পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু এই সকল আবোল-তাবোল ভাবনার মধ্যে এটকু ভুলে গেলে চলবে না। যে ১৯১৮ সালে এতক্ষণ অশিবানীবাবর বোডিং-এর আলভাতে ভাত খেয়ে মিডজাপরের বেনের দোকানটা থেকে এক পয়সায় চক-খড়ি কিনে কাগজে মড়ে পকেটে নিয়ে ছটিতে ছািটতে এসে শেয়ালদায় গাড়ী চেপৌছ-হয়তো গাড়ী ছেড়েছেও। তারপর সারাদিন আর একথা মনে ছিল না-বিকেলের দিকে খাব ঘোড়া ছটিয়ে বিষাক্তনাত আকাশের তলে মাঠে মাঠে বেড়ালাম, তখনও মনে হয় নি। এই এখন আবার রাত আটটার পর জানালার ধারে বসে লিখতে লিখতে টবের গাছটার ফটেন্ত বেলফলের গন্ধে সে কথা মনে পড়ল। এখন সেই বাঁশবনে ঘেরা বাড়ীতে অন্ধকার রাত্রি, হয়ত টিপ টপ বান্টির মাঝে আনন্দের কাহিনী দেখব। কতকাল হয়ে গেছে। বাইরে অন্ধকার মাঠের দিকে চেয়ে ভাবলাম আজ যদি যাই ? সেই জামাটা পরে ? অন্ধকার রাত্রে ভাঙা দরজার ইটগলো পেরিয়ে পোড়ো ভিটাতে বর্ষা সতেজ সেওড়া ভাঁটবন। বানচালতা গাছ—বড় চারাটা। বাঁশঝাড় নিয়ে পড়েছে—ঘন বনে ঝিঝি’ ডাকছে, পিছনের গভীর বাঁশবনে শিয়াল ডাকছে। নয় বছর আগেকার সে রাতটার আনন্দের ইতিহাস কোথায় লেখা থাকবে ? ঐ পোড়ো ভিটার অন্ধকারে, ঘপসি বাঁশবনের শন, শন শব্দে, গভীর রাত্ৰিতে গভীর বনের দিকে হতুম পোচার ডাকে। এ সব রাতে একমনে ভাবতে ভাবতে শােধ এর অসীম রহস্যভরা জীবন বড় চোখে পড়ে—এ কোথায় এসেছি ? কোথায় চলেছি ? সংসারের কল-কোলাহলে যা কখনো মনেও ওঠে না, এ সব নীরব অন্ধকার রাত্ৰিতে জানালার ধারে বসে গানগন করে কোন গানের একটা লাইন গাইতে গাইতে একাদণ্ডেড সেটা বড় ধরা দেয়। তাই সকল জ্ঞানের পথিতেই নিজজনতার, পরিপািণ অবসরভরা নিজজনতার বড় প্রয়োজনীয়তা অনভব করে। দরের ঐ তারাটার দিকে চেয়ে চেয়ে মনে হয় এ রকম হাসি-আশাভরা জীবনস্রোত হয়তো। ওখানেও চলেছে-কে জানে ? বিশাল Globular Cluster- এর দেশ, বড় বড়, Star Clouds, ছায়াপথ, কি অজানা বিরাটত্ব, অসীমতা ভরা এ বিশেবা জন্মেছি। Sagittarius অণ্ডলের নক্ষত্ৰঠাসা আকাশটার মনে হলেই মন শিউরে ওঠে-পলিকে অনিৰুবচনীয় বিসময়ে আত্মহারা হয়ে 3) তাই এই নিতজান রাত্ৰিতে মনে হয়। সখি আছে এক জিনিসে। কি সে ? মনকে প্রসারিত করে এই অনন্তের অসীমতার সঙ্গে এক করে দেবার চেষটা করো। মনে ভাবো অনন্ত আকাশের এই ছোট একরাত্তি পথিবীটার মত শত শত লক্ষ লক্ষ অজানা জগৎ-তার মধ্যের অজানা প্রাণীদের সে সব কত অজানা অদভ্ৰাট ধরনের জীবনযাত্রা, কত সখদঃখ, কত আনন্দ। সে সব কি অজানা উচ্ছবাস-তোমার মন অসীমতার রহস্যে ভরে উঠবে। ক্ষন্দুত্ব ভেসে যাবে অনন্তের অমতের জোয়ারে। মনকে সে ভাবে যে তৈরী করেছে, জগৎ তার প্রিয় সাথী-চিরদিনের বন্ধ। “জীবন-মহত্যু পায়ের ভৃত্য চিত্ত ভাবনাহীন।” কিন্তু ক'জন চিনতে চায় জীবনকে এ ভাবে ? সকলেই যে চোখ বজেই থাকে -20वीं का । অনন্ত যে তোমার চারধারে প্রসারিত, তোমার পায়ের তলার তৃণদলের শ্যামলতায়, তোমার কোলের শিশর মাখের হাসিতে, তোমার আঙ্গিনায় পাখীর ডাকে, সন্ধ্যায় ঝিাঁঝাঁর সরে, নৈশপাখীর পাখার আওয়াজে-কিন্তু আমি শনবো না, আমি ܠܬ