পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্ভাব্যতাকে রােপ নেওয়ার ভার নিতে হবে কথাশিলপীকে। তাকে বাস করতে হবে সেখানে, মানষের হট্টগোল, কলকোলাহল যেখানে বেশী ; মানষের সঙ্গে মিশতে হবে ; তাদের সখে-দঃখকে বঝতে হবে। যে বাড়ীর পাশের প্রতিবেশীর সত্যিকার জীবনচিত্র লিখেছে, সে সকল যাগের সকল মানষের চিত্ৰই একেছে—চাই কেবল মানষের প্রতি সহানভূতি, তাকে বঝাবার ধৈৰ্য্য। ফ্লবেয়ার বলেছেন, মানষে যা কিছ করে, যা কিছ ভাবে, সবই সাহিত্যের উপাদান, তাই তাকে লিখতে হবে ; শোভনতার খাতিরে তিনি যদি জীবনের কোন ঘটনাকে বাদ দেন, চরিত্রের কোন দিক ঢেকে রেখে অঙ্কিত চরিত্রকে মাধৰ্য্য-মন্ডিত বা শ্রেষ্ঠ করবার চেন্টা করেন—ছবি অসম্পপণ্য থেকে যাবে। 'এমা বোভারি’র স্রম্পটার উপযক্ত কথা বটে ! কিন্তু এই বাস্তবতার কি একটা সীমা নেই ? জীবনের নগন চিত্ৰ-দিবসনা ভীমা ভয়ঙ্করী। ভৈরবীর মত করাল-সে চিত্র মানষের মনে ভয় সঞ্চার করে, অবসাদ আনে, জগতপস্যার উদ্রেক করে—সাধারণ রসবিলাসী পাঠকের সাধ্য নয়। সে কঠিন নিম্ঠর সত্যের সম্পমখীন হওয়া। সায্যের অনাবত তাপ পথিবীর মানষে সহ্য করতে পারে না, তাই বহমাইলব্যাপী বায়মন্ডলের আবরণের মধ্য দিয়ে তা পরিস্রত হয়ে, মোলায়েম হয়ে তবে আমাদের গহ-অঙ্গনে পতিত হয় বলে রৌদ্র আমাদের উপভোগ্য, প্রাণীকুলের উপজীব্য। সে আবরণ দেবেন। শিলপী তাঁর রচনায়। নিব্বাচনের সবাধীনতা তিনি ব্যবহার করবেন শিলপীর সংযম ও দন্টি নিয়ে। সাহিত্য-সংশিলান্ট আর দই একটি মাত্ৰ কথা বলে আমি শেষ করব। সাহিত্যে প্রোপাগাণডার সােথান সম্পবন্ধে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। আমাদের বক্তব্য এই যে, সমাজ-সংস্কারই হোক, দেশপ্রেমই হোক, অথবা অন্য কোন সমস্যাদি সম্পবন্ধে মতবাদই হোক, সব কিছই প্রোপাগাণডা সাহিত্যের মধ্য দিয়ে একটা বিশেষ সীমার ভেতরে থেকে করা যেতে পারে, যদি তা তারপরও সাহিত্যই থাকে, কোন প্রচারবিভাগের বিশদ চিত্তাকষর্ণীক প্যাম্পফলেটের মতন না হয়ে ওঠে। সাহিত্য ও আর্টের জাত নষ্ট হয় তখনি, যখন এ অপরতার কোন উদ্দেশ্য সাধতে গিয়ে আপনার মািল সাধনা—অর্থাৎ সমসাময়িক সমস্যারও অতীত শাশবত সৌন্দৰ্য্য-সন্টির প্রেরণা থেকে বিচ্যুত হয় । মনে রাখতে হবে সাবধৰ্ম্মম ত্যাগ করা ভয়াবহ-অনেক কিছর মত এক্ষেত্রেও। তারপর আমরা আনতে পারি।--সাহিত্যের সঙ্গে নীতি ও কল্যাণবন্ধির সম্পকের কথা। সাহিত্যে সনেীতি, দনীতি, শলীলতা, অশলীলতা ইত্যাদি নিয়ে প্রত্যেক দেশের সাহিত্যের ইতিহাসেই অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। শলীলতা ও অশলীলতা সম্পবন্ধে আমরা এই বলতে পারি যে, বাইরের পথিবী এবং মানষের জটিল জীবন-কাহিনী তাদের অন্তনিহিত রসরাপে তখনই আমাদের অভিভূত করতে পারে, যখন আমরা এদের একই সঙ্গে ইন্দ্ৰিয়ের মধ্য দিয়ে এবং ইন্দ্ৰিয়াতীতরীপে আমাদের মানস চেতনায় পাই। এইজনা আদিরসও যখন মধার রসে পরিণত হয়, তখন তা হয় আর্ট। কামজ প্রেমের কথা বলতে গিয়েও কবি যখন নিরাসক্ত কৃতাহলে অতীন্দ্ৰিয় ব্যঞ্জনার সন্টি করে চলেন, তখনই তা হয় আট। তখন তা শলীলাও থাকে না, অশলীলও নয়। সঙ্কীর্ণ অর্থে নৈতিকতার মানদন্ড সাহিত্যের প্রতি প্রয়োগ করা যায় না। অবশ্য, কিন্তু যে বহৎ কল্যাণ-বন্ধি আমাদের সকলের স্রস্টার মনে তাঁর জগৎসন্টির বেলায় ছিল বলে আমরা কলপনা করি, রসাম্রস্টাকে ধ্যাননেত্রে তাকে পেতে চেন্টা করা প্রয়োজন। কারণ, কি জীবনে, কি সাহিত্যে-শক্তি ও প্রতিভার সঙ্গে প্রেম ও সত্য ԳՀ