পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষয়ে বাংলা অতি দীন। জলকাদা, ডোবা, জলা, ugly জঙ্গল, এ বড় বেশী। লোকও ভূমিশ্ৰী বন্ধিত করতে জানে না, নস্ট করতে পারে। নানা কারণে বর্ষাকালে বাংলাদেশ আদৌ ভাল লাগে না। আবার খাব ঘন বর্ষায় খব ভাল লাগে—যেমন শ্রাবণভাদ্র মাসের অবিশ্রান্ত বর্ষণের দিনগলিতে, যখন জলে থৈ-থৈ করে চারিধার। শেষ শরতের এসব বর্ষার সৌন্দৰ্য্য নেই, কিন্তু অসবিধে ও শ্ৰীহীনতা যথেন্টি। গাছপালায় মনকে বড় চাপা দিয়ে রাখে। এবার কলকাতায় বড় ভাল লাগচে। কাল সাহেবের সঙ্গে ঘরে বেড়িয়েচি সারাদিন। সকালে বিশবনাথের মোটরে গোপালনগর গিয়েছিলাম--তারপর লাঙলচষার প্রতিযোগিতা হল, ছেলেদের দৌড় হল-তারপর বিকেলে বেলেডাঙ্গা গেলাম। সেখানে একটা ডাব খাওয়া গেলা-স্কুলে যািগল শিক্ষক এল। দেশ, খয়রামারির মাঠ এত ভাল লাগচে৷ এবার! কাল হারাণ চাকলাদার মহাশয়ের ছেলের কৃষিক্ষেত্রে দেখতে গিয়েছিলাম। — মাঠের মধ্যে ফলের চাষ করেচে। --বেশ দেখাচ্চে। একটা ষাঁড়া গাছের কুঞ্জবন বড় সন্দর। এবার জ্যোৎসনা খািব চমৎকার, শীতও বেশ। রোজ খয়রামারির মাঠে বেড়াই। আজ একা যাবো। একলা না গেলে কিছ হয় না। রাজনগরের বটতলায় রোজ বেড়াতে যাই। সামনে অপরােপ রঙে রঙীন সােয্য অস্ত যায় দিগন্তের ওপারে, নিঃশব্দ, নিস্তবধ চারিদিক-মাটির সম্রাণ সমরণ করিয়ে দেয়া ইসমাইল।পরের জনহীন চড়ায় এমন সব শীতের সন্ধ্যা, কত সদেীঘ অন্ধকার রাত্রি, কত কৃষ্ণা নিশীথিনীর শেষ যামের ভাঙা চাঁদের জনমানবহীন বনের পেছনে অসন্ত যাওয়া, কত নীল পাহাড় ঘেরা দিকচক্ৰবাল, বিষম শীতের রাত্রে গনোরী তেওয়ারীর মাখে অদভুত গলপ শোনা অগ্নিকুন্ডের চারিধারে বসে বসে। সে সব দিন আজকাল কতদারের হয়ে গেছে। আজ নববর্ষের প্রথম দিনটাতে সকালে নীরদবাবার সঙ্গে বহকাল পরে বেলড় গিয়েছিলাম। পেছনের ছাদটাতে বসে আবার পরনো দিনের মত কত গলপ করলাম। পেছনের ছাদটী, বেলাড়ের বাড়ির চারিপাশের বাগান এত ভাল লাগল। ভেবেছিলাম এখানে আর আসা হবে না। সেই বেলড়ে আবার যখন আসা হ’ল,-বিশেষ করে সেই শীতকালেই, যে শীতকালের রাত্রির সঙ্গে বেলাড়ে যাপিত কত রাত্রির মধ্যর সমতির যোগ রয়েচে—তখন জীবনের অসীম সম্পভাব্যতার উপলব্ধি করে মগধ না হয়ে পারলাম না। সবাই মিলে আমরা চড়ইভাতি করে খেলাম নীচের রান্নাঘরটাতে। পোপের ডাল হাতে রািন্দরে পিঠ দিয়ে বসলাম মালীর ঘরের সামনে, নীচের ছাদটীয় ফলসা গাছের ডালে সেই অপব্ব অবনমন দেখলাম, যা ওই ফলসা গাছটারই নিজস্ব, অন্য গাছের এ সৌন্দয্যভঙিগ দেখি নি কখনো—বাগানের পচিলের ওদিকে পাটের কলে নিবারণ মিস্ত্রীর সেই গোলপাতার ঘরখানা, শীতের দিনে গাঁদাফল-ফোটা নিকানো দােপাশে তকতাকে উঠোন-সব যেন পরাতন, পরিচিত বন্ধর মতো আমাদের প্রাণে তাদের স্নেহস্পশ পাঠিয়ে দিলে, বড় ভাল লাগল। আজ বেলড়। সন্ধ্যার আগেই মোটরে চলে এলাম। কলকাতায়। কাল গিয়েছে। পণিমা, আজ প্রতিপদের চাঁদ রাত সাড়ে সাতটার পরে উঠল। ধোঁয়া নেই, এই যা সৌভাগ্য। অনেকদিন পরে আজ আমড়াতলার গলির মখে গিয়ে পড়েছিলাম-এতদিন VV