পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নটার সময় অক্ষয়বাব ছোট বৈঠকখানায় রেডিও শনচেন-অন্য বছর যে সময় আগন্তুক ও নিমন্ত্রিতের ভিড়ে সিড়ি দিয়া ওঠা সম্পভব হত না, কোথায় সে উৎসব গেল বাড়ির—যেন দীনহীন, মলিন সব ঘরগলো, সিড়িটা, দালানটা। আমাকে অবশ্য খাওয়ার বিশেষ অনরোধ করা ছিল—অক্ষয়বাব ও খগেনবাব বাইরে নিমন্ত্রণে গেল মেজ খোকাবাবর বাড়ি। অনেক রাত্রে আমি, শীতল, বিভূতি একসঙ্গে বসে নিরামিষ ভোজ খেলাম। রাত বারোটাতে বাসায় ফিরলাম। শয়েচি-চারিধার নিস্তবন্ধ, নিজজন। চাঁদটা পশ্চিম আকাশে নিম্প্রভ হয়ে ঢলে পড়েচে-নক্ষত্রগলে পরিভাকার ও উত্তজবল হয়েচে, "অপরাজিত'র অপর বন্য-জীবনের গোড়াটা লিখচিতাই বসে বসে ভেবে এই বিচিত্র জীবনধারার কথা মনে হল-ভারি আনন্দ পেলাম। আজ জগদ্ধাত্রী পাজার সকালবেলাটি ; মনে পড়ে অনেক বছর আগে এই ঘরেই বসে বসে হাডির ছোট গলপ পড়তুম এইখানে। আজও সেই ঘরটি তেমনি নিস্তবধ, নিশ্চল। কিন্তু পরিবত্তািনও কি কম হয়েচে! তখনকার বিভূতি কত বড় হয়ে গিয়েচে --তখনকার সবাই কে কোথায় চলে গিয়েচে । আগামী রবিবারে সনিীতিবাব, অশোকবাব, আমি ও সজনীবাব-চারজনে ರಾಷ್ಟ್ರ' পাঁচালী’র দেশ দেখতে যাওয়ার কথা আছে বৈকালের দিকে। দেখি 23। এইমাত্ৰ মহেন্দ্রচন্দ্র রায় তাঁর নব প্রকাশিত “কিশলয়’ বইখানা পাঠিয়েচেন, দেখলাম। খব ভাল লাগল বইটি। আজকার দিনটি বেশ ভাল কাটল। সকালের দিকে খাব মেঘ ছিল, কিন্তু দাপরের পরে খাব রৌদ্র উঠল--তখন বেরিয়ে পড়া গেলা-প্রবাসী আপিসে গিয়ে দেখি অশোকবাব ও সজনী দাস বসে। চা পানের পরই সজনীবাব গিয়ে গাড়ি করে সনীতিবাবকে উঠিয়ে নিয়ে এল-পরে আমরা রওনা হলাম। আমাদের গ্রামে। সজনীবাব, অশোকবাব, সনেীতিবাব আর আমি। যশোর রোডে এসে ব্যাটারির তারটা জবলে উঠে একটা অগ্নিকান্ড হত, কিন্তু সনিীতিবাবার কুজোর জল দিয়ে সেটাকে १८ ८66 ।। তারপরই খব জোরে মোটর ছােটল-পথে মাঝে মাঝে রোদ, মাঝে মাঝে ছায়া-- রোদই বেশি। আজ রবিবার, সাহেবরা কলকাতা থেকে বেড়াতে বেরিয়ে এক এক গাছতলায় মোটর রেখে ছায়ায় শয়ে আছে। তারপর পৌছে গেলাম জোড়া-বটতলায়। ওইখানে মোটরখানা রইল, কারণ দিনকয়েক আগে আমাদের গ্রামের দিকে খাব বান্টি হয়েছিল, পথে এখনও একটা একটা কাদা। নেমে কাঁচাপথটা বেয়ে বরাবর চললাম ; সনীতিবাব, কাঁচা কোসো কুল ও সেয়াকুল খেতে খেতে চললেন, অশোকবাব ছড়ি কাটবার কথা বলতেই সজনীবােব চটি ফেলে ছটিল গাড়িতে ছরি আনতে। গ্রামে ঢাকবার আগে এ-ফলের ওফলের নাম সব বলে দিলাম-কাঁঠালতলায় হেলা গাড়িতে গিয়ে সবাই বসল। তারপরে সাইমার বাড়ি গিয়ে কিছ মাড়ির ব্যবস্থা করে একটা আসন পেতে সবাইকে বসালাম। সেখানে খাওয়া ও গলপগজবের পরে আমাদের পোড়ো ভিটোটা দেখে রান্নাঘরের পোতা দিয়ে সবাই নেমে ঘন ছায়ায় ছায়ায় এলাম সলতেখাগী আমগাছের তলায়—সেই ময়না-কাঁটা গাছ থেকে ছড়ি কেটে নিলে অশোকবাব ও সজনীবাব-- পরে তেতুলতলীর তলায় বনের মধ্যে দেখা গেল একটা খাব বড় ও ভাল ময়না-কাঁটা গাছ-সেখান থেকে আর একটা ছড়ি কাটা হল। তারপর প্রায় বেলা গেল দেখে আমি OR