পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিকে চেয়ে অন্ধকার আকাশের পটভূমিতে কত বিচিত্র ধরণের গাছপালার সীমারেখা দেখলাম-এদের এখানে যা রােপ, তা এক যদি ভারতবর্ষের মধ্যে মালাবার উপকলে এবং আসাম ও হিমালয়ের নিম্পন্ন অঞ্চলের অধিত্যকায় থাকে-আর কোথাও সম্পভব বলে Nक्ष २३ वा ॥ ছোট এড়াশ্চির ফল সকলের ওপরে টেক্কা দিয়েচে। কাল যখন মাঠের মধ্যে দিয়ে বেলেডাঙ্গার গোয়ালপাড়ায় গেলাম-উচনিচ মাটি ও ডাঙা পাশে রেখে, ফল ফোটা বড় বড় বনঝোপের নীচে দিয়ে-কত কি পাখী বেড়াচে ঝোপের নীচে শকানো পাতার রাশির ওপরে। কাঁটাওয়ালা সেই সবজি লতাটায় থোকা থোকা ফল ফটেচে-খৰকু বল্লেী, বনতারা।-নামটি ভারি সন্দর, কিন্তু ঠিক বঝতে পারা গোল না ও কোন লতার কথা বলচে-আর চারিদিকে অজস্র সম্পভারে ঢেলে দেওয়া ছোট এড়াশি8র ফল। বনে, ঝোপে, বাবলাগাছের মাথায়, কুলগাছের ডালে, বেড়ার গায়ে, ডাঙাতে যে দিকেই চাই সেই দিকে ওই সাদা ফলের রাশি। আমি বাংলায়ও বনের এমন রােপ আর কখনো দেখিনি। যদি জ্যোৎসনা রাত্রে এই রােপ দেখতে পেতাম ! এ ক'দিন ছিলাম। কলকাতায়। ওরিয়েণ্টাল সোসাইটির প্রদর্শনীতে এবার নন্দলাল বসার দরখানি বড় সন্দর ছবি দেখে অত্যন্ত আনন্দ পেয়েছি। খকু ও জাহ্নবীর মেয়ে খাকী সঙ্গে ছিল—তারাও দেখেছে, তবে নন্দবাবার ছবির তারা কি বাঝবে ? ওদের দেখালােম বায়োস্কোপ, জা, সাকাস-আর এখানে ওখানে নিয়ে বেড়ালম। একদিন সজনী দাসের বাড়ি, একদিন নীরদের বাড়ি, একদিন নীরদ দাসগঞ্জের ওখানে। দঃখ হোল যে এখানে এসময়ে সম্প্ৰভা নেই। কাল নৌকায় বনগাঁ থেকে এলাম। কি অদভুত রােপ দেখলাম সন্ধ্যায় নদীর। শীতও খাব, অন্ধকার হয়ে গেল। কলকাতার হৈ চৈ-এর পরে এই শান্ত সন্ধ্যা, ফল ফোটা বন, মাঠ, কালো নিথর নদীজল মনের সমস্ত সংকীর্ণ অবসাদ দাির করে দিয়েছে। চালতেপোতার বাঁকে বনের মাথায় প্রথম একটি তারা উঠেচে-কত দীর দেশের সংবাদ আলোর পাখায় বহন করে আনচে আমাদের এই ক্ষদ্র, গ্রাম্য নদীর চরে।--আমার মনের নিভৃত কোণে। ঘাটে যখন নােমলাম, তখন খাব অন্ধকার হয়ে গিয়েচে। খকু ও আমি জিনিসপত্র নিয়ে বাঁশবনের অন্ধকারে ভয়ে ভয়ে বাড়ি এলাম, খকু তো একবার ভয়ে চীৎকার করে উঠল কি দেখে। ভয়ের কারণ এই যে, এসময়ে আমাদের দেশে বাঘের ভয় হয় । দাপরে কুঠীর মাঠে বেড়াতে গিয়ে কুঠীর এদিকে বনের মধ্যে সেই যে ঢিবিটা আছে, সেখানে খানিকটা বসলাম--তার পরে একটা নাবাল জমি, আর ওপারে। সেই বটগাছটা। আকাশ কি অদভুত নীল! ছোট এড়াঞির ফলে এখনও ঠিক সেই রকমই আছে —কদিন আগে যা দেখে গিয়েচি, সৌন্দৰ্য্য এখনও মলান হয় নি। প্রায় পনেরো দিন ধরে এর সৌন্দয্য সমান ভাবে রয়েচে, এতটকু ক্ষন্নি হয় নি এ বড় আশচয্যের কথা। এমন কোন বনের ফলের কথা আমার জানা নেই, যা ফটেন্ত অবপথায় এতদিন থাকে। বালজ্যাকের গলপটা (Atheist's Mass) তখনই পড়ে সবে বেড়াতে গিয়েচি, আকাশ যেন আরও নীল দেখাচ্ছিল, বনফল-ফোটা ঝোপ আরও অপরােপ দেখাচ্ছিল। নাইতে গিয়ে বাঁশতলার ঘাট পয্যন্ত সাঁতার দিয়ে এলাম। বিকেলে ক্যাম্পপ-টলটা নিয়ে গিয়ে কুঠীর সেই ঢিবিটাতেই অনেকক্ষণ বসে রইলাম--রোদ রাঙা হয়ে গেল, ওপারের শিমালগাছটার মাথার ওপর উঠে গেল, ԵՏ प्रिन्व्•/७ छ्भाश्कूद्ध-७