পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আছে ঠাকুর দেখবার জন্যে। ছেলেবেলার মত বাঁওড়ে। বাচ হচ্চে। মনে পড়ে অত্যন্ত শৈশবের সেই শালক-ফল তোলা, তারপরে বড় হয়ে একদিনের সেই বন্ধর কাছে চার পয়সা ও মড়কির কাহিনীটা। ফিরে আসতে আসতে মনে হলো এতক্ষণ আমাদের দেশে পথে পথে নদীর ধারে প্রিয় পাড়াগাঁয়ের সপরিচিত ভাঁট-শেওড়ার বনে অপরাহ্রের ছায়া ঘনিয়ে এসেছে, সেই কাটতিক্ত অপব্ব সম্রাণ উঠচে-সেই পাখীর ডাক-এখানকার মত দরপ্রসারী উচ্চাবচ পাথরে জমি ও শাল মহীয়া পলাশের বন সেখানে নেই, এরকম পাহাড় নেই স্বীকার করি, কিন্তু সে-সব অপব্ব মধর আরামই বা এখানে কোথায় ? মনে পড়ে বহকাল পাবে এই সময়েই শৈশবের সেই “মাধবী কঙ্কণ” ও “জীবন প্রভাত”—সেই পাকাটির অটি ও ছিরে-পাকুর। বইখানা সেদিন শ্যামাচরণদাদার কাছে চেয়ে নিয়ে এলাম। সে-সব দিনের অপব্ব মধর সমিতি-সারাজীবন অদশ্য ধপবাসের মত ঘিরেই রইল। এই নিয়েই তো জীবন-এই চিন্তাতে, এই সমিতিতে, এই যোগে। এই মনন ও ধ্যান ভিন্ন উচ্চ জীবনানন্দ লাভ করবার কোনো উপায় নেই। এ আমার জীবনের পরীক্ষিত সত্য। নন্দন পাহাড় থেকে ফিরে এসে দেখলাম অমরবাবার বাংলোতে বিজয়াসম্মিলনী বসেচে। গোল চাতালটাতে জ্যোৎস্নার আলোতে চেয়ার পেতে বিমানবাব, রবিবাব, অমরাবাব, কারণাবাব সবাই বসে আছেন। বিজয়ার আলিঙ্গন ও কুশলাদির আদান-প্রদানের পরে চা ও খাবার খাওয়া হোল। একটা পরে ফকিরবাব এলেন। অনেকক্ষণ ধরে সাহিত্যিক আলোচনা চলল। আমি ও বিমানবাবরে জামাতা রবিবােব অনেকক্ষণ ধরে টলষ্টয় ও রশীয় সাহিত্যিকদের সম্পবন্ধে আলোচনা করলাম। রবিবােব আমার পথের পাঁচালী’র প্রশংসা করছিলেন। বললেন, অনেকে বলচেন, “পথের পাঁচালী’ শেষ হোলে বিচিত্রা ছেড়ে দেবো। আমি ও করােণাবাব ঘরের মধ্যে এসে বসে সিগারেট খেলাম ও ফকিরবাবর বিরদ্ধে আমাদের ঝাল। ঝাড়তে শার করলাম। তারপরে এক পশলা বান্টি হয়ে সেটা একটি কমে গোল-বিমানবাব ও রবিবাব চলে গেলেন—আমরাও পণ্য বাবার বাড়িতে কীৰ্ত্তন শনিতে গেলাম। দক্ষিণা ঘোষ বলে একজন ভদ্রলোক সেখানে বৈষ্ণব ভক্তিশাস্ত্র সম্পবন্ধে অনেক কথা বলছিলেন--আমার বেশ লাগলো। খাব জ্যোৎস্নার মধ্যে দিয়ে জোরে মোটর হাঁকিয়ে অনেক রাত্রে বাংলোতে ফেরা গেল। বেশ লাগছিল। কাল সকালে সম্পভবতঃ গিরিডি হয়ে ঐ পথে মোটর-বাসে হাজারিবাগ ও সেখান থেকে রাঁচী হয়ে কলকাতায় ফিরবো। দেখি কি হয়। আকাশ পরিস্কার না থাকলে कथाG शI(दा का । অমরবাবর দৌহিত্র অমিতের কথাগালি ভারী মিষ্টি। তিন বৎসরের শিশ। বেশ লাগে ওকে । এইমাত্র সন্ধ্যা ছাঁটার দিল্লী এক্সপ্রেসে দেওঘর থেকে ফিরে এলাম। সারা দিনটা কাটল বেশী। বড় রোদ ছিল। কবীণাবাব সারা পথ কেবল গানের বই বার করেন আর আমাকে এটা ওটা গাইতে বলেন-করণাবাব সম্পপণ্য বেসরে গাইতে থাকেন। মধপরে আমার নেমে উশ্ৰী জলপ্রপাত দেখতে যাবার কথা ছিল, কিন্তু উপেনবাব নামলেন না বলে আমিও আর নামলিম না। তাতে আমার মন খারাপ ছিল, সেটা দর করে দেওয়ার জন্যে আমার মাখের সামনে একটা সিগারেট ধরলেন। তারপর আবার চললো তাঁর সেই বেসরে গজল গাওয়া। শিশিরকুমার ঘোষের