পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখালাম-ভারী তৃপ্তি হােল তাতে। এরা সব কোথা থেকে আসে ? কোন মহান আর্টিস্টের সন্টি এরা ? অনন্ত আকাশে কালপরিষের জ্যোতিৰ্ম্মময় অনল জবলতে দেখোঁচি, পািব্ব দিকপালের আগন-অক্ষরে সঙ্কেত দেখোঁচি, কিন্তু সে রন্দ্র বিরাটতার পিছনে এই সব সরকুমার শিলপ কোথায় লকানো থাকে ? কি হাসি দেখলাম ওর মখে! কি তুলতুলে গাল!.. একটা উপমা মনে আসচে। আমাদের দেশের বারোয়ারীর আসরে কে যেন রবিবাবর মক্তধারা থেকে ‘নমো যন্ত্র, নমো যন্ত্র, নমো যন্ত্র’ ওই গানটি আবত্তি করচেন। ওর ধবনির সঙ্গে ভাবের অপব্ব যোগ, ওর মধ্যে যে অদভুত ক্ষমতা ও চতুৰ্য্য প্রকাশ পেয়েচে, তা কে বঝচে ? কি হয়তো এক কোণে এক নিরীহ ব্ৰাহ্মণপন্ডিত বসে আছেন—আসর-ভরা দোকানদার দলের মধ্যে তিনিই একমাত্র নীরব রসগ্রাহী, কবির ক্ষমতা বঝাচেন তিনি। চোখ তাঁর জলে ভাসচে, বািক দলে উঠচে । বিশব-সন্টির এই অসীম চাতুৰ্য, এই বিরাট শিলপ-কৌশল এই ইন্দ্ৰিয়াতীত সৌন্দৰ্য্য-ক’জন বঝবে ? দোকানদার দলের মত হাততালি দিচ্চে হয়তো সবাই । কিন্তু কে মন দিয়েচে ওদিকে—কে ভাবচে এই অপব্ব, অবাচ্য, অভাবনীয়, অদ্ভুত সন্টির কথা.মানষের অভিধানে যাকে বর্ণনা করবার শব্দ নেই। q<o-\bToror qalÇr GoITGrl Sir Oliver Lodge, Flammarion, Jeans, Swinburne, রবীন্দ্রনাথ, এদের নাম করা যায়। শ্ৰীরামকৃষ্ণের কথায় “এদের ফাৎনাতে ঠোকরাচ্চে"। আনন্দ ! আনন্দ ! “আনন্দান্ধেব খল- ইমানি সব্বণি ভুতানি জায়ন্তে" কাল প্রবাসীতে “পথের পাঁচালী’র কয়েকটি অধ্যায় পড়া হলো। ডাঃ কালিদাস নাগ ও সনেীতিবােব উপস্থিত ছিলেন, আরও অনেকে ছিলেন। সকলেই ভারী উপভোগ করলেন, এইটাই আমার পক্ষে আনন্দের বিষয়। এ বইখানার আট অনেকেই ঠিক বঝতে না পেরে ভুল করেন, দেখে ভারী আনন্দ হোল সজনীবাব, কাল কিন্তু ঠিক আর্টের ধারাটা আমার বঝে ফেলেচে। আটকে বন্ধির চেয়ে হৃদয় দিয়ে বৰ্ব্বতে চেন্টা করলে বোঝা যায় বেশী। এবার বাড়ি গিয়ে গত শনিবারে অনেকদিন পরে কি আনন্দই পেলাম। মটর লতা, কাঠবেড়ালী, নাটাফল—বষাসরস লতাপাতার ভরা সগন্ধ। কাল প্রবাসী থেকে গিরীনবাবরে বাড়ি, সেখান থেকে বিন সাহেবের কাছে অনেকদিন পরে। বেশ দিনটি কাটলো। বিভূতির সঙ্গেও দেখা। আজ সকালে উঠে অনেকদিন পরে ইসমাইল।পরের সেই কীৰ্ত্তনের গানটী মনে পড়ল..“যাত রহি” শেষ দটো কথা ছাড়া আর আমার কিছ মনে নেই, অথচ গানের ভাবটা আমি জানি। ভারী আনন্দ হোল আজ মনে। শািন্ধই মনে হচ্ছিল জীবনটাকে আমরা ঠিক চোখে অনেক সময় দেখতে শিখিনে বলেই যত গোল বাধে । জীবন আত্মার একটা বিচিত্র, অপব্ব অভিজ্ঞতা। এর আসবাদ শােধ এর অনভূতিতে। সেই অনভূতি যতই বিচিত্র হবে, জীবন সেখানে ততই সম্পণে, ততই সাৰ্থক।