পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বন্ধি যক্ত না হলে পথায়ী কিছর প্রতিষ্ঠা সম্পভব হয় না। সমাজের প্রচলিত নীতি-প্রথাকে সাহিত্যিক নিৰ্ম্মম আঘাত করতে পারেন, কিন্তু শািন্ধ সত্যের জন্যই পারেন, ব্যক্তিগত খেয়াল চরিতাৰ্থ করবার জন্য নয়। সাহিত্যিক বাস্তব জগতের প্রতি বিশবিস্ত থেকে তার চিত্র অাঁকবেন। কিন্তু তাঁর অন্তদন্টি যথেষ্ট পরিস্কার হলে তিনি দেখবেন যে বাইরের জগতে যা ঘটে, তার চেয়ে লেখকের মনের জগতে আর এক মহত্তর ব্যঞ্জনাময় বাস্তব আছে ; এবং যদিচ মানষের জীবনও মোহনীয়রাপে জটিল, কারণ পাপ দৰবলতা পদস্খলনের কাহিনী তার পক্ষে অত্যন্ত সবাভাবিক, তবও সে যেখানে বড় সেখানে তার রােপ কেবল এই-ই নয়। তা ছাড়া, বহত্তর অর্থে নীতিবোধ, জীবন সমাজের মািলসত্তার সঙ্গে জড়িত ; সাহিত্য থেকে তাকে কি আমরা বিচ্ছিন্ন করতে পারি! মাঝে মাঝে একটা কথা শোনা যায় যে, আমাদের মত পরাধীন দরিদ্র দেশের সঙ্কীণ সমাজের মধ্যে কথাসাহিত্যের উপাদান তেমন মেলে না। “আমাদের দেশে কি আছে মশাই, যে এ নিয়ে নতুন কিছ লেখা যাবে, সেই থোড় বড়ি খাড়া খাড়া বড়ি থোড়”—একথা অনেক বিজ্ঞ পরামর্শদাতার মাখে শোনা যায়। এই ধরনের উক্তির সত্যকার বিচার করতে বসলে দেখা যায়—এসব কথা মাত্র আংশিক ভাবে সত্য। বাংলাদেশের সাহিত্যের উপাদান বাংলার নরনারী, তাদের দঃখদারিদ্র্যময় জীবন, তাদের আশা-নিরাশা, হাসি-কান্না-পালক-বহির্জগতের সঙ্গে তাদের রচিত ক্ষদ্র জগৎগলির ঘাত-প্রতিঘাত, বাংলার ঋতুচক্ৰ, বাংলার সন্ধ্যাসকাল, আকাশ-বাতাস, ফলাফল-বাঁশবনের, আমবাগানের নিভৃত ছায়ায় ঝরা সজনে ফল বিছানো পথের ধারে যে সব জীবন অখ্যাতির আড়ালে আত্মগোপন করে আছে —তাদের কথাই বলতে হবে, তাদের সে গোপন সখদঃখকে রােপ দিতে হবে।

  • “সাহিত্যের কথা” সমিতির রেখা গ্রন্থের প্রথম সংস্করণে ছিল না। ক্যালকাটা পাবলিশাস, ১o শ্যামাচরণ দে সন্ট্রীট, কলিকাতা ১২। প্রকাশিত পরবত্তী সংস্করণে উহা সংযোজন করা হয় । উহা বিভূতিভূষণ প্রদত্ত অভিভাষণের সংক্ষিপ্ত রূপ। নিবন্ধটি গ্রন্থের অঙ্গীভূত হইবার পক্ষেবা আনন্দবাজার পত্রিকায় “সাহিত্যের খবর” নামক বিভাগে প্রকাশিত হয়। ১৩৬৮ সালের ২৮ ভাদ বিভূতিভূষণের জন্মদিনে প্রকাশিত “আমার লেখা” গ্রন্থেও ‘সাহিত্যের কথা” অন্তভুক্ত হয়।

CC) দিনলিপি ২/সমতির রেখা ৫(ক)