পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দীক্ষার অভাবে আনন্দের পথ না জেনে ভুল পথ ধরেছে। শািন্ধ অবগঠনময় বিশ্ববি জগতের অনন্ত রহস্য-লোকের অজানা জীবনানন্দের পথ দেখিয়ে দেবার কেউ নেই বলেই তারা এমন হয়েছে। নইলে একবার চোখ ফািটলে তারা সকলেই ঠিক পথই ধরত, কারণ নিজের ভাল পাগলেও বোঝে। কেউ নেই।-কেউ নেই—তাদের মাখের দিকে চাইবার কেউ নেই। কোন মক্তপােরষি অনন্ত অধিকারের বাত্তা নবআনন্দের তড়িৎলেখায় তাদের উপেক্ষিত অন্ধ বক্তৃক্ষাশীর্ণ প্ৰাণে পৌছে দেবে ? । ১২ই ডিসেম্বর, ১৯২৫ । হঠাৎ জানালার ধারে এসে দাঁড়ালাম— বাইরে শীত কমে গেছে।--জ্যোৎস্নাসিক্ত লক্ষবা ছায়া পড়েছে—আলো-অাঁধারে গাছগালোর লম্বা লম্বা ছায়া-মনে হোল এই যে সন্দের পথিবী, এই জোৎসনা ছায়া, ঐ রহস্যময় চিন্তা পাঁচশো বছর পরে কোথায় থাকবে ? ঐ দরে যে কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করছে, এই বাঁশ ঝাড়ের বাঁশগলোঁ--আজ যারা সব জীবন্ত সপষ্ট মাত্তিমান—আজ আমার জীবনের যে দঃখ সখি আমার কাছে সাপটে জীবন্ত, তারা সব কোথায় থাকবে ? কোথায় মিশে যাবে-কোেনা দর অতীতে ? আবাবা তাদের জায়গায় নাতন অনভূতি-এতদিনের আচঞ্চল, গতিহীন জড় সংসার যেন হঠাৎ তার চোখে সচল গতির বেগে জব্বলন্ত হয়ে উঠল, যা এতদিন ছিল বন্ধ, হয়ে উঠলো। রহস্যময় জীবন্ত গতিশীল— পথিক বিশব এই অনন্তের মধ্য দিয়েও ঠিক আছে, তার বকে যাগে যাগে কত বিনম্ৰাট অবোধ জীবের ব্যথা, কত অতীতের কত বেদনা-ভরা বািক তার, যাগযগের বিরহ জন্মমতুর মধ্যে দিয়ে, প্রচন্ড বিদ্যুৎ, সন্টির কত ফলে কত রহস্য নিয়ে যে চলে আসছে। হয়ত অনেক দিন পরে সলিট যখন সন্দর হয়ে ওঠে আগের চেয়েও, তখন দীর সবগের কোন কোণে মন্সত বড় জ্যোতিবাতােয়ন খালে রেখে অতীতদিনের জীবের কাহিনী তার মনে পড়ে যায়-অনন্তের পাষাণ আনন্দ বেয়ে যারা কত কতদিন মিশিয়ে গেছে—বক হয়ত তার অনন্তের ব্যথায় ভরে ওঠে। ' : ২৩শে ডিসেম্বর, ১৯২৫ ভাগলপাের । অসীম অনন্ত রহস্যভরা আকাশ-সন্তব্ধ রাত্রি। পথিবী সাপ্তির অন্ধকারভরা। এখানে ওখানে দাই একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে মাত্র ; মাঝে মাঝে বাতাস লেগে নিমগাছের ডালপালার মধ্যে সিরা সিরা শব্দ হচ্ছে। আকাশ অন্ধকার, পথিবী অন্ধকার। আকাশে বাতাসে একটা নীরবতা। অন্ধকার আকাশে নিমপাতার ফাঁক দিয়ে একটা তারা যেন অসীম রহস্যের বকের সম্পন্দনের মত ঢিপ ঢপ করছে। তারাটা ক্ৰমে নেমে যাচ্ছে—আগে যেখানে ছিল ক্ৰমে তা থেকে নীচে নামছে। এই অনন্ত, সনাতন জগৎটা যে কি ভয়ানক রচন্দ্ৰ লীলা প্রচ্ছন্ন করে রেখে দিয়েছে তা ঐ সgরমাণ তারাটিকে দেখলে বোঝা যায়। অন্ধকারের পিছনে একটা অসীম অনন্ত সৌন্দয্যলোক যেন আবছায়া আবছায়া চোখে পড়ে। ঐ তারার হয়ত একটা সবাতী নক্ষত্র আছে। তা পার্থিব চোখের বাইরে, হয়ত তাতেও একটা আমাদের মত উন্নত ধরনের জীব থাকত। কি হয়ত আমাদের চেয়েও উন্নততর বিবত্তানের প্রাণীর বাস। কি তাদের সভ্যতা, কি তাদের ইতিহাস, কি তাদের প্ৰেম স্নেহ, জ্যোৎসনা সৌন্দয্য ••• জানতে ইচ্ছা যায়। এই রহস্যভরা বিশোবর বকের সম্পন্দনটা কান পেতে শািনতে ইচ্ছে হয়—আরও কত নক্ষত্র, কত জগৎ, কত প্রেম, কত মহিমা, কত সৌন্দৰ্য্য, অব্যক্ত, ܬܦܠ