পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইটালিতে আমায় পাঠানো সম্পবন্ধে বললেন। তিনজন ভদ্রলোক এসে দেখি বাসায় বসে আছেন—তাঁরা কালকের একটা পার্টিতে নিমন্ত্রণ করতে এসেচেন। সকালে উঠে স্কুলে গেলাম ও শনিবার সকালে ছটির পরেই বাসায় এলাম। অনেকক্ষণ ঘািমবার চেষ্টা করা গেল। আন্দাজ চারটার সময় উঠে। হ্যারিসন রোড দিয়ে যাচ্ছি।-শীতল পেছন থেকে ডাকলে ও একখানা পত্র দিলে। একটা সভা আছে, ওদের বাড়ি-আমি সভাপতি। প্রথমে গেলাম হোটে “শনিবারের চিঠি’র আপিসে-- সেখানে Copy দিয়ে সোজা হাঁটতে হাঁটতে (খকীকে যে পথ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে গেছলাম। সেই পথটা ধরে) বিডন সেকায়ার। সেখানে একটা বেশি8র উপর বসে কত কথা ভাবলাম! মায়ের পোঁতা সেই সজনে গাছটার কথা এত যে মনে হয় কেন ? মনে হল, যে জীবনটায়। আর কখনো ফিরবো না--যা শেষ হয়ে গিয়েচে, ওই সজনে গাছটা এখনও কার ফিরবার আসায় সেই দিনগলির মত পাতা ছাড়চে, ফলে ফোটাচ্চেডাঁটা ফলাচ্চে-কে এসে ভোগ করবে ? সন্ধ্যার ধসের আকাশ-দ্য-চারটে তারা“জনতার মাঝে জনগণ পতি’ গানটাও আবার মনে এল-আকাশের তারাদের দিকে চাইলেই ওই অপব্ব ভাবটা হয়। তারপর উঠে ওদের বাড়ি গেলাম। মন্মথদের বাড়ি সভা হল। আমায় করলে সেক্রেটারী। সভা ভঙ্গের পর বিভূতি গলা জড়িয়ে ধরে বললে, এখানে রাত্রে খেয়ে যাবেন । তারপরে লাল ঘরে অনেকক্ষণ আড়া হল। পড়বার ঘরে তারপরে বিভূতি কাছে বসে খাওয়ালে। পরানো দিনের গল্প হল, সব চেয়ে কথা উঠল—“পত্তলিকা'; “পত্তলিকা' সে কথা হোল। তারপর রিক্সা করে মাঘী পণিমার জ্যোৎস্না-রাত্রে পরেনেল দিনের মত বাসায় ফিরলাম—সেই প্ৰতাপ ঘোষের বাড়ির সামনে দিয়ে, থানাটাির পাশ দিয়ে। একটা কথা লিখতে ভুলে গিয়েচি, আজ বিকালে প্রবাসী অফিসে Sir P. C. Roy-এর সঙ্গেও দেখা করেছিলাম। রবিবারে প্রসাদ এল। বেশ মাথায় বড় হয়েচে—সেই ছোট প্রসাদ আর নেই । তাকে দেখে এমন স্নেহ একটা হ'ল! আমার নাম উঠলেই এখনও সকলে কাঁদেচাঁপাপকুরের বড় মাসিমা কাঁদেন, এই সব কথাও বলেন। একটা চাকরির কথা বললে । তারপর আমার নাম এখন প্রায়ই সকলে করেন, সে কথাও বললে। তারপর স চলে গেল । আমি খেয়ে ঘামিয়ে পড়েচি, নীরদবাব এসে ডাকচোন। দজনে দমদমা গেলাম —সশীলবাব শান্তিকে পড়াচ্ছিলেন--দজনেই বাইরে এলেন। গল্পগজব হল— মাঠে বসে চা খাওয়া গেল। আমরা পাঁচটার সময়ে বেরিয়ে শরদিন্দবাব ও করণাবাবরে পার্টিতে এলাম। নরেন দেব, অচিন্ত্য, প্ৰবোধ সান্ন্যাল, রমেশ বস—সবাই এল। ঋবে খাওয়া-দাওয়া হল। প্রচার খাওয়া! নরেন দেব সন্দেশ খেতে খেতে মািখ লাল করে ফেলে অবশেষে যখন আরও খেতে অনােরন্ধ হলেন—মরীয়া হয়ে ললেন, সন্দেশটা ভালো নয়। আমরা বেরিয়ে শেয়ালদা সেন্টশনে এসে সশীলবাবকে তুলে নিয়ে নীরদবাবার গাড়ীতে নিউ মাকেটে গেলাম। কথা রইল বহিস্পতিবারে অপরাজিত’ পড়া হবে দমদমার বাগান-বাড়িতে। Wide World কিনে রাতে বাসায় ফিরলাম। কিন্তু আজই মনটা কেমন উড়-উড়, মায়ের সেই সজনে গাছটা-ভাঙা হাঁড়ি SV)