পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধরালাম। তারপর সিগারেটের ধোঁয়া ওড়াতে ওড়াতে ও কুন্ডলীকৃত ধোঁয়াটা নাকের লোধাইটোলার খামার দিয়ে নিয়ে এলাম। আজ খাব হাওয়াটা। ৷৷ ১৮ই এপ্রিল, ১৯২৮ ৷৷ আজও খেড়ীক্ষেত গিয়ে ঘোড়া ছেড়ে পাহাড়টা বড় সন্দর দেখা যাচ্ছে-আসরফিকে কাল বড় রেগে গিয়ে চাবক নিয়ে মারতে গিয়েছিলাম। সে আমাকে ক্ষেত দেখিয়ে নিয়ে বেড়ালে। আজকাল এই অপরাহ গলো যে কি সন্দির লাগে! প্রতিদিন লেখার কাজ সেয়ে এই পাহাড়ের এপারে লোধাইটোলায় খেড়ীক্ষেতে ঘোড়া ছেড়ে দিয়ে দাঁড়াই। আজ অপব্ব ভােব মনে এল। সেই বোডিং থেকে গ্রীল্ডেমর ছটিতে এসে সৌদালি ফােলভরা ঝোপের তলা দিয়ে সকালবেলা মাঠে বেড়াতে যাওয়া-সেই ওধারের মােঠটা--- স্নিগধ নদী জলের গন্ধ-উমা পদ্মফল দিয়ে শিবপজো করতো—সেই গ্রামের হাওয়ায়, মাঠের রাপে, নদীজলের সিনপদ্ধতায়, ফলেফলে আত্মা গড়ে উঠেছিল--কি অপর্বে আনন্দই এরা জীবনে এনে দিয়েছিল একদিন! আজও সে সব আছে--কিন্তু তাদের যেন ছেড়ে দিয়েছে, আর তারা আমার নয়। শৈশবের সে গ্রাম এখন আমার কাছ থেকে বহন্দরে চলে গিয়েছে—সে সব পরোনা পাখীর ডাক, ফলাফলের সগন্ধ, স্নেহময় মখের হাসি সর্বপন হয়ে দর অতীতে মিশিয়ে গিয়েছে। দশ বৎসর আগে এমন দিনে সকালে উঠে শিয়ালদহে ট্রেনে চড়ে ৬o, মিজাপারের কাছে শেষ রাত্রির জ্যোৎস্নায় বিদায় নিয়ে ভোরের বাতাসে কাঁচিপাতা ওঠা বসন্ত দশ্যের মধ্যে দিয়ে রওনা হয়েছিলাম। সেই প্রথম বাল্টির সোঁদা সোঁদা ভিজা মাটির গন্ধ—তারও আগে সেই P. C. Roy-এর ওখানে নেমন্তান্ন, বান্দাবন চাকর-দেশে ফিরে Scott-এর বই পড়তাম শায়ে শয়ে-জীবনের প্রথম-যাত্রা-বড় মধর সনপনমাখা সে দিনগালো— আমি জানি আমার কাছে যা মধর বলে মনে হবে অপরের কাছে তার মাধ্যায্য বিশেষ কিছ বোঝা যাবে না—তব্য ভবিষ্যতে এই ছত্ৰ কয়টি যদি কেউ পড়ে তবে সে যেন ভুলে না যায় যে জীবনের আনন্দ অতি রহস্যময়-কারো কোনো দিনের সমিতি তুচ্ছ নয়। তারা যেন মনে রাখে। ঐ সব দিনগালো এক গ্রাম্য বালককে যে সখি একদিন দিয়েছিল, দনিয়ার রাজৈশবষ্য তার কাছে তুচ্ছ। সন্ধ্যা হয়েছে। বনঝাউ গাছের বনের মধ্যে দিয়ে ঘোড়া চালিয়ে ফিরে এলাম। বনঝাউ গাছের মাথায় চতুথীর চাঁদ উঠেছে। অলপ অলপ মেটে জ্যোৎসনা এখনও ফোটেনি-নিজজন কাশজঙ্গল-বনঝাউ গাছ-মাথার ওপরে চাঁদ-দ্রতগামী ঘোড়া -4द* काCी । \l RSCer af26, SSRt u আজ আমার সাহিত্য-সাধনার একটা সার্থক দিন– এইজন্যে যে আজ আমি আমার দই বৎসরের পরিশ্রমের ফলস্বরপ উপন্যাসখানাকে (পথের পাঁচালী) ‘বিচিত্রাতে পাঠিয়ে দিয়েছি। ঘোড়া করে বনের মধ্যে দিয়ে বেড়াতে গেলাম। খাব বন—খব বন-এত বনের পথ আমার জানা ছিল না। সেই বনঝাউয়ের বনের সন্দর জ্যোৎস্না। যখন উঠেছে, তখন ঘোড়া নিয়ে ধীরে ধীরে সোঁদা সোঁদা গন্ধ আঘাণ করতে করতে ঘোড়া চালিয়ে দিয়ে এলাম। সন্দির-অপব্ব জ্যোৎস্নায় মনে ভাবছিলাম ভরতদের ঘরে বসতো &9ህ;