পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দলবল জীব মনে করার মধ্যে যে কোনো সত্য নেই, এটা সাহস করে এরা মেনে নিতে পারেন না। নীরদদের বাড়ি কাল সন্ধ্যার সময় বসে একটা প্ৰবন্ধ পড়ছিলাম একখানা ইংরেজী পত্রিকাতে। এই কথাই শািন্ধ মনে হোেল আমরা জীবনে একটা এমন জিনিস পেয়েচি, যা আমাদের এক মহত্তে সাংসারিক শান্তিদ্বন্দেবর ওপর এক শাশবত আনন্দ-জীবনের সস্তরে উঠিয়ে দিতে পারে-অনন্তমখী চিন্তার ধারা প্রবাহিত করে দেয়, এক মহত্তে সংসারের রঙ বদলে দেবার ক্ষমতা রাখে। যখনই জগতের প্রকৃত রপটির যে অংশটকু আমরা চোখে দেখতে দেখতে যাই তা সমগ্রতার দিক থেকে আমরা দেখতে পাই, পরিপণভাবে জীবনকে আসবাদ করবার চেন্টা করি।-ভূতত্ত্ব, প্রাণীতত্ত্ব, আকাশ, নীহারিকা, নক্ষত্র, অমরত্ব, শিল্প, সৌন্দৰ্য্য, পদার্থতত্ত্ব, ফলাফল, গাছপালা, অপরাহু, জ্যোৎস্না, ছোট ছেলেমেয়ে, প্রেম-তখনই বঝি এই বিশেবর সকল সন্ট পদার্থের সঙ্গে একত্ব অনভব করা ও চারিধারে আত্মাকে প্রসারিত করে দেওয়াই জীবনের বড় আনন্দ। ‘আনন্দ উপনিষদের পারিভাষিক শব্দ, লঘ্য অর্থে সংসারে চলে এসেচে। কিন্তু আনন্দ কথার প্রকৃত অর্থ উচ্চ জীবনানন্দ। “আনন্দান্ধেব খল মুন্টু বুৰণি ভুতানি জায়ন্তে" এখানে আনন্দের কােনাে বৰ্তমান প্রচলিত সাধারণ অথ নেই। আজ খাব বেড়ানো হোল। প্রথমে গেলাম বন্ধাের ওখানে। তার মোটরে সে প্রবাসী অফিসে আমায় নামিয়ে দিয়ে গেল। সেখান থেকে গেলাম সায়েন্স কলেজে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করবার পর ডাঃ রায় এলেন। তিনি সিডিকেটের মিটিংএ গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে খানিকটা কথাবাত্তার পর দজনে বেরিয়ে পড়া গেল, একেবারে সোজা সারকুলার রোড দিয়ে মোটর হাকিয়ে প্রিন্সেপ ঘাট। বেশ আকাশের রঙটা, কদিন বান্টির জবালায় অতিভ্ৰষ্ঠ করে তুলেছিল, আজ আকাশ পরিস্কার হয়েচে, গঙ্গার ওপারে রামকৃষ্ণপর ময়দাকলগালোর ওপরকার আকাশটা তুতে রঙের, পশ্চিম আকাশে কিন্তু অস্তসায্যের রঙ ফোটেনি—কেন তা জানি না। ডাঃ রায়ের সঙ্গে বৰ্ত্তমান কালের তরণ সাহিত্য সম্পবন্ধে বহনক্ষণ আলোচনা হোল-তাঁর মত ভারী পাকা ও যক্তিপর্ণ। সকাল সকাল ফিরলাম, তিনি আবার বৌবাজারের দোকানটা থেকে খাবার। কিনলেন। আমায় বললেন, মাঝে মাঝে দেখা করবার জন্যে। জীবনে যদি কাউকে শ্রদ্ধা করি, তবে সে এই ডাঃ পি. সি. রায়কে। সত্যিকার মহাপরিষ। বহ সৌভাগ্যে। তবে দশানলাভ ঘটে, একথা আমি মনেপ্রাণে বিশ্ববাস করি। অধিকক্ষণ কথাবাত্তা কইবার পরে মনে হয় যে সত্যিই কিছ নিয়ে ফিরচি। আজ প্রবাসীতে গিয়ে বইটার* প্রথম ফৰ্ম্মােটা ছাপা হয়েচে দেখে এলাম। সে হিসাবে আমার সাহিত্য-জীবনের আজ একটা সমরণীয় দিন। ওটা ওদের ওখানে কাল শনিবারে পড়া হবে। ডাঃ কালিদাস নাগ ও সনেীতিবাবা কাল থাকবেন। বলেচেন । সেখান থেকে গেলাম দক্ষিণাবাবর গািহ-প্রবেশের নিমন্ত্রণে কালীঘাটে। সরেশানন্দের ছোট একবছরের খোকাটি কি সন্দির হয়েচে ! ওকে কোলে নিয়ে চাঁদ

  • পথের পাঁচালী।