পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাশজঙ্গলের মধ্যে দিয়ে খাব ছটিয়ে রামজোতের পরনো বাগান দিয়ে নীচের কুন্ডীটাতে গেলাম। লাখাপতিদের টোলার মাথার উপরে রাঙা টকটকে লাল সােয্যটা অস্ত যাচ্ছে। শীতের সন্ধ্যায়। কাশজঙ্গলের ধারে ধারে কেমন সোঁদা সোঁদা ঠান্ডা গন্ধ ! কুন্ডীটার ধার দিয়ে খাব জোর করে ঘোড়া ছটিয়ে কুন্ডী পার হয়ে সামনের যে কুন্ডীটা, যেটার ধারে সেদিন লাল হাঁস বসেছিল—আমি যেতে যেতেই উড়ে গেল,- মারতে পারিনি—সেই কুন্ডীটার ধারে গেলাম। পাখী কোথাও কিছ নেই। দরেপ্রসারী ঈষৎ অন্ধকার কাশজঙ্গলের মাথার উপর তাকিয়ে ভাবছিলাম-নয় বছর আগে ঠিক এমনি দিনগালোতে বারাকপরের বাড়ীতে সেই হরি রায়ের বাড়ীতে বসাহরিপদদা—সেই শোকের দিনগালো আজ কোথায় কি হয়ে গিয়েছে! জঙ্গলের পাশ দিয়ে দেখলাম দটি হাঁস জলে সাঁতার দিচ্ছে কিন্তু বন্দকটা আনিনি। কতকগলি Snipe-ও ছিল, এদেশে বলে চাহ-বন্দক থাকলে সংবিধা 3V তারপর খাব জোরে ঘোড়া ছটিয়ে চলে এলাম। আজকাল ঠিক দাপরে সন্ধ্যার আগে একবার করে বসি কাছারীর পেছনের কাশজঙ্গলের ধারে সষে ক্ষেতের পাশে। প্রসফট সর্ষে ক্ষেতের গন্ধে সেই ছেলেবেলার বড়দিনের বন্ধে বনগাঁ থেকে বাড়ী আসার কথা মনে পড়ে। বড় আনন্দ হয়। এই মাটি, এই আধশকিনো, আধ-সবজি কাশীবনের স্নিগাধ ছায়া, তারই ধারে এই হলদে রং-এর গন্ধে ভরপর সর্ষে ক্ষেত, এই নিজজনতা—একেবারে মাটির মায়ের কোলে বসে থাকা । এই আকাশ-আমার জানলা দিয়ে রোজ সন্ধ্যায় দেখতে পাওয়া, দীর পদে আকাশের orion-এর pointer-টা বড় মগধ করে দেয়। আমাকে। আকাশের নক্ষত্রের দিকে চেয়ে নিজজন কাশীবনের রহস্য আমার প্রাণে এসে লাগে। জীবনটা কী ? কি গহন গভীর গোপনতা-কি যাওয়া-আসার গতিচ্ছন্দ ! কাল সন্ধ্যায় টেবিলটায় বসে লিখতে লিখতে দীর পাব আকাশের একটা নক্ষত্রের দিকে চেয়ে ভাবলাম-ঐ সব নক্ষত্রের বা তার পাশের গ্রহের অজানা জীবনযাত্রা, আমাদের কাছে একেবারে গোপনতায় ঢাকা। কে জানে ওর মধ্যে কি প্রাণীদল, কি জীবনের গতি! এই আমি যে অত্যন্ত বাস্তব জীব এই টেবিলে বসে লিখছি।--আর ঐ জবলজৰুলে তারাটার মধ্যে অনন্ত মহাশন্যের ব্যবধান—কোনকালেই এ ব্যবধান পথিবীর জীব ঘোচাতে পারবে না বোধ হয়। কে জানে ওদের জগতে কিরকম জীবনযাত্ৰা ? গভীর রাত্রে রামচরিত যখন আমার ঘরে ঘামিয়ে পড়ে, তখন বাইরে উঠে নিজজন বন-মাঠের ওপরকার নক্ষত্ৰভরা আকাশের দিকে চেয়ে থাকি। বহ, দরপারের গভীর কোন গহন রহস্য ধীরে ধীরে আমার মনে নেমে আসে- সে বলা যায় না, লেখা যায় না। জীবনের গভীর মহাত্ত সে সব—কেবল তা মনে এই সত্য আনে যে জীবন ঐ দর ছায়াপথের মত দরবেসপিত। এটকু শেষ নয়, এখানে আরম্ভও নয়-সদর কোথা থেকে এসে সদরের কোন পারের দিকে তার ডিঙ্গার মািখ ফিরানো। প্রাণের মধ্যে এই অনভূতিটকু যেন সকলের সত্য হয়ে ওঠে। ॥ २६ा छिंगञ्त्रज्ञ, sऽ२१ ॥ গভীর রাত্রে নিজজন কাশীবনের মধ্যের কাছারী ঘরে শহয়ে শয়ে গিবন পড়ছিলাম। কত রাজা রাণী সম্রাট মন্ত্রী খোজা সেনাপতি, কত সন্দরী তরণী বালক যাবার আশা-নিরাশার দ্বন্দ্বের কাহিনী। কত যন্ধ-বিগ্রহ, উত্থান-পতন, কত অত্যাচারউৎপীড়ন, হত্যা, পরের জন্যে কত প্ৰাণ দেওয়া—অতীতের ছায়ামাত্তিরা আবার গিবনের WO Vy