পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘মনোরমার ভাই কালো কুঠীর জঙ্গলে হাঁটটো বেজায় কেটে ফেললে, তার ফলে সকলেরই বেড়ান বন্ধ হল। রাত্রে খকুকে অনেক গল্প শোনালাম অনেক রাত পৰ্য্যন্ত । আজ সকালে ভ্ৰাতৃদিবতীয়া। রায়বাড়ির পাঁচি কাঁদচে, ওর দাদা আশ মাসখানেক হল মারা গিয়েচে, সেই জন্যে। পাড়াগাঁয়ের মেয়ের ধরনে ও ভাই রে, বাড়ি এসো, বলে চে’চিয়ে কাঁদচে। কিন্তু আমার মনে সত্যিই দঃখ হল ওর জন্যে। পাঁচিকে এ গাঁয়ের সব লোকেই ‘দার, ছাই’ করে, সবাই ঘেন্না করে—আজি পাঁচ ওদের সবারই বড় হয়ে গিয়েচে। তবও তার প্রতি সহানভূতি নেই কারার-কান্না শনে পিসিমা বলচেন, মাখ বেকিয়ে—আহা! মনে পড়েচে বঝি ভাইকে।” নৌকো করে বনগাঁয়ে যাচ্চি সকালবেলা। চালকীর ঘাটে এসেচি—এবার। এদিকের পাড় ভেঙেচে। কেমন নীল রং-এর একটি পাখী বাবলা গাছে শিস দিচ্চে। নৌকোর দলনিতে লেখার বড় ব্যাঘাত হচ্চে। নীল কলমীর ফল, হলদে বড় বড় বনধধলের ফল ফটেচে। আর এক রকম কি লতায় কুচো কুচো হলদে ফল ফটে চালতেপোতার বাঁকে ঝোপের মাঝে আলো করে রেখেচেৰ-সে যে কি অপব্ব সন্দের তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। এই ফলের নাম জানি নে, যেন হলদে নক্ষত্র ফটে আছে—ছোট ছোট ক্ষদে ক্ষদে, যেন নববধাের নাকছবি। কাত্তিকের শেষে এই ফলটা ফোটে জেনে রাখলাম, আবার আসচে বছর দেখতে আসবো। এতদিন এ ফলে আমার চোখে পড়ে নি। হেমন্তে এত বনের-ফলও ফোটে। এদেশে ! ঝোপের মাথা আলো করে সবজি পাতালতার মধ্যে তিৎপল্লার ফল, ক্ষদে ক্ষদে ঐ অজানা ফল, মাঝে মাঝে বড় বড় বনকলমীর ফল—কি রােপ ফটেচে প্ৰভাতের। কাশফল তো আছেই। মাঝে মাঝে, নদীতীরের কি অপব্ব শোভা এখন—তা ছাড়া পণ্ডিপত সপ্তপণ্য ও মাঝে মাঝে যথেস্ট । ঐ অজানা ফলাটা মাঝিকে দিয়ে ঝোপ থেকে পাড়িয়ে আনলাম—দশটি করে ছোট ছোট পাপড়ি—ছটা করে পরাগ কোষ বা গভকেশর প্রত্যেকটাতে। জলে কচুরীপানার ফল ফটেছে, অনেকটা কাঞ্চন ফলের রং, কিন্তু দেখতে বড় চমৎকার।-- একটা লম্ববা সরস সবজি ডাঁটায় থোকা থোকা অনেকগলো ফল-ঐ সন্দর ফলের জন্যেই কচারীপানা সন্টির মধ্যে অক্ষয় হয়ে থাকবে- ভগবানের কাছে সন্দরের সাৰ্থকতা অমর।--তারা utility-টা গৌণ। মাঝি গলপ করছিল, এবার অনেকে ইছামতীতে মক্তা পেয়েছে ঝিনােক তুলে। এ সময়ে বন্যেবড়ো গাছেও শাল-মঞ্জরীর মত দেখতে সবজি রং-এর ফল ফটেচে-আর এক প্রকার জলজ ঘাসের নীল ফল ফটেচে –এর রং ঠিক তিসির ফলের মত নীল। এক একটা ছোট গাছের মাথায় ছোট ঝোপে। ঐ ক্ষদে ক্ষদে অজানা ফল ফটে আলো করচে। কাল রাত্রে কি একটা কথা মনে এল—তার শব্দ-পরম্পরায় মনে একটা অপব্ব অননভূত ভাবের উদয় হোল। শব্দেরও ক্ষমতা আছে। প্রমথবাব বলেন, নেই। এই নিয়ে প্রমথ চৌধরিীর সঙ্গে একদিন তাক করেছিলাম। আজ সকালে উঠে দেখি আকাশ একেবারে নিৰ্ম্মেঘ, নিম্পমাল। দঃখ হোল এই ভেবে যে আমিও বারাকপর থেকে এলাম আকাশও গেল পরিস্কার হয়ে । আজ এই জন্যে মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল-বারাকপরে এমন নীল আকাশটা দেখতে পেলাম না! খকুর গাওয়া সেদিনকার গানটা বার বার মনে আসতে লাগল মোর ঘািম-ঘোরে এলে মনোহর NGANINag, aGTaag, NGTaang Գ Ն