পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এলাম--তারপর গেলাম জটেমারির পলিটাতে। ঝির ঝিরে বাতাসে শরীর জড়িয়ে গেল। তারপর এক বড় অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হল, এমন এক অপব্ব আনন্দে মন ভরে উঠল, সারা গা এমন শিউরে উঠল—সে পালকের, সে উল্লাসের তুলনা হয় না—গত কয়েক মাসের কেন, সারা বৎসরের মধ্যে ওরকম আনন্দ পাই নি। আজ চলে যাবো, তাই বিদায় নিলাম--বিদায় জ্যাঠামশায়ের পোড়ো ভিটে, বিদায় আমার গ্রাম, বিদায় ইছামতী, আবার তোমাদের সঙেগ কবে দেখা হবে জানি না, আর দেখা হবে কিনা তাও জানি না, কিন্তু তোমার ফলে জলে পল্ট হয়েচি, তোমার অপরােপ সৌন্দয্যে এমন সর্বপ্ন-অঞ্জন মাখিয়ে দিয়েছিলে দশ বৎসরের বালকের চোখে, তামার গাছপালার ছায়াতলে, তোমার পাখীর কল-কাকলীতে জীবন-নাট্যের অংক শর, বিদায়, বিদায়—-যেখানে থাকি তোমাদের কথা কি কখনো ভুলবো ?... মনে হয় যাগে যাগে এই জন্মমােত্যুচক্ৰ কোনো এক বড় দেব-শিলপীর হাতে আব্বত্তিত হচ্চে, হয়তো দা হাজার বছর আগে জন্মেছিলাম ঈজিপ্টে, যেখানে নলখাগড়ার বনে, শ্যামল নীল (Nile) নদের রৌদ্রদীপ্ত তটে কোন দরিদ্র ঘরের নাi. বোন, বাপ, ভাই, বন্ধ বান্ধবদের দলে এক অপব্ব শৈশব কেটেচে, তারপর এতকাল পরে আবার ষাটটি বছরের জন্যে এসেচি-এখানে আবার অন্য মা, অন্য বাপ, অনা ভাই-বোন, অন্য বন্ধ জন। পাঁচ হাজার বছর পরে আবার কোথায় চলে যাবো কে GIGN p as Cycle of Birth and Death far frirot (SCDN via six কলপনা করে নিয়েচি- তিনি এক বড় শিলপী। এই সকল জন্মের সখ-দঃখ, আশাআকাঙ্ক্ষা হয়তো কোন দীর জীবনের উন্নততর, বহত্তর, বিস্তৃততর অবস্থায় সব মনে পড়বে—সে এক মহনীয়, বিপােল, অতি করণ অভিজ্ঞতা। কে জানে যে আবার এ পথিবীতেই জন্মাবো। ওই যে নক্ষত্রটা বটগাছের সারির মাথায় সবে উঠেচে – ওর চারি পাশে একটা অদশ্য গ্রহ হয়তো ঘরচে, তার জগতে যেতে পারি।-বহ, বছরের Globular cluster-দের জগতে যেতে পারি-কে বলবে এসব শধই কলপনা-বিলাস ? এ যে হয় না তা কে জানে ? হয়তো নিছক কলপনা নয় এসব-বহত্তর জীবন-চক্ৰ যাগে যাগে কোন অদশ্য দেবতার হাতে এ ভাবেই আবত্তিত হচ্চে। শত শত জন্মমােত্যুর মধ্য দিয়ে যাঁর চলাচলের পথ—জয় হউক সে দেবতার, তাঁর গতির তেজে সম্পমাখের ও পশ্চাতের অমক্তির অন্ধকার জ্যোতিৰ্ম্মময় হউক, নিত্যসাহিটি, জীয়মান হউক—তাঁর প্রাণ-চক্রের নিত্য আবৰ্ত্তনশীল বিশাল পরিধিতে।। গান গন করে বানিয়ে বানিয়ে গাইলাম, আপনিই মাখে এসে গেলঃ‘গভীর আনন্দরাপে দিলে দেখা এ জীবনে হে অজানা অনন্ত-” নিজেকে দিয়ে বঝেচি তুমি কত বড় শিল্পী, নিজের দণ্টি দিয়ে বঝেচি তুমি কত বড় দ্রািন্টা, নিজের সন্টিকে দিয়ে বঝেচি তুমি কত বড় স্রষ্টা। হঠাৎ সারা দেহ এক অপব্ব আনন্দে ভরে উঠল-ওপারে মাধবপরের বটগাছের সারি, বেলেডাঙ্গার গ্রামের বেণ বনশীৰ্ষ সান্ধ্য বাতাসে দলচে, আউশধানের ক্ষেতের আইল-পথ বেয়ে কৃষক-বধ মাটির কলসী নিয়ে জল ভরতে আসচে, আইনদি মোড়লের বাড়ির মাথায় শকতারা উঠেচে—মনে হল আমি দীন নয়, দঃখী নয়, ক্ষদ্র নয়, মোহগ্ৰস্ত জড় মানব নয়, আমি জন্মজন্মান্তরের পথিক-আত্মা। দীর থেকে কোন সদরে নিত্য নািতন পথহীন পথে আমার গতি—এই বিশাল বিশ্বব, এই বিপােলঃ RR