পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাসে বড় সৌন্দয্যের সন্টিকত্তা, নব ধৰ্ম্মম প্রচার করেছে, কত লোককে কাঁদিয়েছে, নক্ষত্ৰজগৎকে চিনিয়েছে, ভগবানের সত্তাকে আন্দাজ করেছে—তার অদন্ট কি পথিবীর ধলার সঙ্গে সত্য সত্যই জড়িত থাকবে ? বিশ্ববাস হয় না। মনে হয়। কত দর দিনে ঐ সমস্ত বিশাল নাক্ষত্রিক শনের সে হবে উত্তরাধিকারী। অসীম ব্যোমপথে নব নব গ্রহীতারার অজানা সৌন্দয্যের দেশে তার সে অভিযান এখন সে মনে ভাবতেও সঙ্কুচিত হয়, তখন তা হবে নিত্য নািতন আনন্দের পক্ষপবীথি। মানষের ভবিষ্যৎ অদ্ভুত, উক্তজবল, রহস্যময়, রাত্রির অন্ধকারে -এই নিতজনে বসে সপম্পটি তখন দেখতে পেলাম। সত্যিই আর ভয় করি না, নিরানন্দ বোধ করি না। মানস-সরোবরের শতদল পদ্মের মত এই অনন্তের বোধ আমার মধ্যে প্রস্ফটিত হয়ে উঠেছে যেন। যখন নীল আকাশের দিকে চাইলেই মনে হয়। আমার এ দান্দিনের প্রবাস অনন্তের খেয়ার এপারের ঘাট-পারানির ছোট কুড়েখানা। ঐ তো কানে আসছে উন্মত্ত গহন গভীর সাগরের ক্ষব্ধ। উদাত্ত সঙ্গীত। কুড়ের চাল ভুলে যাই। পইমাচার কথা মনে থাকে না। লাউশাকগালো গরতে খেয়ে ফেললে কিনা দেখবার কার মাথাব্যথা পড়েছে ? শতজন্মের পারে তাঁকে যেন আবার পাবো। কোন দেবতা আছেন যেন জন্মমাতুত্যুর নিয়ন্তা। তিনি সব দেখেন শোনেন। কতদিন আগে এই সময়ের সেই গানটা মনে পড়লঃ “তোমার অসীমে প্ৰাণমন লয়ে যতদরে আমি ধাই।” ৷৷ ২৯শে অক্টোবর, ১৯২৭, ভাগলপাের ৷ আজ সকালে মাহেন্দ্র ঘাট থেকে সন্টীমারে হরিহরছাত্র মেলা দেখতে গিয়ে কত কি দেখলাম! ভোটারিনারী হাসপাতালে জিনিসপত্র রেখে টমটমে বেরলাম। কি ভিড়, ধলো। সেই যে মেয়েটি ধলায় ধসরিত কেশ নিয়ে বসে আছে, ভারী সন্দর দেখতে। হাতী বাজার, উট বাজার, চিড়িয়া বাজার-কত সাহেব-মেম ধলি-ধ সরিত হয়ে মেলা দেখে বেড়াচ্ছে। হাজিপর থেকে, মজঃফরপর থেকে ট্রেন সব আসছে, লোক বলতে ঝলতে আসছে বাইরে। একটা ঘোড়া কেমন নাচতে নাচতে এল। টমটম ওয়ালারা চীৎকার করছে—“ধাক্কা বাঁচাও।” একটি মেয়ে কাঁদছে, তার স্বামী কোথায় গিয়েছে—পাত্তা পাচ্ছে না। সাবন জেলার ম্যাজিস্ট্রেটের তাঁবা পড়েছে। ৷ সন্ধ্যা ৭টা, ৭ই নভেম্বর, ১৯২৭, রেলওয়ে কম্পার্টমেণ্ট, সোনাপাের ৷ জ্যোৎস্নাভিরা রাতে পাটলি হাতে এইমাত্র এসে পাটনায় পৌছানো গেল। বৈকুণ্ঠবাবার সাজানো অফিসঘরে টেবিলটাতে বসে লিখছি। গঙ্গায় খাব বড় একটা সন্টীমার, নাম মজঃফরপর—তাতেই পার হওয়া গেল। এপারে ওপারে কি ভয়ানক ভিড় ! গঙগার ধারে দীর্ঘা ঘাটে ও প্যালেজ ঘাটেই এক এক মেলা বসে গিয়েছে। জ্যোৎস্নালোকিত গঙ্গাবক্ষে হ হ হাওয়ার মধ্যে যখন জাহাজ ছাড়ল তখন কলপনা। করলাম ইজিপট থেকে যেন জাহাজ যাচ্ছে-ওপারে সন্দরী ইটালীতে। মাঝের ভূমধ্যসাগরের চলোম্পিম-চণ্ডল নীল বারিরাশিতে কতকাল আগেকার কত নীলনয়না। কনককেশিনী সন্দিরীর ছবি যেন দেখলাম, কত ক্লিওপেট্রা, কত হাস্যমখী তরণী, ইটালীর মেয়ে, গ্রীসের মেয়ে, রোমের মেয়েরা। লোকের ভিড়ে সন্টীমারের ঘাটে নামা যায় না, মালগাড়ীর মধ্যে ওয়েটিং-রম, টিকিট দেওয়ার ঘর-যেন যন্ধের সময়ের বন্দোবস্ত । আসবার সময় কেবলই মনে হতে লাগিল—এই বিদেহ, মিথিলা। এটা ছাপরা জেলা Sq bf