেনর মতো মনে হয়। সেই নদী-পব্বত-অরণ্য-সমাকুল নিজজন বন্যপথটির সমিতি। প্রথম বসন্তে ফটেন্ত পলাশবনের শোভা ও রাঙা ধাতুপ ফলের সমারোহ সারাপথে, মাঝে মাঝে পাহাড়ী নদীর খাত বেয়ে বিরঝির করে জল চলেচে পাথরের নড়ির রাশির ওপর দিয়ে। এক জায়গায় বড় বড় গাছের ছায়া। সামনে একটি পাহাড়ী নদীর কাঠের পালের ওপর ঘাসের চাপড়া বিছিয়ে দিচ্চে। ঝরনার দাধারে পাহাড়ী করবীর গাছ ফলের ভারে জলের ওপর নিয়ে আছে। প্রমোদবাবা প্রস্তাব করলেন, এখানে একট চা সেরে নেওয়া যাক বসে । কিরণ বললে--চা খাওয়ার উপযন্ত জায়গা বটে। বসন সবাই। আমাদের সঙ্গে ফ্ল্যাসোক চা ছিল, আর ছিল মাম্পমালোড আর পাউরটি। মাম্পমালেডের টিনটাি এই প্রথম খোলা হল। প্রমোদ ও পরিমল রাটি কেটে বেশ করে মাম্পম্যালেডি মাখিয়ে সকলকে দিলে—কিরণ চা দিল সবাইকে টিনের কাপে। কিছদ্মক্ষণ পরে কিরণ রাটি মাখে দিয়ে বললে—এত তেতো কেন ? এঃ-- আমিও রাটি মাখে দিয়ে সেই কথাই বললাম। ব্যাপার কি ? শেষে দেখা গোল মাম্পমালোডটাই তেতো। মাম্পমালোড নাকি তেতো হয়, পরিমল বললে। কি জানি বাপ, চিরকাল পড়ে এসেচি মাম্পম্যালেডি মানে মোরব্বা, সে যে আবার তেতো জিনিস --তা কি করে জানা যাবে ? এ নাকি সেভিলের তেতো কমলালেবর খোসায় তৈরী মাম্পমালোড, টিনের গায়ে (a2ा रूाCछ । 邸 পরিমল এটা কিনে এনেছিল-তার ওপর সবাই খাপা। কেন বাপ কিনতে গেলে সেভিলের তেতো কমলালেবর মাম্পমালোড। বাজারে জ্যাম জেলি ছিল না ? হাঁটতে হাঁটতে রৌদ্র চড়ে গেল দিব্যি। বেলা প্রায় এগারোটা - পথের নব নব রাপের মোহে পথ হাঁটার কন্টটা আর মনে হচ্ছিল না। এ যেন জনহীন অরণ্যভূমির মধ্যে দিয়ে চলেচি—এতটা পথ চলে এলাম, কোথাও একটা চাষা ক্ষেত চোখে পড়লো না। শািন্ধ পাহাড় আর বন, বন আর পাহাড়। এক জায়গায় পাহাড় একেবারে পথের গা ঘেষে অনেক দাির চলেচে। পাহাড়ের ছায়া আগাগোড়া পথটাতে। আমাদের বাঁদিকে জমি ক্রমশ ঢাল হয়ে একটা নদীর খাতে গিয়ে মিশলো। সমস্ত ঢালটায় বন্য-করবী, ফলের বন। পাহাড়ের ওপর বাঁশবন। এদেশে এই প্রথম দেখলাম। বন্যবাঁশ আমি চন্দ্রনাথ ও আরাকান-ইয়োমার পাহাড়শ্রেণী ছাড়া ইতিপকেবা কোথাও দেখিনি। উড়িষ্যা ও মধ্যপ্রদেশের আদ্রতা শান্য আবহাওয়ায় এই বন্যবাঁশ সাধারণত জন্মায় না। বাঁশি যেখানে আছে, তা মানষের সযত্নরোপিত। SVS