পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খব তাড়াতাড়ি করলাম-ওদের বন থেকে টেনে বার করে নিয়ে গেলাম কুঠিটায়। ছেলেবেলায় গ্রামের জামাইদের ডেকে নিয়ে কুঠি দেখাতুম। তারপর সে কাজটা অনেকদিন বন্ধ ছিল—বহাকাল বন্ধ ছিল। শেষ কাকে নিয়ে গিয়েছিলাম, তা তো মনে হয় না-বাহকাল পরে বাল্যের সে কুঠি দেখানোর পনরাবত্তিটা করলাম। তখন কুঠিটা আমার কাছে খাব গব্ব ও বিস্ময়ের বস্তু ছিল—তাই যে কেউ নতুন লোক আসতো, তাকেই নিয়ে ছটতম কুঠি দেখাতে। আজ বহদিন পরে সজনীবাব, সনীতিবাব ও অশোকবাবকে নিয়ে গেলাম। সেখানে। কুঠিতে কিছ নেই। আজকাল এত জঙ্গল হয়ে পড়েচে যে আমি নিজেই প্রথমটা ঠিক করতে পারলাম না। কুঠিটা কোন জায়গায়। তারপর মাঠ দিয়ে খানিকটা ছািটতে ছটিতে গেলাম। রাস্তায় পড়ে কাঁচিকাটার পালে-এই কাত্তিকমাসেও একটা গাছে একগাছ সৌদালি ফল দেখে বিস্মিত হলাম। সেইখানে ঝোপটি কি অন্ধকারই হয়েচে। সনিীতিবাব চেয়ে চেয়ে দেখলেন —সবাইকে ডেকে দেখালেন-আমার কেন মনে হচ্ছিল। আমার পরিচিত। সলতেখাগী তলায় যেখানে আমিই আজকাল কম যাই সেখানে—আমাদের ভিটোতে-সম্পপণ কলকাতার মানষি সনেীতিবাব, অশোকবাব, এ যেন কেমন অদভুত লাগছিল। সন্ধ্যা হলে তেতুলতলার পথটা দিয়ে সবাই মিলে আবার ফিরলাম-ময়না-কাঁটার ডালগলো। ওখান থেকে আবার নিলাম উঠিয়ে—সইমার বাড়ি এসে দেখি হরেন এসে বসে আছে। সাইমার সঙ্গে সনেীতিবাবার খানিকক্ষণ কথাবাত্তা হল-পরে আমরা বার হয়ে গিরিশাদার বাড়ি এসে গেলাম—তখনই ওদের রান্নাঘরের পৈঠাতে জ্যোৎস্না উঠে গিয়েচে । তারপরে গাজিতলার পথ দিয়ে হেটে মোটর ধরলাম-গোপালনগরের হাট-ফেরত লোক বসে আছে মোটর দেখবার জন্যে। খানকতক স্যান্ডউইচ ও ডালমািট কিছ খেয়ে নেওয়া গেল—কুজোর জল খেয়ে-টেয়ে গাড়ি সন্টার্ট দেওয়া হল। বঙ্কুর বাসায় এসে দেখি তার বেচারীর চৌদন্দ-পনের দিন জবর-বিছানায় শয়ে আছে, বঙ্কু ফোঁড়ায় শয্যাগত—বঙ্কুর বৌ এসেচে, কিন্তু সে বেচারীর দন্দশার সীমা নেই। সেখানে কিছ চা ও খাবার খাওয়ার পরে আমরা সন্দর জ্যোৎস্না-ভরা রাত্রে মাঠের ভিতর দিয়ে রাস্তায় সজোরে গাড়ি চালিয়ে রাত্রি সাড়ে ন’টাতে কলকাতার বাসায় এসে পৌঁছলাম। তখনও বাসায় খাওয়া আরম্ভ হয় নি-ঠাকুর তখনও রাটি গড়চে । আমি এসে টেবিল পেতে লিখতে বসে গেলাম, আর ভাবছিলাম। এই খানিক আগে যখন সন্ধ্যার অন্ধকার ঘন হল তখন ছিলাম। আমাদের বাড়ির পিছনকার গাবতলার পথে—এরই মধ্যে কলকাতার বাসায় ফিরে এত সকাল-রাত্রে বারান্দার আলো জেবলে বসে লিখচি, এ কেমন হল ?. যদি মোটর না থাকতো। তবে কখন পৌছাতাম ?.সন্ধ্যার পরে বেরিয়ে সন্ধ্যার গাড়ি ধরে, বা বনগ্রাম থেকে ট্রেন ধরে, রাত্ৰি বারোটাতে কলকাতা পৌছতম। আমি সত্যই আজ একটা আনন্দ পেলাম। একটা অদভুত-ও সন্দর ধরনের আনন্দ পেলাম। ওরা গিয়েছিলেন “পথের পাঁচালী’র দেশ দেখতে-আমি আমার পরিচিত ও প্রিয় স্থানগলিতে কলকাতার এই প্রিয় বন্ধদের নিয়ে বেড়িয়ে আজি সত্যই একটা নতুন ধরনের আনন্দ পেলাম যা আর কোনো trip-এ পাই নি। ইচ্ছা আছে বৈশাখ মাসের দিকে একবার। এদিকে এসে ওদের নিয়ে ইছামতীতে নৌকা ভ্ৰমণ ও কোনো একটা বনের ধারে বনভোজন করা হবে। সনিীতিবাবও সে 90 मिर्नाव्र्ता°/७ ट्रभाष्टृद्ध-७