পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছোট ছোট্ট জৰলন্ত মশাল হাতে শিশরা নাচতে নাচতে আনন্দভরা হাসিমখে অন্ধকার কুঞ্জপথের এদিকে ওদিকে বেরিয়ে কোথায় সব চলে গেল। আর কোথাও কেউ নেই। অপর কোন অরণ্যানীর গহন নীরব পঞ্জীভূত অন্ধকার দাির করতে, অপর কোন অনাগত বংশধরদের হাতের মশাল অমনি করে জোৰলে দিতে। নিত্যকালের ওরা হ'ল যে মশালচী। ৷৷ ২৮শে আগস্ট, ১৯২৫, ভাগলপাের৷ পনের বৎসর আগের এক সন্ধ্যা হঠাৎ বড় সাপটি হয়ে মনে পড়লো। বাড়ীর পিছনের বড় কাঁঠালগাছটায় রাঙা শেষ সয্যাস্তের রোদটকু লেগে আছে, গাছে পাতায়, বাঁশবনে, কাঁঠালগাছের তলায়। পথের ধারের শেওড়াবনে অন্ধকার নেমে আসছে, ঝিঝি” পোকা ডাকছে, পাঁচিলের পরানো কোন কোণে, মাটির ঘরের দাওয়ায়, খড়ের চালের নীচে। সন্ধ্যায়। শাঁখি বেজে উঠলো, চারধারে কাক, ছাতারে, ঘাঘ, নীলকণ্ঠ শালিখা পাখীরা ছায়াভিরা আকাশ বেয়ে বাসায় ফিরচে-তখনকার সেই দিনটির আশা আনন্দ আকাঙক্ষা আকুল আগ্ৰহ আজকের এই সন্ধ্যায় আকাশটির রং যেমন মহত্তে মহত্তে বদলাচ্ছে, কোথাও ওই তুতের রং এখনই কালো হয়ে উঠছে, কোথাও রোদের সোনার রং ধসের হয়ে গেল। মেঘের পাহাড় সমদ্র হয়ে যাচ্ছে, সমদ্র দেখতে দেখতে পাহাড় হয়ে উঠল। রন্তের পকুর চোখের সামনে নীল মাঠ হয়ে যাচ্ছে। পথিবীটাও ঐ রকম মহত্তে মহত্তে পরিবত্তনশীল-সযাস্তের এই আকাশে যেমন মহত্তে মহন্তে বহর পীর মত রং বদলাচ্ছে ঠিক ঐ রকমই আকাশ যেন একটা মস্ত দপণ-পথিবীর এই অহরহ পরিবত্তনশীল রােপ ওতে যেন সব সময় ধরা পড়ছে। তাই সেটাও একটা বিরাট ছায়াবাজার মত দেখা যায়। তরল আনন্দ অধ্যাত্ম জীবনের পরিপন্থী নয়। Sadness জীবনের একটা অমলে। উপকরণ— Sadness ভিন্ন জীবনে profundity আসে না। — যেমন গাঢ় অন্ধকার রাত্রে আকাশের তারা সংখ্যায় ও উত্তজবলতায় অনেক বেশী হয়, তেমনই বিষাদবিদ্ধ প্রাণের গহন গভীর গোপন আকাশে সত্যের নক্ষত্ৰগলি স্বতঃস্ফত্ত ও জ্যোতিভ্ৰমান হয়ে প্রকাশ পায়-তরল জীবনানন্দের পণ জ্যোৎস্নায় হয়ত তারা চিরকালই অপ্রকাশ থেকে যেত। সেই হিসাবে এই emotional Sadness জীবনের একটা খাব বড় সম্পদ। ।। ২৮শে আগস্ট, ১৯২৫ । এই প্রশন একদিন নিউটনের, কেপলারের, গ্যালিলিওর মনে উদয় হয়েছিল। লেরই মনে এ প্রশন উদয় হওয়া উচিত। জগতে দদিনের জন্যে আসা-এই জগতের ফলে, জলে, সেনহে, দয়ায় মানষ হয়ে এটা কি উচিত নয় যে জগতের জন্যে কিছ করে যাবো ? আমার ছাত্রটি যেমন কাঁচ, সন্দের, ঐ রকম অবোধ শত শত অনাগত শিশমনের জন্যে উত্তরকালে আমার কি দেবার থাকবে ? আমি বেশ কলপনা। করতে পারি, শত শত কি সহস্ৰ বৎসর পরেও এমন কেউ কেউ ওদের মধ্যে থাকবে যে হয়তো শান্ত পৰ্ব্বতের ছায়ায়, নিজজন সন্ধ্যায় শান্তিপণ কোনো গ্ৰাম্য নদীতীরে, অথবা অন্ধকার গহন-রাত্রে শিশিরভেজা ঘাসের উপর, তারার আলোয় শয়ে ওরা এইগলি পড়বে। আর মনে আনন্দ, বল, উৎসাহ আলো পাবে-এই তো জনসেবা, পথিবীতে এসে এই করেই তো সার্থকতা—একশত বৎসর পরে আমার নাম দশ বৎসর