পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিষে, সে কথা ভাবি-জ্যোৎস্নায় পথের পাশের আকন্দগাছ চক চক করে, ধাতুরার ফল সন্দর দেখায়—কাছারী এসে পৌছাই। ○石T エf ssミb l একটা বেশী বেলা থাকতে আজ বেরিয়ে সািখটিয়ার কুলবনে এগাছে ওগাছে কুল খেতে খেতে বনঝোপ, অস্তমান সৰ্য্যে, আকাশে চতুর্দশীর চাঁদ, ঘাঘৰ-মিথন, সবজি গমক্ষেত দেখতে দেখতে গিয়ে গঙ্গার ধারে গেলাম। চতুর্দশীর চাঁদের আলো গঙ্গার জলে অলপ অলপ পড়ে চিক চিক করছে-ওপারের কুয়াশাচ্ছন্ন তীরভূমি দেখে হঠাৎ মনে হল—আমি সনীল ভূমধ্যসাগরের তীরে দাঁড়িয়ে দরের কোন দাবীপের দিকে চেয়ে আছি—হাজার দ্য হাজার বছর আগেকার জীবনযাত্রা আবার যেন চোখে পড়েকত সম্রাট সমাজ্ঞী সেনাপতি মন্ত্রির দল-গ্রেসাদেশীয় সামান্য গহস্থঘরের শান্ত সহজ জীবনযাত্রা, কত এলাম, ওক, ম্যাটল গাছের ছায়া, বন্য আঙরলতার ঝোপঝাপ, জানিপার গাছের বন-হাজার বছর আগের যে লোকদল, তাদের সভ্যতা গৰব, সোনা রপোর রথ নিয়ে ঐ অস্পষ্ট কুয়াশাচ্ছন্ন দীর তীরভূমির মতই ছায়া হয়ে হাজার বছর আগে কোথায় মিলিয়ে গিয়েছে। অনন্ত জীবন কেবল এই নীল জলধিরাশির মতো অনন্ত পানে বেয়ে চলেছে একটানা-বড় বড় সাম্রাজ্যের কন্ডকাল, তীরস্থ শেওলা, জলজ উদ্ভিদের মত একপাশে হেলায় ফেলে রেখে দিয়ে উদাসীর মত চলেছে। আবার এখন থেকে হাজার বছর কেটে যাবে...সে দরে ভবিষ্যতের নবোদিত প্রভাও সে যাগের তরীণ বংশধরদের কাছে আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান, মোটর এরোপেলন, বেতারযন্ত্র, ট্যাঙক প্রভৃতি নিতান্ত আদিম যাগের পণ্য বলে বিঘোষিত হবে। প্রাচীন রোমানদের সবণরৌপ্যে। জাঁকজমকওয়ালা স্প্রিংবিহীন গাড়ীর মত। মানষেকে শািন্ধ চলতে হবে। চলাই তার ধৰ্ম্ম-পথের নেশা তোমাকে আশ্রয় করুক। যাগে যাগে তোমাকে আসতে যেতে হবে।--নব নব প্ৰভাতে নব নব ফলাফল, হাসিমােখ। তরণ, শৈশব-স্নেহ প্ৰেম আশা হাসি জ্যোৎস্না-পথের বাঁকে বাঁকে ডালি সাজিয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।-অনন্ত জীবনপথে কতবার তুমি তাদের পাবে, আবার পেছনে ফেলে চলে যাবে-আবার পাবে। চরণ বৈ মধ্য বিন্দতি। চরণ সবাদ সদভূ স্বয়ম—এই চলার বেগের অমতে তোমার আপনার জীবনে সত্য হোক। জীবনে অনন্তকে চিনতে হবে, নতুবা আত্মার দৈন্য ঘোচাতে পারবে না। গতির মধ্যে দিয়ে অনন্তের স্বরপ চোখে ধরা দেবে। হে জীবন-পথের পথিক, পথের ধারে ঘামিয়ে পড়ো না। } ৬ই জানিয়ারী, ১৯২৮ ৷৷ আজ পণিমার দিনটা পৰ্ণচন্দ্রকে ভাল করে উপভোগ করবার জন্যই একটা দেরি করে বেড়াতে বোরলাম। সখটিয়া কুলবনেই বেলা গেল। সহদেবটােলায় তেলাকুচা ঝোপে ভরা সেই পথটায় যখন গেলাম তখন সয্যের রাঙা রোদ ঝোপেঝাপের গায়ে পড়েছে। আস্তে আস্তে ঘোড়া চালিয়ে আসছিলাম, প্রতি আকন্দ গাছ, তেলাকুচা লতা, নাটাকাঁটার ঝোপ, ছায়াশ্যামল তৃণভূমি উপভোগ করতে করতে মাখে দোদল্যিমান আলোকলতার সম্পর্শ মেখে, পিছনের মাঠে অন্তসায্যের রক্তগোলিকটা পিঠের ওপর দিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখতে দেখতে কুতরাটোলায় এসে পৌঁছলাম। তারপর পাখীর কাকলী শনতে শািনতে ডাইনের শ্যামল শস্য-ক্ষেত্র, একটা দরেই সন্ধ্যার 3○