পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫১

আজও আবার তাই। প্রথমে কেদারবাবার সঙ্গে এশিয়াটিকদের অকম্পমাণ্যতা নিয়ে খানিক তর্ক-বিতর্ক হল। উনি বললেন, ‘কেন, জঙ্গিস খাঁ কি বড় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন নি?” আমি বললাম- সেটা one man show মাত্র, কোনো সন্থায়ী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা তিনি করেছিলেন কি ?...প্রবাসী আপিস থেকে আমরা গেলাম অমল হোমের বাড়ি, সেখানে অনেকক্ষণ গল্প-গজেব ও কবিতা আবত্তি হল। অমল হোমের দল্লী বললেন, ‘একটি মহিলা আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান, আপনার ‘অপরাজিত পড়ে—আমি তাঁকে ডাকি,-পাশের ঘরেই আছেন।” মেয়রের নির্বাচন সম্পকে অনেকগলো। নতুন কথা শািনলাম অমল হোমের মখে —যতীন সেনগােপ্ত এবার মেয়র না হলে অনেকে দঃখিত হবে বটে, কিন্তু মেয়র হলে লোকে তাঁর চেয়েও দঃখিত হবে। বাইরে চেয়ে দেখলাম আকাশে মেঘ করেচে— অনেকটা দরের আকাশও দেখা যায়—দরের কথা, দেশের কথা মনে করিয়ে দেয়। এরা বেশ শিক্ষিতা মেয়ে, ধরণ-ধারণ এত মাডিজত ও মধর যে এদের সঙ্গে গ্রামের মেয়েদের-সইমা কি বাড়ি পিসিমা--এদের তুলনা করে হতাশ হতে হয়। একটা ভাঙা কড়া এক জায়গায় বসানো ছিল, বেরবার সময় পায়ে এমন লাগল!.. সেখান থেকে এলাম সরেশবাবার বাড়ি। সেখানে হেম বাগচী ও সবল বসে আছে। সরেশ বাবার সত্ৰী চায়ের উদ্যোগ করতে আমরা নিবত্তে করলাম-কেননা এই-- মাত্র অমল হোমের বাড়ি থেকে আমরা চা, পাঁপর ভাজা, বাদাম ভাজা ও রসগোল্লা খেয়ে আসচি। ফরাসী কবি বোদলেয়ার সম্পবন্ধে খানিকটা কথাবাৰ্ত্তা হল, মোহিতবাব একটা লেখা পড়লেন—তারপর আমরা সবাই এলাম চলে। মোহিতবাবর আবত্তি কি সন্দির! কি সন্দির সন্ধ্যাটা কাটল! আজ সকালে ধজেন্টিবােব এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ও সরেশ চক্ৰবত্তীর সঙ্গে গলপগজেবের পর আসাম মেলে রাণাঘাট এলাম ও সেখান থেকে সাড়ে তিনটার ট্রেনে দেশে এলাম। হাজারির মোটরটা দাঁড়িয়ে ছিল, সহজেই বাজার পয্যন্ত আসা গেল। এসেই কাপড়-চোপড় ছেড়ে গামছা নিয়ে নদীতে গা ধোবার জন্য গেলাম। ভায়ি সন্দর বৈকাল, আকাশের রঙ এমন সন্দের শােধ বর্ষাকালেই হয়। গাছপালার রঙ কি সবজে-রৌদ্রের রঙটা কেমন একটা অদভুত ধরনের, কুঠীর মাঠে গেলাম।--সেই শিমলগাছটার গায়ে কি সন্দির রৌদ্রই পড়েচে- চারি ধারে আকাশের রঙে বড় মাধ করলে । আমাদের ভিটার পাশে যে গাছটা আছে, তার গায়ে খানিকটা হলদে রঙের রোদ লেগে দেখতে হয়েচে অদভুত। মাঠের চারিধারে সবজি গাছপালা, আউশ ধানের সবজি ক্ষেত, সনীল আকাশ, এখনও বৌ কথা-ক' ডাকচে —খব ডাকচে । সৌদালি ফল এখনও কিছ কিছ: आCछ । কাল বৈকালে প্রথম গেলাম সবলবাবদের বাড়ি বাগবাজারে, সেখানে খানিকক্ষণ গলপ-গজবের পরে বিভূতিদের ওখানে গেলাম। বাগবাজার ট্রামে আসবার সময়ে মনে ভাবছিলাম সাতাশ বছর আগে এই বর্ষাকালে, তবে বোধ হয়। এর আরও কিছ পরে —এই জায়গাটি দিয়ে ট্রামে করে যৌতুম বাবার সঙ্গে। তখন আমি নিতান্ত বালক, RĆt