পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গিয়েছে দেখা গেল, ঐরকম সড়িপথ এক বাথান থেকে আর এক বাথানে যাচ্ছে-পথ হারানো, রাত্রের অন্ধকারে জঙ্গলের মধ্যে ঘোড়া করে ঘোরা, এদেশের লোকের দারিদ্র্য, সরলতা, এই Virille, active life, এই সন্ধ্যায় অন্ধকারে-ভরা গভীর বন, ঝাউবনের ছবি—এই সব। দরে বাংলাদেশে এখন বসন্ত পড়ছে। গ্রামে গ্রামে বাতাবী লেবফলের সীগন্ধ, সজনেফােল পড়ে আছে, আমের বউল, কাঁচিপাতা ওঠা গাছপালা, দক্ষিণা হাওয়া বইছে। —কোকিল ডাকতে শার করেছে, তার সঙ্গে মনে পড়ে গহে গহে এই মঙ্গল সন্ধ্যায় শান্তচোখে গহলক্ষীদের হাতে আনা সন্ধ্যাদীপ.জানালায় ধাপগন্ধ...দেবতার মন্দিরে আরতি । ৷৷ ১২ই ফেব্রুয়ারী, ১৯২৮ ৷৷ প্রায় এক মাস পরে দিয়ারায় একঘেয়ে কাশ ও বন-বাউয়ের বনের নিবাসন থেকে, বালি, সবজি গম যবের ক্ষেত, ঘোড়ায় চড়া লোধাইটোলার খবড়ী—এসব থেকে আজ ভাগলপরে এলাম। অনেকদিন পরে ভারি চমৎকার লাগছিল। সব যেন নতুন নতুন। কাল এসেই চন্ডীবাবর সঙ্গে বেড়াতে বার হলাম-ক্লাব থেকে মাঠে বেড়াতে গেলাম। কমিশনারের বাড়ীর কাছটাতে যখন এসেছি তখন চন্ডীবাবর সঙ্গে গলপ করতে করতে মনে হ’ল অনেক কালের কথা—সেই যে সব দিনের বনগ্রাম স্কুল থেকে Homesick হয়ে বাড়ী ফিারতাম। ভরতদের বাঁশতলা, কালীদের বাগানের কোণাঢ্য। গাবতলাটা আমার কাছে সর্বপনপরীর মত লাগত। কালীর সঙ্গে ইছামতীর ধারে বসে মনে হোত, কতদিন পরে আবার এসব সপরিচিত সােথানে এসেছি! নভোলে এইঃসব শৈশবকালের সমতিরই পািনরাবত্তি করছি মাত্র-কারণ মনের অভিজ্ঞতা, জীবনের অভিজ্ঞতা ছাড়িয়ে কোনো লেখকই যেতে পারেন না-গেলেই সেটা কৃত্রিম, HQu!" de force & G Py( আজ বৈকালে কলেজের ঘাসবনের পথ দিয়ে বেড়াতে গিয়ে প্রথম ফালগনের গাঢ় আম্রবউলের সৌরভো, বাতাবী লেবফলের গন্ধে, অপরাহের ছায়ায় কত কথাই মনে আসতে লাগল। কি অপব্ব জীবনপােলাক! বহনকাল পরে দিয়ারার কাশবন থেকে এসে এ-কি অপব্ব পরিবত্তন!! চারধারে ঘোঁটি ফল ফটে আছে, ঝোপে ঝোপে। ছায়া নেমে এসেছে।--আম-বউলের গন্ধে, পাপিয়ার ডাকে বাতাস অবশ। নেবফলের গন্ধে, মনে পড়ে কতকাল আগে কোন কৈশোরের দিনে, সিনপদ্ধ ছায়াভার। বৈকালে যেন গোপালা গয়লার বাড়ীর সামনের চড়কতলার পথটা দিয়ে যাচ্ছি। যাক, তারপর লাইনের ওপরকার সাঁকোর ওপর গিয়ে বসলাম, মনে হ’ল এই অপব্ব শিল্প যাঁর হাতের-এই পথিবী-পারের নক্ষত্ৰজগতে হয়তো কত উন্নত বিবত্তানের জীবজগৎ আছে। তিনি তার অপবােব শিলপপ্রতিভা সে সব উন্নততর জগতে না-জানি কত অপব্বভাবে ফটিয়ে তুলেছেন! অনন্ত সৌন্দয্য ভূমি এই নক্ষত্র-জগৎ-কত এ ধরণের উন্নত বসন্ত, আরও কত অজানা ঋতুবিলাস তার ধলায় ধলায়। যাগে যাগে যে সব শিলপী, কবি এই সৌন্দযাসটির গান করে গিয়েছেন —গ্রীকযগ, রোমকযগ, রামায়ণ, কালিদাস, শেলি, শেক্সপিয়র, কীটস, রবীন্দ্রনাথ --এইসব দ্রস্টাদের কথা ভাবি। ভগবানের সন্টিকে এরা আরও কত মধ্যময় করেছে। ঐসব জগতে কত উন্নত ধরণের কবি, দুলটা, ভাবকে আছেন—কে জানে ? আমি বেশ কলপনা করতে পারি, নিজজন জ্যোৎস্যনাময়ী, অজানা গ্রহ-জগতে তাঁদের কলপনার সে (6t