পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুড়ির কথা আজ সারাটা দিন মনে হয়েছে-বিশেষ করে এই জ্যোৎস্না রাত্রে। এবার সরস্বতী পজা একটা দেরিতে। কিন্তু ছটি পাওয়া গেল বেশী। সপ্তাহব্যাপী ছটি। ‘অপরাজিত’ প্রায় শেষ হয়ে আসচে-ভাবলাম একবার কেওটা যাবো। এসময়ে। নীরদবাবও রাজী। গত মঙ্গলবার আমি ও নীরদবাব মোটরে গেলাম দমদমা। সশীলবাব। যেতে পারবেন না, অতএব আমরা সেখানে খাওয়াদাওয়া সেরে দক্ষিণেশ্ববর যাবো বলে বেরিয়ে পড়ি। সশীলবাবার সত্ৰীও অপরাজিত শানবেন বলে দক্ষিণেশবির যাবার জন্য প্রস্তুত হলেন। সবাই বেরিয়ে পড়া গেল। কিন্তু দক্ষিণেশবির যাওয়া হল না। যশোর রোডের ওপরে একটা নিভৃত বাঁশবনের ছায়ায় বিছানা পেতে বসে আমরা "অপরাজিত’ পড়লাম--তারপর ফিরে এসে চা খেয়ে আখড়া দেওয়া গেল। রাত্রে রমেশবাবর ওখানে নেমন্তন ছিল—সেখানে প্ৰবোধ সান্যালের अ७6 gथा । বধবার দিনটি কাজ করলাম। বহিস্পতিবার সকালে বনগ্রামের ট্রেনে চাপিলাম —বজ্ঞকুদের বাসায় পৌছে দেখি তার নেই। হেডপন্ডিতকে নিয়ে গিয়ে স্কুলে অঞ্জলি দিলাম। দেবেনের বাসায় গেলাম, তারপর ফিরে এসে তরর সঙ্গে গলপগজব করে চালকী রওনা। কি অদ্ভুত আমের বউলের সৌরভ, কি শিমলফলের শোভা ! বাতাবী লেবফলের গন্ধ। কাল পয়লা ফালগন, এমন বসন্তশোভা আমাদের দেশে অনেককাল দেখি নি। চালকী পৌছে খাবার খেয়ে খাকী, ভোঁদা সবসদ্ধি উত্তরমাঠে বেড়াতে গোলাম-রস খাওয়া গেল—অনেকটা বেড়ালাম। তারপর ওদের বাড়ি পৌছে দিয়ে আমি আবার গেলাম। উত্তর মাঠে-তখন চারিধার নিজজন। পরদিন সকালে উঠে বারাকপরে গেলাম। সারাপথে কেমন দক্ষিণা হাওয়া-কি অপব্ব আমের বউলের গন্ধা! খাকীও সঙ্গে গেল। সকাল সকাল ফিরে সনান করলাম। তারপর বৈকালে বেরতে যাবো, বটি এল-একটা বসলাম। আবার যাবো --রামপদ এল। তাকে একটা জল খাইয়ে দজনে একসঙ্গে বার হওয়া গেল। কি অপব্ব শান্তির মধ্যে দিয়ে এসে পৌঁছলাম। আমি পটপটিতলায় ঘাটের এপারে এসে দাঁড়ালাম-ওপারের রাঙা-রোদভরা মাঠের দশ্যটা কি যে অপরাপ! তারপর মাঠের পথ বেয়ে আমাদের বাড়ির পিছনের পথে আসচি, বেলা পড়ে এসেচে-কি বাঁশের শকিনো খোসা ও ঝরা বাঁশপাতার সম্রাণ!.কতকাল আগের শৈশবের কথা মনে করিয়ে দেয় যে। রামপন্দর কাছে বসে একটি তামাক খেয়ে ও গলপগজব করে শ্যামাচরণদাদার বাড়ি এলাম। সেখানে অপেক্ষা করলাম। জ্যোৎসনা উঠলে চালকী চলে এলাম। ছেলেপিলেরা এল গলপ শািনবে বলে। বঙ্কু অনেকক্ষণ ছিল। আজ সকালে উঠে চলে এলাম। কাল বিকালে সশীলবাবদের বাড়ি গেলাম। কি সন্দের বসন্ত এবার এখানে! বভিট নেই। দেশে গিয়েছিলাম-সিকবন্দ্র আমের বউলের গন্ধ। আজ সকালে সজনীর বাড়ি গেলাম-সন্নান সেরে। বেজায় কুয়াসা ! সজনীর সত্ৰী চা ও লাচি খাওয়ালেন। বড় ভালো মেয়েটি। “অপরাজিত’র শেষ লেখাটা আজ প্রেসে দিয়ে এসেচি। কিছ করবার নেই। হাত ও মন একেবারে খালি। স্কুল থেকে ফিরে নিউ মাকেটে গিয়ে "Wide World? খাঁজে পেলাম না। হাঁটতে হাঁটতে কলেজ সন্ত্রীটে এসে কাপড় কিনে এই ফিরচি। S8