পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করেচি হয়তো সে-দিন মালিপাড়ায় মাজ খাতুনের উপর পালিসের অত্যাচার করার কথাটা খবরের কাগজে পড়বার দিনটা-তারপর অনেকদিন হয় নি। সন্ধ্যার নিস্তব্ধ ও ধন্সর আকাশের বহরদার প্রান্তের আমাদের ভিটাটার কথা মনে হল একবার...বেশ দেখতে পেলাম। সেখানে ঘন ছায়া পড়ে এসেচে—বনে সগন্ধি উঠচে হেমন্তের দিনে-সেই ভিটা থেকে একদিন পথে, ঘাটে, বৈকালের ছায়ায়, দাপরের রোদে যে আনন্দ-জীবনের শর, আমি এই ভাবে মগধ হই, তা এখনও আটট, অক্ষশ্ন রয়েচে—আরও পরিপণভাবে দেশে বিদেশে তার গতি নিত্য নবতর শপথে । আকাশের দিকে চাইলাম—মাথার উপর ধন্সর আকাশে একটি নক্ষত্র মিট-মিট করচে। সঙ্গে সঙ্গে কালকার থিয়েটারে শোনা গানটা গাইলাম, জনতার মাঝে জনগণ প্রতি, বক্ষের মাঝে দাপ্ত মন”। দেবব্রতের মত ক্ষদ্র ও সদশ্যন এক দেবশিশাের ছবি মনে উঠল, ঐ ছবি বিশেবর অজানা-অচেনা পারিপাশিবকে অবস্থার মধ্যে সে বালক তার অপব্ব শৈশব যাপন করচে আনন্দো সহাস্য কলরবে, দায়িত্বহীন কৌতুকের উচ্ছৰাসে। তারপরে তার জীবনের সে সব বহবষব্যাপী বিরাট কৰ্ম্মযজ্ঞ, সে গভীর বেদনাপণ্যে ট্রাজেডি—কত যাগব্যাপী দঃখ-সখের শার-পথিবীর মানষেরা যা কোনো দিন ধারণাই করতে পারে না। উঃ, সে কি অদভূত অনভূতিই হল যখন এ ছবি আমার মনে উঠল। আজ বাবলাম। এই অনভূতিই আসল জীবন। আমি নিরানন্দ দিনগলিতে দেখোঁচি মন কিছতেই আনন্দ পেতে চায় না-টেনেন্টনে কত করে, কত নক্ষত্র জগৎ, এ, ও, নানা ব্যাপারের মধ্য দিয়ে জোর করে আনন্দ আনতে হয়, তা যাও বা একটি আধটা আনে—তাতেই তখন মনে হয়, না জানি কত বড় অনভূতিই বা হল। কিন্তু আসল ও সত্যিকার আনন্দের মহত্তে বোঝা যায়। সে অনভূতি ছিল অগভীর, মেকি, টেনে-বনে আনা। আসল আনন্দকে জোর করে, মনকে বঝিয়ে, তাক করে আনতে হয না তা আজ বঝেচি—সে সহজ-অৰ্থাৎ Spontaneous. আর ও অনভূতি যার জীবনে না হয়েচে- অর্থের মানে, যশের প্রাচায্যে তার দীনতা ঘোচাতে পারে না। “অপরাজিত’ উপন্যাসের বন-ভ্ৰমণ লিখচি আজি। কাল স্কুল কমিটির মিটিং-এ ওরা সবোধবাবকে নোটিস দিলে- আমি আগে জানলে হতে দিতাম না-আমায় আগে ওরা জানায়ও নি, যদিও সাহেবের কোনে দোষ ছিল না, সাহেব আমাকে জানাবার কথা বলেছিল সরেশবাবকে। শেষকালে চেন্টা করেও কিছ করা গেল না-বেচারীকে যেতেই হল। এই বেকার-সমস্যার দিনে একজন Young man-এর চাকরি এভাবে নেওয়া বড় খারাপ কাজ, মনে বড় কািট হল.সবোধবাব মািখটি চন করে বসলো কাল রাত্রে, কি করি আমার তো আর কোনো হােতই নেই। আশচয্যের বিষয় আজ পয়লা অগ্রহায়ণ, কিন্তু এত গরম যে সকালে কাত্তিক পজাব ছাটির দিনটা বলে রামপ্রসন্নর ওখানে বেড়াতে গেলাম। সেখানে সরেশবাবর আগ্ৰা ভ্রমণের গল্প শনে ফিরে এসে, বেলা আটটার সময় এত গরম বোধ করতে লােগলাম যে, তাড়াতাড়ি নাইতে গেলাম—এবং মনে খাব আনন্দ হল, আরাম পেলাম বালতির পর বালতি ঠান্ডা জল মাথায় দিতে লাগলাম—এত গরম। এ সময়ে এত গরম আর কখনো কলকাতায় দেখোঁচি বলে তো মনে হয় না। OG;