পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থেকে অনেক নীচু উপত্যকার দিকে চেয়ে দেখাঁচ। আমাদের ওই উপত্যকার মধ্যে নামতে হবে সরল পথ বেয়ে, কোনো কোনো জায়গায় পাহাড়ের ফাটল থেকে বেরনো শেকড় ধরে। বিশদ্বাধর আমাদের সঙ্গে ছিল। সে বললে-পলিসে জঙ্গল কেটে রাস্তা পরিস্কার করে দিয়েচে। নামতে তত অসবিধে হবে না। বাবা। সবাই মিলে পাহাড়ের গা ধরে সন্তপণে অনেকটা নীচে নােমলাম, আকা-বাঁকা পথ বেয়ে । তারপর অপর দিকে চেয়ে দেখা গেল অনাবত পৰ্ব্ববতগাত্রে লম্বালম্পিব ভাবে খোদাই করা কতগলি অজ্ঞাত অক্ষর বা ছবি। পরিমল বিভিন্ন দিক থেকে শিলালিপির ফটো নিলে, অক্ষরগলির অবিকল প্ৰতিলিপিও একে নিলে। জায়গাটার প্রাকৃতিক দশ্য সত্যিই অপৰিব। আমাদের আরও নীচে উপত্যকার মেজে। যে পাথরের গায়ে শিলালিপি উৎকীর্ণ, তাকে পাহাড় না বলে একটা মালভূমির অনাবাত শিলাগাত্র বলাই সঙ্গত। নিশেনর উপত্যকা নানাজাতীয় বন্যবক্ষে সমাচ্ছন্ন, তার মধ্যে কাঞ্চন ফলগাছের মতো সেই গাছও যথেস্ট-ফলে ভৰ্ত্তিব্ধ হয়ে সেই নিজজন পৰ্ব্ববতারণ্যের শোভা ও গাম্ভীযর্চ বন্ধি করাচে। উপত্যকার ওদিকে আবার মালভূমির দেওয়াল খাড়া প্রাচীরের মতো উঠে গিয়েচে, সেদিকটাতেও ঘন জঙ্গল। এমন একটি জনহীন ঘন অরণ্যভূমির দশ্য কলপনায় বড় একটা আনা যায় না, একবার দেখলে তারপর তার বন্য বাঁশি ঝোপের ছায়ায় বিচরণকারী মাগযথের ছবি মানসসচক্ষে দশন করা কঠিন হয় না। অবিশ্যি। বেলা পড়ে আসচে। সমগ্ৰ উপত্যকাভূমির অরণ্য ছায়াবত হয়ে এসেচে। রৌদ্রতপ্ত বাতাসে শালমঞ্জরীর সগন্ধ। বিশদ্বাধর বললে—‘এবার চলন বাবরা, আর এখানে থাকা ঠিক হবে না। অনেকটা যে ফিরতে হবে। জিনিসপত্র গছিয়ে নিয়ে আমরা সে স্থান ত্যাগ করবার পকেবা পরিমল আমাদের দলের একটা ফটো নিলে। তারপর আবার পাহাড়ের গা বেয়ে ওপরে উঠলাম। সবাই। বনের মধ্যে দিয়ে জোর পায়ে হোটে সন্ধ্যার কিছ পাবে আমরা গ্রিন্ডোলা পৌঁছলাম। বিশদ্বাধরের লোকজন আমাদের জন্যে রান্না করে রেখেছিল। ভাত ও পরী দই রকমই ছিল, যে যা খায়। আমরা নিকটবত্তীর্ণ একটা পকুরে সন্নান করে এসে খেতে বসলাম। গ্রামের লোকের ভিড় পািব্ববৎ। সবাই উকি-ঝাঁকি মেরে ভোজন-রাত বাঙালী বাবদের দেখচে । গ্রামের বালক-বন্ধ-যবা কেউ বোধ হয় বাকি নেই। চারিধারে ऐफुिझा बळ । খাওয়া শেষ হল। একটি গ্রাম্য নাচের দল নাকি অনেকক্ষণ থেকে আমাদের নাচ দেখাবে বলে অপেক্ষা করচে। এখন যদি আমাদের অন্যািমতি হয় তো তারা আসে। আমরা খাব আনন্দের সঙ্গে সম্পমতি দিলাম। গ্রামের মন্ডপঘরের সামনে রাস্তার ওপরে নাচ আরম্পভ হল। ছোট ছোট ছেলেরা মেয়ে সেজে পায়ে ঘঙর বোধে। নাচলে। প্রায় ঘণ্টাখানেক চললো নাচ। বেলপাহাড়ের পাটােয়ারী বললে—আর বাবা দেরি করবেন না। বড় পাহাড়জঙ্গলের পথে ফিরতে হবে। এই বোলা রওনা হওয়া উচিত। সেদিন দশমী তিথি। চমৎকার জ্যোৎসনা উঠলো সন্ধ্যার পরই। আমার মনে একটা - FÒS