পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৫

নি। জীবনে সেই প্রথম শোক। সে কি অপব্ব অনভূতির দিনগালো—তার কি তুলনা আছে ? হাজার বছর বাঁচলেও কি সে সব দিনের কথা ভুলবো কখনও 1. এই দীঘ ষোল বছরের মধ্যে মাঝে মাঝে কথাটা মনে পড়েই কি অদ্ভুত আনন্দ ও প্রেরণা পেয়েচি! বাইরের অন্ধকার আকাশটার দিকে চেয়ে ফিরে দাঁড়ালাম। কি অদভুত যে মনে হচ্চিল! ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্চে, কোন মহাশক্তির বিরাট কন্দকক্ৰীড়া যেন এই বিশ্বব্যৱহ্মান্ড ও তার প্রাণীদলের উত্থান-পতনে—যাগ-যািগান্তর ধরে প্রাণীদল তাদের অতি সত্যকার হাসি-অশ্ৰ সখ-দঃখ ধরে, কোথায় ভেসে চলে গিয়েচে-ওপরে সব সময় লক্ষ বৎসর ধরে এই মহাশক্তিটি তার বিদ্যুৎ, চৌম্বকশক্তি, জানা অজানা কত শক্তি নিয়ে কোন কাজ করেছেন তা বঝতেও পারাচি নে আমরা। মোটে তো পয়ত্রিশ বছর এই ব্যাপার দেখচি—তাও না জ্ঞান হয়েচে আজ ছাব্বিশ-সাতাশ বছর। লক্ষ বৎসরের তুলনায় সাতাশ বৎসর কতটকু ?...সত্যিই এমন সব জীব আছেন, যাঁদের তুলনায় এই পয়ত্ৰিশ বছরের আমি—আমার সন্ট বালক অপর মতই অবোধ, অসহায়, কৃপা ও করণার পাত্ৰ— নিতান্ত শিশ! কি জানি, কি বঝি ?...ক’ত আবোল তাবোল ভাবি, কোনোটাই হয়তো সত্যি নয়। তার। সত্যি কি অপব্ব বৈকাল!..আজ অনেকদিন পরে দেশে ফিরোচি। এই দশবারো দিন বান্টির জন্যে আর সবিধা করতে পারি নি। আজ একেবারে মেঘনিষ্পমঞ্চ, অদভূত বৈকালটি। কাল খিনির বাড়ি নিমন্ত্রণে গিয়েছিলাম, জ্যোৎস্না-রাত্রে পদ্মফোটা লওদার বিলের ধার দিয়ে বাড়ি ফিরি---ফিরতে দেরি হয়ে গেল। আজ তাই দাপরে খাব ঘামিয়েচি। উঠে দেখি বেলা গিয়েচে। সত্যি, এ অপব্ব দেশ.এ ধরনের অনভূতি, গহন-গভীর, উদাস, বিষাদ-মাখা, আমি কোথাও কখনো দেখোঁচ NGr SF ri -a os\OT Land of Lotus-Eaters. AS SINT, aG °sses: s, qS ডাসা খোঁজরের সগন্ধ, এত অতীত সমিতি।--বেদনা-মধর ও করণ, আর কোথায় পেয়েচি কবে ?... শরীর অবশ হয়ে যায়, মন অবশ হয়ে যায় অনভূতির গভীরতায়, প্রাচায্যে। এইমাত্র আমাদের ভিটাটাতে বেড়াতে গিয়েছিলাম—এক টকরে রেশমী সবজি চড়ির টুকরো চোখে পড়ল—কার ? হয়তো মনির। মনে হল মায়ের সন্মতি ভিটার সঙ্গে যেন মাখা। মা এই বৈকালে ঘাট থেকে গা ধয়ে ফস কাপড় পরে এসে আমাদের খাবার দিচ্চেন---এই ছবিই বার বার মনে আসে। আজি সব জওগল, নিবিড় বনভূমি হয়ে পড়ে আছে! মায়ের সেই সজনে গাছটা আছে, সেই কড়াটা আশ্চৰ্য্যা, পাচিলের সেই কুলঙ্গি দটো চমৎকার আছে, এখনও নতুন। ভেবেছিলাম এখনি কুঠির মাঠে যাবো। গিয়ে কি করবো? অনভূতি কি এখানেই কিচ্ছ কম যে, আবার সেখানে যাবো ? একদিনে কত সঞ্চয় করি, মনে স্থান বকুলগাছ পাখী ডাকচে—বৌ-কথা-ক', বৌ-কথা-ক'-অমল্য জামগাছে উঠে জাম পােড়ছিল—বড়ি পিসিমা বললে, সে চারটি জাম দিয়ে গেল, তাই এখন খাবো। আজ আবার গোপালনগরের দলের যাত্রা হবে, এখন স্নান করে এসে যাত্রা শনতে যাবো। বেলা খাব পড়ে গিয়েছে-ছায়া ধসের হয়ে এসেচে। এমন বিকাল কোথাও দেখি নি। আজ আবার ত্রয়োদশী তিথি-মেঘশ্যান্য সনীল আকাশে খাব জ্যোৎসনা উঠবে। আদাঁড়ি বিল বিলে থেকে জল নিয়ে বাড়ি ফিরচে হরিকাকাদের বাড়ির ওদিকের ○。