পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগেকার পাতা মাকড়সার জালের মত কোথায় কালাসাগরে মিলিয়ে যাবে-তবে কি রেখে যাবো। আমার দঃখের মত দঃখী ঐ সব অনাগত কচি কচি শিশ। মনগলির খোরাকের জন্যে ? কি রেখে যাবো ? কি সম্পত্তি, কি heritage তাদের জন্যে দেবো ? শান্ত, অধির অপরাহুে বাড়ীর পিছনের বন যখন সন্ধ্যার অন্ধকারে ঢেকে আসে, পরোনো নোনাধরা দেওয়ালের কোণে যখন বাদাড়ের দল হাটপাট করতে শার করে, নদীর ওপারে শিমলগাছের মাথা থেকে শেষ বৈকালের ফলান রোদের ছায়াও যখন মিলিয়ে যায়, তখন বহন দাির ভবিষ্যতের রাশি রাশি। ফলের মত মািখ, শিরীষের পাপড়ির মত নরম এই সব অনাগত বংশধরগণের কথা মনে পড়ে। এই সন্ধ্যার মত অন্ধকারও ওদের মধ্যে কত ছেলের জীবনে আসবে। সন্ধ্যায় এখন আকাশে যেমন জবলজৰলে শকতারা সন্ধ্যা হবার সঙ্গে সঙ্গেই আসে আবার সায্যের প্রথম আলোর আগেই মিলিয়ে যায়, ওদের জীবনেও অমনি দঃখরাত্রের সত্যের উত্তজবল শকতারা যদি না ফোটে তো কে তাদের আশা দেবে ? তাই কিছ করে যেতে হবে- জীবনটা ছেলেখেলার জিনিস নয়। এটা একটা Serious জিনিস। যারা হোসে খেলে তুচ্ছ আমোদ-প্রমোদে স্ফত্তি করে কাটালে তাদের কথা ধরি না, কিন্তু যারা জীবনটাকে Serious ভাবে নিতে যায়, নিঃস্বাৰ্থ ভাবে নিজের সখি না দেখে, তাদের উচিত এই উত্তরকালের শিশ, বদ্ধপৌত্র, অতিবদ্ধপ্রপৌত্ৰগণের জন্য কিছ সঞ্চয় করে যাওয়া। এতে আপন পর কিছু নেই, কি তুমি দেবে এদের ? এদের জন্যে কি রাখছে। তুমি ? জীবনের mission কি তুমি অবহেলা করবে ? উপেক্ষা করে ভগবানের পবিত্ৰ মহৎ দানকে পায়ে দলে যাবে ? কোনো কায্য কর” বললেই করা হয় না, এ জিনিস সহজ নয়। অনেকদিন ধরে ভাবতে হয়, বাইরের কোনো জিনিস থেকে বাধা-বিঘা না আসে। চিন্তা : শািন্ধ গভীর চিন্তা। অনবরত বাধাহীন চিন্তাতে শান্তমনে গভীর সত্যের উদয় হতে পারে, interrupted হল সারাজীবনেও তার নাগাল পাওয়া যাবে না, যা কিনা হয়ত এক বৎসরের নিজজনবাসেই আসতে পারত. "By keeping it constantly before one's mind...By always thinking and thinking upon it, much is done under these conditions...... much might be sacrificed to obtain these conditions. জনসেবার জন্যে Sacrifice করবার যদি প্রয়োজন হয়, তবে এও এক জনসেবা, এর জন্যেও বিরাট সবার্থত্যাগের প্রয়োজন আছে। এ সাময়িক হজাগের জনসেবা নয়। ধীর, শান্ত সমাহিত ভাবে উত্তরকালীন অনাগত জনগণের সেবা। ।। ৯ই অক্টোবর, ১৯২৫ । মানষের সামান্য সখেদঃখ, আমন্বন কাঁঠালবাগানের পাতার আড়াল বেয়ে দিব্যি চলছে। Annytaার মত কত মেয়ে কত দঃখী..সন্ধ্যার আকাশে। কত শত গ্রহ-নক্ষত্র-কত জগতের ছড়াছড়ি-বিরাট নাক্ষত্রিক শান্য—ঠান্ডা। জনহীন-পথিবীর ফলাফল লতাপাতা সামান্য সখদঃখ-গ্রহ-নক্ষত্র লাটিমের মত ক্ৰীড়া-কন্দকের মত আকাশে ঘরছে। এই আনন্দলীলায় সব প্রাণীই যোগ দিচ্ছে। সখদঃখ জন্মমাতৃত্যু সবই খেলা, দদিনের। কিছতেই ব্যথিত হবার কিছই কারণ নেই। নদী বেয়ে যে শব ভেসে যাচ্ছে কে জানে হয়ত দর কোন অজানা নক্ষত্রে ওর মােত্যু নবজীবন লাভ করেছে। ওর মােত্যু যন্ত্রণা। সার্থক হয়েছে। এই বিচিত্র বিশাবলীলার সকলেই যে যাত্রী। ফল, ফল, গাছ, পাখী, মানষি সকলেই।