পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রন্ধরটা হয়তো আমি উঠে গিয়েছিলাম। অন্যত্র, হয়তো তার সঙ্গে আমার আরও কি কথা হয়ে থাকবে।--কিন্তু সে সব আর আমার মনে নেই। সে লিখতে গেলে বানানো গলপ হয়ে যাবে। এতদিন পরেও ভুলিনি কেবল বহুধার সেই মাতৃমত্তি, তার সেই দরদভরা উদ্বিপন গলার সাের। আমি চাকুরি উপলক্ষে এক বছর পািব্ববঙ্গ আরাকানের মাংড় অঞ্চলে যাই। সে সময় রেলে সন্টীমারে আমার অনেক অদ্ভুত ধরনের অভিজ্ঞতা হয়। অন্য কোনো ভাবে এদের বলা যায় না, এক এই ধরনের ভ্রমণ-কাহিনী ছাড়া। তাই এখানে সেগলি লিপিবদ্ধ করবো। গোড়া থেকেই কথাটা বলি। কলকাতায় বসে আছি, চাকুরি নেই—যদিও চাকুরির চেষ্টায় ঘোরাঘরি করি। একটি মাড়োয়ারী ফাল্মের বাইরে দেখলাম বিজ্ঞাপন দেওয়া আছে, দজন লোক তারা চায়। কোনোদিকে না চেয়ে সোজা ঢকে পড়লাম আপিসের ভেতরে। আপিসটি সািবনামধন্য ব্যবসায়ী কেশোরাম পোদারের। বিজ্ঞাপন দেখে এসোচি শহনে আপিসের দারোয়ান আমায় একটা ছোট ঘরে নিয়ে গেল। সামনেই বসে ছিলেন কেশোরাম পোলদার, তখন আবিশ্যি চিনতুম না। কেশোরাম পোদ্দদার হিন্দীতে জিগ্যেস করলেন-আপনি কি পাস ? বললাম, বি এ পাস করেচি ও বছর। --कि ऊाऊ ? 一夺T郊ef1 --বস্তৃতা দিতে পারেন ? কিসের বক্তৃতা ? ভালো বঝতে পারলাম না, কিন্তু চাকুরির বাজার যেমন কড়া, তাতে কোনো কিছতেই হঠলে বা ভয় খেলে চাকুরিপ্রাপিস্তর যা-ও বা সম্পভাবনা ছিল তাও তো গেল। এ অবস্থায় বস্তৃতা তো সামানা কথা, কেশোরামজি যদি জিগ্যোস করতেন “আপনি নাচতে জানেন ?” তা হলেও আমার মািখ দিয়ে হাঁ ছাড়া না। বেরতো না। সতরাং বললাম, জানি। -আচ্ছা, আপনার ঠিকানা দিয়ে যান, কাল বেলা দশটার সময় আসবেন। পরদিন দশটার সময় কেশোরামবাবার আপিসে গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য। আমার মতো আরও পঞ্চাশ-ষাটটি বেকার কেশোরামবাবার খাস বাইরের হলে অপেক্ষা করচে। এরা সবাই বস্তৃতা দেবে আজ এখানে। বকলম, সবারই মরীয়া অবস্থা। বক্ততা বক্ততাই সই। আমার পর্বে একে একে আট-দশজন লোকের ডাক পড়লো। এদের মধ্যে বন্ধ থেকে ছোকরা পর্যন্ত সব রকমের লোকই আছে। লক্ষ্য করে দেখলাম। কেউ দ’ মিনিট পরে ফিরে আসচে, কেউ আসছে পাঁচ মিনিট পরে-কেউ বা ঢািকবা মাত্র বেরিয়ে আসচে । অবশেষে আমার ডাক পড়লো। কেশোরামজি দেখলাম। তাঁর খাস কামরায় নেই, ওদিকের বারান্দায় দীর কোণে একখানা চেয়ারে তিনি বসে। কাছে যেতেই বললেন, আপনি কিছ বলেন --ইংরিজিতে না বাংলাতে ? -বাংলায় বলেন V